• লা লিগা
  • " />

     

    'নতুন' গ্রানাদার কাছে হেরে ২৫ বছরে সবচেয়ে বাজে শুরু বার্সার

    'নতুন' গ্রানাদার কাছে হেরে ২৫ বছরে সবচেয়ে বাজে শুরু বার্সার    

    লা লিগা

    ফলাফল গ্রানাদা ২-০ বার্সেলোনা


    অ্যাথলেটিক বিলবাও, ওসাসুনা, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ২০১৯-২০ মৌসুমে খেলা প্রথম তিন 'অ্যাওয়ে' ম্যাচের একটিও জিততে পারেনি বার্সেলোনা (২ ড্র, ১ হার)। এবার সে তালিকায় যুক্ত হল গ্রানাদার নাম, চার বছর পর দ্বিতীয় বিভাগ থেকে উঠে আসা গ্রানাদার মাঠ লস কারমেনেসে ২-০ গোলে হেরে গেছে এর্নেস্তো ভালভার্দের দল। ৫ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সাত-এ থাকল বার্সা। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমের পর লা লিগায় এটাই সবচেয়ে বাজে শুরু তাদের।

    অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ সেল্টা ভিগোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করায়, লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে গ্রানাদা স্বপ্নের মতো উঠে গেছে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে। ৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট তাদের। আর ৫ ম্যাচের তিনটিতেই হেরে নতুন করে চাপে পড়ে গেলেন বার্সা কোচ ভালভার্দে

    লস কারমেনেসের ম্যাচ দিয়েই এই মৌসুমে লা লিগায় প্রথমবারের মত মাঠে নেমেছিলেন লিওনেল মেসি। মাত্রই ইনজুরি কাটিয়ে ফেরায় ডর্টমুন্ড ম্যাচের মত গ্রানাদার বিপক্ষেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হয়ে নেমেছেন বার্সার অধিনায়ক। মেসি নামার অনেক আগেই অবশ্য লিড নিয়েছিল গ্রানাদা।

    এই মৌসুমের পুরনো সমস্যা সেই রক্ষণের ভুলেই পিছিয়ে পড়েছে ভালভার্দের দল। জর্দি আলবার ইনজুরিতে বার্সার জার্সিতে অভিষেক হওয়া লেফটব্যাক জুনিয়র ফিরপো  ভুল করে বসেন দুই মিনিটেই। ডানপ্রান্তে বল পেয়ে যান রবার্তো সলদাদো, পাস বাড়ান পুয়েরতাসকে। তার ক্রসেই হেড করে দলকে এগিয়ে নেন রামোন আজিজ। শুরুতেই আরও একবার পিছিয়ে পড়ে বার্সা।

     

    বার্সার বিপক্ষে ২ মিনিটেই লিড নেওয়ার পর গ্রানাদার ফুটবলার এবং সমর্থকদের বাধভাঙ্গা উল্লাস

     

    স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এমন শুরু হয়তো প্রত্যাশা করেননি কট্টর গ্রানাদা সমর্থকেরাও, এই মাঠে জিতেই ২০১৪-১৫ মৌসুমে লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত করেছিল বার্সা। কিন্তু পুরনো সুখস্মৃতি আর ফেরাতে পারেনি তারা। পুরো প্রথমার্ধেই গ্রানাদার আক্রমণ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে বার্সার। ১৪ মিনিটেই লিড দ্বিগুণ করতে পারত গ্রানাদা, কিন্তু পুয়েরতাসের শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান। গ্রানাদার ফরোয়ার্ডরা যখন একের পর এক সুযোগ তৈরিতে ব্যস্ত, তখন প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া যায়নি গ্রিযমান-সুয়ারেজদের।

     

     

    প্রথমার্ধে লক্ষ্যে একবারও শট নিতে পারেনি ভালভার্দের দল। ম্যাচে ফেরার আশায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মেসি এবং তরুণ আনসুমান ফাতিকে নামিয়ে দেন ভালভার্দে। অবশ্য তাতে লাভ হয়নি খুব একটা, মেসিও পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি গ্রানাদার রক্ষণভাগকে। উলটো আরেকটু হলেই ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত গ্রানাদা। ৫২ মিনিটে পুয়েরতাসের ক্রস ধরতে ব্যর্থ হন টের স্টেগান। তবে বল গোল লাইন অতিক্রম করার আগে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন তিনি। পুরো ম্যাচে মাঝমাঠের দখল নিজেদের করে নিতে পারেনি বার্সা।
     

     

    নবাগত গ্রানাদার কাছে গোল খেয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় পিকে এবং রাকিটিচ

     

    সে আশায়ই ৬২ মিনিটে ইভান রাকিটিচের বদলে আর্তুরো ভিদালকে নামিয়ে দেন ভালভার্দে। কিন্তু নামার দুই মিনিটের মাথায় দলকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দেন ভিদাল। ৬৪ মিনিটে ডিবক্সে আজিজের ক্রস ক্লিয়ার করতে বল হাতে লাগে ভিদালের। প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি না দিলেও 'ভিএআর'-এর শরণাপন্ন হয়ে সিদ্ধান্ত বদলান মূল রেফারি। ১২ গজ থেকে স্টেগানকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি ভাদিও। ব্যবধান দ্বিগুণ করেই ৫-৪-১ ফর্মেশনে খেলতে থাকে গ্রানাদা৷

    রক্ষণাত্মক গ্রানাদার বিপক্ষে অবশ্য এরপরও সুযোগ তৈরি করেছিলেন মেসিরা, কিন্তু গোলরক্ষক সিলভা ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। দ্বিতীয়ার্ধে ফাতি এবং মেসির অন্তত দুটি নিশ্চিত গোল অবিশ্বাস্যভাবে বাঁচিয়েছেন তিনি। গ্রানাদার ক্লিনশিট অর্জনে অবশ্য সিলভার মত কৃতিত্ব দারউইন মাচিসেরও। ৭৬ মিনিটে মেসির শট দুর্দান্তভাবে ব্লক করে নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দেন তিনি।

    সিলভাকে দ্বিতীয়ার্ধে বেশ পরীক্ষায় ফেললেও শেষ পর্যন্ত কাজের কজ আর হয়নি বার্সার। মেসি, সুয়ারেজ, ফাতি, গ্রিযমানরা খেললেও পুরো ম্যাচে সিলভার গোলে মাত্র একবার শট নিতে পেরেছে বার্সা। ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম লা লিগায় টানা তিন ম্যাচে ২ বা তার বেশি গোল হজম করল কাতালানরা। আর অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়হীন থাকার ধারাটা বাড়ল আরেকটু, টানা সাত ম্যাচ, ২০০১ সালে সবশেষ ঘটেছিল এমনটা।