ওকসের ৫, সিরিজ ইংল্যান্ডের, তবে গল্পটা ব্রডেরই
৩য় টেস্ট, ম্যানচেস্টার
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৬৯ অল-আউট (পোপ ৯১, বাটলার ৬৭, ব্রড ৬২, রোচ ৪/৭২, গ্যাব্রিয়েল ২/৭৭, চেজ ২/৩৬) ও ২য় ইনিংস ২২৬/২ ডিক্লেঃ (বার্নস ৯০, সিবলি ৫৬, রুট ৬৮*, হোল্ডার ১/২৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস ১৯৭ (ক্যাম্পবেল হোল্ডার ৪৬, ডাওরিচ ৩৭, ব্রড ৬/৩১, অ্যান্ডারসন ২/২৮) ও ২য় ইনিংস ১২৯ (হোপ ৩১, ওকস ৫/৫০, ব্রড ৪/৩৬)
ইংল্যান্ড ২৬৯ রানে জয়ী
“স্টুয়ার্ট ব্রড। দিনের গল্পটা তাকে ঘিরেই। এখন পর্যন্ত এই টেস্টের গল্পটাও তাই।”
এটা তৃতীয় দিনের ম্যাচ রিপোর্টের শুরুর লাইন।
শেষদিন এসেও সেটা বদলালো না। ৫০০ উইকেট থেকে ১ উইকেট দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল পুরো একদিন, শেষদিন এসেও বৃষ্টি এসে বেরসিকের মতো কয়েকবার দেখা দিয়ে গেল। তাতে অবশ্য ব্রডের উদযাপন আটকালো না। তিনি ঢুকে গেলেন ইতিহাসে। ম্যাচ শেষ করলেন ১০ উইকেট দিয়ে। মাঝে ক্রিস ওকসের ৫ উইকেটে পাত্তা পেলো না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম টেস্ট হারার পরও ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে শেষবারের মতো উইজডেন ট্রফি জিতল ইংল্যান্ড।
আগেরদিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর এদিন ৯৮ ওভার ছিল ইংল্যান্ডের হাতে, উইন্ডিজের শেষ ৮ উইকেট নিতে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ বাঁচাতে হলে খেলতে হতো পুরো দিন, রান সমীকরণে ছিল না ঠিক। তবে উইন্ডিজকে আশা জোগাবেন, এমন কাউকে ঠিক খুঁজে পাওয়া গেল না। দিনের খেলা শুরু হলো নির্ধারিত সময়েই, ৭ ওভার, একটা বৃষ্টি-বিরতির পর ৫০০তম উইকেটটা পেলেন ব্রড। ২০১৭ সালে এই ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে বোল্ড করেই ৫০০তম উইকেট পূর্ণ করেছিলেন জেমস অ্যান্ডারসন, এবার তাকে এলবিডব্লিউ করে সে মাইলফলক হলো ব্রডের। নীচু হওয়া বলটা মিস করেছিলেন ব্রাথওয়েট।
এরপর ওকসের পালা। শেই হোপ প্রথমে আকাশে তুললেন বল, সেটি ক্যাচ নিলেন ব্রডই। এরপর ইনসাইড-এজড শামারহ ব্রুকস। ৩ ওভারের মতো খেলার পর আবার নামলো বৃষ্টি, দুই দল আগেভাগেই গেল লাঞ্চে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সবকিছু যেন তখন ছেড়ে দিয়েছে আবহাওয়ার ওপরই, তাদের নিজেদের করার কিছু বাকি নেই যেন তাদের!
ধসের নিয়ম মেনে এলো রান-আউটও। সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা ব্যাটসম্যান রসটন চেজ রান নেব কি নেব না করছিলেন জেরমাইন ব্ল্যাকউডের সঙ্গে, ব্যাকওয়ার্ট পয়েন্ট থেকে ছুটে আসা ডম বেসের ডিরেক্ট থ্রো-তে রান-আউট হলেন তিনি।
জেসন হোল্ডার, শেন ডাওরিচ ও রাকিম কর্নওয়াল-- তিনজনই এলবডিব্লিউ ওকসের বলে, কর্নওয়ালকে দিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ হলো ওকসের। হোল্ডার রিভিউ করেছিলেন, তবে সফল হননি। ১ উইকেটের অপেক্ষা ছিল ইংল্যান্ডের, আর্চারকে সরিয়ে ব্রডকে আনলেন রুট।
শরীরঘেঁষা লেগসাইডের বলে খেলতে গিয়ে খোঁচা দিলেন ব্ল্যাকউড, ডাইভ দিয়ে ভাল ক্যাচ নিলেন বাটলার। ব্রডকে দিয়ে শুরু হয়েছিল। ব্রডকে দিয়েই শেষ হলো।
মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও শেষ করে দিলেন তিনি। কভিড-১৯ এর পর প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজের শুরুটা হয়েছিল রোমাঞ্চকর, প্রথম টেস্ট জিতে উইজডেন ট্রফি নিজেদের কাছে রেখে দেওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হলো না।