• এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব
  • " />

     

    আশা জাগিয়েও কাতারের কাছে হারতে হলো বাংলাদেশ অ-১৬ দলকে

    আশা জাগিয়েও কাতারের কাছে হারতে হলো বাংলাদেশ অ-১৬ দলকে    

    এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব
    গ্রুপ 'এফ'
    ফলাফল কাতার ২-০ বাংলাদেশ


    প্রথমার্ধ শেষে দোহায় কাতারের বিপক্ষে ভালো কিছু স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশা জাগিয়েও আর সেটা পূরণ হয়নি বাংলাদেশের কিশোরদের। ম্যাচের বেশিরভাগ সময় শক্তিশালী কাতারকে আটকে দিয়েও এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কাতারের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ।

    হারে সবচেয়ে বেশি হতাশ হওয়ার কথা গোলরক্ষক মেহেদি হাসানের। প্রথমার্ধে মেহেদির দুর্দান্ত কিছু সেভে বাংলাদেশ টিকে ছিল ম্যাচে। দ্বিতীয়ার্ধেও মেহেদি ছিলেন দুর্দান্ত। মেহেদির অসাধারণ গোলকিপিং পুঁজি করে ম্যাচে টিকেছিল বাংলাদেশও। কিন্তু এ ধরনের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সুযোগ আসে অল্প, সেগুলো কাজে লাগাতে না পারলে যা হয় সেটাই জুটেছে বাংলাদেশের কপালে।

    দোহার অত্যাধুনিক আস্পায়ার একাডেমির মাঠে বাংলাদেশী সমর্থকদের অভাব ছিল না। প্রায় শ' পাঁচেক সমর্থক পুরোটা সময় সমর্থন যুগিয়ে গেছেন বাংলাদেশকে। সে তুলনায় কাতারকেই বরং মনে হয়েছে সফরকারী দল। শেষ পর্যন্ত তারাও হতাশ হয়েই ফিরেছেন।

    প্রথমার্ধে মেহেদি সেভ শুরু করেছিলেন আতিক আল শাইবিকে ঠেকিয়ে দিয়ে। এরপর কাতার একটি কর্নার থেকে হেডে প্রায় গোলও পেয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু গোললাইন থেকে বল  ক্লিয়ার করেন সাইফুল ইসলাম সাইদ। ফিরতি বলেও কাতারকে এরপর আটকে দেন মেহেদি। এসবের পর ম্যাচের আধ ঘন্টা পেরুতেই সুবর্ন এক সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মিডফিল্ডার মইনুল ইসলাম বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন কাতারের ডিবক্সের ভেতর। সামনে ছিলেন শুধু গোলরক্ষক। কাতারের গোলরক্ষকেই পরে আটকে গেছেন মইনুল। নইলে ঘরের মাঠে কাতারকে আরও চাপে ফেলতে পারত বাংলাদেশ।

    তবে এরপরও প্রথমার্ধ গোলশূন্য ভাবে শেষ করায় বড় প্রেরণা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল লাল সবুজরা। কিন্তু বাংলাদেশের সেই প্রতিরোধ ভেঙে যায় ৫৫ মিনিটে। এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের রক্ষণে গিয়ে হতাশ হয়ে ফেরা কাতারও হয়ত ভাবেই গোলটা এমন আচমকা পেয়ে যাবে তারা। স্ট্রাইকার রাশিদ আব্দুল আজিজ ডিবক্সের ভেতর ডান দিক থেকে কাট করে ঢুকেছিলেন কিছুটা। তার সঙ্গে দুইজন ডিফেন্ডারও ছিলেন বাংলাদেশের। তাদের ফাঁকি দিয়েই দুর্বল এক শট করেছিলেন আব্দুল আজিজ।  মেহেদি জায়গা থেকে নড়ার সুযোগও পাননি। আসলে সামনে থাকা ডিফেন্ডারদের ভরসাতেই ছিলেন তিনি। বল চোখে দেখেননি, তাই ঝাঁপ দেওয়ার সুযোগও হয়নি। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে এমন গোল হজম করা তো হতাশারই।

     

     

    এরপরও ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে হয়নি বাংলাদেশকে। ৭০ মিনিটে অধিনায়ক জনি সিকদারের ফ্রি কিক ডিবক্সের মাথা থেকে ফ্লিক করে উঠিয়ে দিয়েছিলেন রবিউল আলম। সেই বল একেবারে গোলের সামনে গিয়ে পড়েছিল কিছুক্ষণ আগে বদলি নামা কাজিরুল ইসলাম হৃদয়ের জন্য। তিনি খোঁচাটা দিতে পারলেই হয়ত ম্যাচেও ফেরা হত বাংলাদেশের।

     

    শেষদিকে কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে কাতার। মেহেদি আরও একবার দারুণ সেভে ফেরান বদলি  আল দোসারিকে। কিন্তু ৯০ মিনিটে আর দোসারিকে আটকানো হয়নি মেহেদির। বাংলাদেশ আক্রমণে বেশি মনোযগী ছিল শেষদিকে, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলটি করেন দোসারি। ডানদিক আসা ক্রসে বক্সের ভেতর থেকে পা ছোঁয়ান দোসারি। আরও দুইবার বল লেগেছিল বাংলাদেশের বারপোস্টে। কিন্তু এসবই হয়েছে বাংলাদেশ গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠার পর।   

    এএফসি বাছাইয়ে এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে পরাজয়েও তাই অনুপ্রেরণা আছে বাংলাদেশের। গ্রুপ 'এফ' এর অন্য ম্যাচে ইয়েমেন ভুটানকে উড়িয়ে দিয়েছে ১০-১ ব্যবধানে। ২০ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে ভুটান ও ২২ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ইয়েমেন। গ্রুপের রানার্স আপ হতে পারলেও ২০২০ সালে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এএফসির বয়সভিত্তিক শীর্ষ পর্যায়ের এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের।