বৃষ্টি, শানের 'বেড়াল জীবন' এবং ওল্ড ট্রাফোর্ডে বাবর-ঝলক
প্রথম দিন শেষে
পাকিস্তান ১ম ইনিংস ৪৯ ওভারে ১৩৯/২ (বাবর ৬৯*, শান মাসুদ ৪৬*)
ইংল্যান্ডে টেস্ট মানেই বৃষ্টির সঙ্গে লুকোচুরি খেলা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে সেটা কমবেশি চলেছে, আজ পাকিস্তানের সঙ্গে ওল্ড ট্রাফোর্ডের প্রথম দিনেও চলল সেটা। বৃষ্টির বাধায় ৪৯ ওভারের বেশি খেলা হয়নি, তবে দিন শেষে পাকিস্তানই বোধ হয় বেশি খুশি থাকবে। বাবর আজম আর শান মাসুদ মিলে যে একটা ভালো স্কোরের ভিত এনে দিচ্ছিলেন ধীরে ধীরে!
বৃষ্টির ফাঁকে আজ ওড ট্রাফোর্ডে ফুটবল অনুশীলনও করেছে ইংল্যান্ড, ভাইরাল হওয়ার মতো একটা ভিডিও জন্ম দিয়ে ফেলেছে। তবে উইকেট নেওয়ার কাজটা খুব ভালোভাবে করতে পারেনি। সকালে টসে জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলী টসে জিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ব্যাট করার। দুই দলে তেমন কোনো চমক ছিল না। বেন স্টোকসকে নিয়ে সংশয় ছিল, তবে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলছেন এই টেস্ট। মেঘলা আবহাওয়ায় আজহার ভুল সিদ্ধান্ত নিলেন কিনা, এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছিল। তবে ব্রড আর অ্যান্ডারসনের ওপেনিং স্পেলটা দুই ওপেনার শান ও আবিদ আলী সাফল্যের সঙ্গেই কাটিয়ে দিলেন।
বিপদটা শেষ পর্যন্ত সুইং নয়, এলো পেস থেকে। জফরা আর্চারের গতিময় ডেলিভারিটা ভিতরে ঢুকেছিল, পেসে বিট হয়ে বোল্ড হলেন আবিদ। ১৬ রানে ফিরলেন, ৩৬ রানে প্রথম উইকেট হারাল পাকিস্তান। অধিনায়ক আজহার এলেন, কোনো রান না করেই ফিরে গেলেন। ওকসের ভেতরের দিকে ঢোকা বল প্যাডে লাগল আজহারের, এলবিডব্লুর আবেদনে আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি আজহারের। ৪৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট নেই পাকিস্তানের।
এরপরের গল্পটা শুধুই শান আর বাবরের। ইংল্যান্ডে রেকর্ড ভালো ছিল না শানের, বিশেষ করে অ্যান্ডারসনের বিপক্ষে সেটি আরও খারাপ। বাবর শুরুর দিকে একটু নড়বড়ে ছিলেন। কিন্তু বল পুরনো হওয়ার সাথে সাথে দুজন খেলতে শুরু করলেন হাত খুলে। এর মধ্যে শান খেলে ফেলেছেন ১০০ বল, ২০১৬ সালের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনো বিদেশী ওপেনারের এই কীর্তি নেই। অবশ্য এরপর শান দুবার ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছেন, আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে বাটলারের। দুবারই ডম বেস দুর্ভাগা বোলার। একবার বাটলার ক্যাচ মিস করেছেন, আরেকবার করেছেন সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ। শান দিন শেষে যে ৪৬ রানে অপরাজিত, তার মূল কৃতিত্ব তার।
তবে বাবরের এসব কিছু দরকার হয়নি। আজ আরও একবার দেখিয়ে দিয়েছেন, কেন তাকেসহ ফ্যাবুলাস ফোর নয়, ফাইভ বলা উচিত। দেখার মতো সব শট খেলেছেন থিতু হয়ে, কাটের সঙ্গে করেছেন স্ট্রেট ড্রাইভ, পুল সবই। দিন শেষে অপরাজিত আছেন ৬৯ রান, সেটাকে সেঞ্চুরিতে পরিণত না করলে হতাশ হবেন ভীষণ। পাকিস্তান এই টেস্টে কতটা কী করবে, তারও অনেকটুকু হয়তো নির্ভর করছে তার ওপরেই!