• ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইংল্যান্ড সফর ২০২০
  • " />

     

    স্টোকসের অলরাউন্ড শো-তে ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজে ফিরল ইংল্যান্ড

    স্টোকসের অলরাউন্ড শো-তে ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজে ফিরল ইংল্যান্ড    

    ২য় টেস্ট, ওল্ড ট্রাফোর্ড
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৪৬৯/৯ ডিক্লে. (স্টোকস ১৭৬, সিবলি ১২০, বাটলার ৪০, বেস ৩১, চেজ ৫/১৭২, রোচ ২/৫৮) ও ২য় ইনিংস ১২৯/৩ ডিক্লে. 
    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস ২৮৭ (ব্রাথওয়েট ৭৫, ব্রুকস ৬৮, চেজ ৫১, ব্রড ৩/৬৬, ওকস ৩/৪২, কারান ২/৭০) ও ২য় ইনিংস ১৯৮ অল-আউট
    ইংল্যান্ড ১১৩ রানে জয়ী 


    ওভারটা পূরণ করতে পারলেন না, পরের দুটি বল করলেন জো রুট। বেন স্টোকস স্বস্তিতে ছিলেন না অনেক্ষণ থেকেই। তবে মাঠ ছেড়ে গেলেন না, হয়তো জয়ের স্বাদটা মাঠে থেকেই পেতে চান। সেটি পেলেনও তিনি। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, স্টুয়ার্ট ব্রডের নতুন বলে আরেকদফা আঘাত, সঙ্গে ক্রিস ওকস, স্যাম কারানের পর ডম বেসের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এনে দেওয়া ব্রেকথ্রুতে ওল্ড ট্রাফোর্ডের শেষদিনে দারুণ জয়ে সিরিজে ফিরে এসেছে ইংল্যান্ড। সাউদাম্পটনে শেষদিনে দারুণ জয় পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এদিন ছিল ড্রয়ের অপশনটাই, তবে সেটি পাওয়া হয়নি তাদের শামারহ ব্রুকস ও জেরমাইন ব্ল্যাকউডের দুই ফিফটির পরও। দিনের শেষ ঘন্টার শুরুতেই শেষ উইকেট হারিয়ে থেমে গেছে তারা। 

    আগেরদিন ২১৯ রানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ডের এদিন প্রয়োজন ছিল শুরুতে দ্রুতগতির কিছু রান। স্টোকস ছিলেন, আরেকদফা দলের প্রয়োজন মেটালেন তিনি। ১ম ইনিংসে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারের দীর্ঘতম ইনিংস, এবার করলেন ৩৬ বলে ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ৫৬ বলে ৭৮ রানে অপরাজিত থাকলেন, সঙ্গে জো রুট আর ওলি পোপের সহায়তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩১২ রানের লক্ষ্য দিল ইংল্যান্ড। তাদেরকে অল-আউট করার জন্য ছিল ৮৫ ওভার।  
     

    আগেরদিনের মতো এদিনও নতুন বলে টোনটা সেট করেছিলেন ব্রড/আইসিসি


    আগেরদিন দ্বিতীয় নতুন বলে ব্রড ঘুরে দিয়েছিলেন ম্যাচ, এদিনও সে অপশনটা রাখতে চেয়েছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় নতুন বলে ৫ ওভার, সে পর্যন্তও তারা তাকাবে, এমন আগেই বলে রেখেছিলেন ব্রড। অবশ্য প্রথম নতুন বলেই আগেরদিনের পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করলেন তিনি। তার প্রথম ওভারেই কট-বিহাইন্ড জন ক্যাম্পবেল, উইকেটটা অবশ্য ইংল্যান্ড পেয়েছে রিভিউ নিয়ে, এমনকি ব্রড-বাটলার ঠিক বুঝেই উঠতে পারেননি সে বলের ফলটা। লাঞ্চের আগ তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্রডের বলে বোল্ড হয়েছেন শেই হোপ, এর মাঝে ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে এলবিডব্লিউ করেছেন ক্রিস ওকস। প্রথম সেশনেই ৩ উইকেট নেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরেকদফা চাপে ফেলা ততক্ষণ হয়ে গেছে ইংল্যান্ডের। 

    বিরতির পর ব্রডের আঘাত আবারও, তার নিপড-ব্যাক ডেলিভারিতে শট অফার না করে এলবিডব্লিউ চেজ। ব্রুকস আগেই আউট হতে পারতেন, তবে গ্লাভড হলেও তাকে দেওয়া নট-আউটের সিদ্ধান্ত রিভিউ করেনি ইংল্যান্ড। ব্ল্যাকউডের সঙ্গে ব্রুকস এরপর গড়লেন সেঞ্চুরি জুটি, দ্বিতীয় সেশন শেষে ঠিক আগ দিয়ে এবার আঘাত করলেন স্টোকস। ৮৮ বলে ৫৫ করে তার বাম্পারে ক্যাচ তুললেন ব্ল্যাকউড, পেছনে সামনে ডাইভ দিয়ে দারুণভাবে নিলেন সেটি বাটলার। হাল না ছাড়ার পুরষ্কারটা আরেকবার পেলো ইংল্যান্ড। 

    বিরতির আগের মতো  বিরতির ঠিক পরে আরেকদফা উইকেট হারালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এবার ওকসকে ফ্লিক করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এলবিডব্লিউ শেন ডাওরিচ। ব্রুকসের সঙ্গে থাকলেন হোল্ডার, এবার ইংল্যান্ডকে ব্রেকথ্রু এনে দিলেন স্যাম কারান। লেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে ক্রিজে আটকে থেকে থামতে হলো ব্রুকসকে, ইংল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে গেল লেজের দিকে। 

    বলা যায়, শেষ কাঁটা হয়ে ছিলেন জেসন হোল্ডার। এবার হাজির হলেন বেস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের রক্ষণ চিড়ে ঢুকে গেলেন তিনি। আগের ইনিংসে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা আলজারি জোসেফ ক্যাচ দিলেন স্টোকসকে ড্রাইভ করতে গিয়ে। 

    একটু পর ড্রিংকস ডেকে শেষ ঘন্টার সঙ্কেত দিলেন আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ। এরপর প্রথম বলেই রোচ শর্ট লেগে ক্যাচ তুললেন, প্রথম দফা হাত থেকে ছুটে প্রায় নাগালের বাইরে যাওয়া বলটা ধরলেন পোপ। এ টেস্টে একদিন হারিয়ে গেছে বৃষ্টিতে, ইংল্যান্ড জিতলো এক ঘন্টা বাকি থাকতে। 

    দ্বিতীয় নতুন বলের জুয়া পর্যন্ত যেতে হলো না তাদের।