• শেখ কামাল ক্লাব কাপ
  • " />

     

    বসুন্ধরা কিংসকে ডোবালেন সাবেক আবাহনী স্ট্রাইকার

    বসুন্ধরা কিংসকে ডোবালেন সাবেক আবাহনী স্ট্রাইকার    

    সেমিফাইনালে যেতে হলে জিততেই হত বসুন্ধরা কিংসকে। সেই ম্যাচ শুরুতে এগিয়ে গিয়েও সাবেক ঢাকা আবাহনী স্ট্রাইকার লি টাকের হ্যাটট্রিকে ৪-২ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। শেখ কামাল আন্তজার্তিক ক্লাব কাপে 'বি' গ্রুপ থেকে তাই সেমিফাইনালে উঠল গোকুলাম কেরালা ও তেরেঙ্গানু এফসি। তিন ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা পেল মাত্র একটি জয়।

    ২০১৫ সালে আবাহনীর হয়ে খেলার সময় এই এমএ আজিজ স্টেডিয়ামেই মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন লি টাক। সে মৌসুমে আবাহনীর হয়ে লিগ শিরোপাও জিতেছিলেন ইংলিশ স্ট্রাইকার। এরপর মালয়েশিয়ার নেগেরুর হয়ে এক মৌসুম খেলে যোগ দিয়েছিলেন সে দেশেরই আরেক ক্লাব তেরেঙ্গানুতে। তিন বছর পর সেই চট্টগ্রামে ফিরে লি টাকই ডুবিয়েছেন আবাহনীর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বসুন্ধরা কিংসকে।  

    গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসে প্রাণের সঞ্চার করেছিলেন দলের সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় দানিয়েল কলিনদ্রেস। ২৭ মিনিটে একটি ব্যর্থ আক্রমণ থেকে ডানদিকে বল পেয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বনাথ ঘোষ।এরপর তার ক্রস সিক্স ইয়ার্ড বক্সের সামনে থেকে হেড করে গোল দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন কলিনদ্রেসকে। 

    সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের শুরু থেকেই অবশ্য চাপে ছিল তারা তেরেঙ্গানুর আক্রমণ সামলাতে। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো প্রথম দশ মিনিটেই করেছেন দুর্দান্ত সব সেভ। এর ভেতর একবার ডাবল সেভে আটকে দিয়েছিলেন তেরেঙ্গানুকে। দল এগিয়ে যাওয়ার দুই মিনিট পর আরও একবার ত্রাতা হয়ে  তেরেঙ্গানুর ভালো শট আটকে দেন জিকো। 

    জিকোর কোনো প্রচেষ্টাই অবশ্য কাজে আসেনি এরপর আর। প্রথমার্ধে তিন মিনিটের ব্যবধানে দুইবার তেরেঙ্গানুকে পেনাল্টি দিয়ে নিজেদের সর্বনাশ নিজেরাই ডেকে আনে বসুন্ধরা কিংস। বক্সের ভেতর প্রথম ফাউলটা করেছিলেন ইয়াসিন খান, পরেরটা বখতিয়ার। দুই পেনাল্টিতেই ফাউলের শিকার মোহাম্মদ সায়াফিক। দুইবারই স্পটকিক নিয়েছেন লি টাক। দুইবারই মেরেছেন ডানদিকে, আর জিকো ঝাঁপ দিয়েছেন তার উলটো দিকে।

    দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য হন্যে হয়ে ঘোরা বসুন্ধরা কিংস আরও এক গোলে পিছিয়ে যাওয়ার আগে সুবর্ণ সব সুযোগ হাতছাড়া করেছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে হ্যাটট্রিকটা আগে পেয়ে যেতে পারতেন কলিনদ্রেসই। প্রথমে ডান দিক দিয়ে কাট করে ঢোকা জালাল কেদুর সব কষ্ট বৃথা গেছে কলিনদ্রেসের দুর্বল শটে। এরপর ৫৭ মিনিটে মতিন মিয়ার দারুণ একটি ক্রস একেবারে গোলের সামনে থেকেও গোলে পরিণত করতে ব্যর্থ হন কলিনদ্রেস।  কিছুক্ষণ পর আরেকটি সুযোগ থেকে অবশ্য ভালো শট করেছিলেন বসুন্ধরার এই কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড, তবে কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকে অল্পের জন্য তখন আর গোল পাওয়া হয়নি তার। 

    বসুন্ধরা যখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করছিল, তখনই আচমকা এক শটে গোল করে তাদের সব আশা শেষ করে দেন লি টাক। পূরণ করে ফেলেন হ্যাটট্রিকও। রাইট উইং থেকে সরাসরি জোরালো শট করেছিলেন লি টাক, জিকোর মাথার ওপর দিয়ে কাছের পোস্ট হয়ে সেই শট বসুন্ধরার জালে জড়িয়েছে। আর নিষেধাজ্ঞার কারণে ডাগ আউটে না থাকতে পারা অস্কার ব্রুজোনের বুকে শেলের মতো গিয়ে বিঁধেছে সেই গোল। এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি গোল করে বসে তেরেঙ্গানু, তখন ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১। 

    শেষ দশ মিনিটে বদলি কিংসলে এলিটার একটি শট বারপোস্ট লেগে ফিরে না আসলে ব্যবধান কমাতে পারত বসুন্ধরা কিংস। অবশ্য এর দুই মিনিট পরই কেদু এক গোল দিয়ে ব্যবধান কমিয়েছেন। 'বি' গ্রুপ থেকে সমান ৭ পয়েন্ট গোকুলাম কেরালা ও তেরেঙ্গানু। ভারতের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটি বাদ পড়েছে কোনো পয়েন্ট না পেয়েই। এই টুর্নামেন্টে বসুন্ধরার একমাত্র জয়ও তাদের বিপক্ষেই।