গাইকোয়াড়-জাদেজা খাদের কিনারে ঠেললেন কলকাতাকে
কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৭২/৫, ২০ ওভার (রানা ৮৭, গিল ২৬, কার্তিক ২১*, এনগিডি ২/৩৪)
চেন্নাই সুপার কিংস ১৭৮/৪, ২০ ওভার (গাইকোয়াড় ৭২, জাদেজা ৩১*, রাইডু ৩৮, কামিন্স ২/৩১, বরুণ ২/২০)
চেন্নাই ৬ উইকেটে জয়ী
সব নেমে এলো শেষ বলে। কমলেশ নাগারকোটির শেষ বলে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১ রান, আগের বলেও ফুললেংথ থেকে তুলে ছয় মেরেছিলেন জাদেজা। অইন মরগান ইনফিল্ড শক্ত করলেন, তবে লেংথ বলটা অনায়াসে লং-অনের ওপর দিয়ে পার করে দিলেন জাদেজা। কলকাতার ১৭২ রান পার হলো চেন্নাই, রুতুরাজ গাইকোয়াড়ের ৫৩ বলে ৭২ রানের সঙ্গে আম্বাতি রাইডুর ২০ বলে ৩৮ রানের পর জাদেজার ১১ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংসে। টুর্নামেন্ট থেকে আগেই বিদায় নেওয়া চেন্নাইয়ের কাছে হেরে খাদের কিনারে চলে গেল কলকাতা, খাতা-কলমে অবশ্য এখনও সম্ভাবনা আছে তাদের, তবে শেষ ম্যাচে রাজস্থানকে শুধু হারালেই চলবে না তাদের, নির্ভর করতে হবে আরও হিসাব-নিকাশের ওপর। অন্যদিকে কলকাতার হারে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত হয়েছে মুম্বাইয়ের।
দুবাইয়ে এদিন শিশিরের ছোঁয়া ছিল, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং-ও মনে হচ্ছিল তুলনামূলক সহজ। বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলিতে গাইকোয়াড় ও আম্বাতির জুটি কলকাতাকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিতে চাচ্ছিল তখনই। ১৭৩ রানতাড়ায় পাওয়ারপ্লেতে ৪৪ রান তুলেছিলেন গাইকোয়াড় ও শেন ওয়াটসন, তবে পরেরজন ঠিক ছন্দটা খুঁজে পাননি। ৮ম ওভারে গিয়ে বরুণ চক্রবর্তিকে তুলে মারার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। পরের ওভারে নিতিশ রানাকে তিন চারে আম্বাতি রাইডু চেন্নাইয়ের রানতাড়া সহজ করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সে আধিপত্য চলেছে আরও কিছুক্ষণ। ফার্গুসনের করা ১১তম ওভারে উঠেছিল ১৪ রান। ২০ বলে ৩৮ রান করা রাইডুকে ফিরিয়ে কলকাতা ক্যাম্পে স্বস্তি এনেছিলেন প্যাট কামিন্স। গাইকোয়াড় তার আগেই করেছেন ৩৭ বলে ফিফটি।
রাইডুর পর বরুণ চক্রবর্তির লেংথ ও গতি ভুল পড়ে বোল্ড হয়েছেন ধোনি, পরপর দুই ওভারে জোড়া উইকেট কলকাতাকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল দারুণভাবে। চাপটা আরও বাড়তে পারতো, তবে স্যাম কারানের দেওয়া সহজ ফিরতি ক্যাচ ফেলেছিলেন বরুণ। কামিন্সকে এরপর স্কুপ করতে গিয়ে গাইকোয়াড় ফিরেছেন, সে ওভারে উঠেছিল মাত্র ৪ রান।
গাইকোয়াড়ের ৭২ রানে ম্লান হয়ে গেছে রানার ৮৭/আইপিএল
১৯তম ওভারে ফার্গুসনকে আনলেন মরগান, প্রথম ৪ বলে ৮ রান দেওয়া কিউই পেসার ৫ম বলটা করলেন বিমার, ফ্রি-হিটে জাদেজা ছয় মেরে শাস্তিটা দিলেন চরমভাবে। সে ওভারে উঠলো ২০ রান, শেষ ওভারে নাগারকোটির জন্য থাকলো ১০। প্রথম ৪ বলে ৩ রান দিয়ে নাগারকোটি টিকে থাকলেন, কিন্তু জাদেজার সামনে শেষ ২ বলে গড়বড় হয়ে গেল সব।
আগে ব্যাটিং করা কলকাতা এদিন টুর্নামেন্টে নিজেদের সেরা শুরুটা পেয়েছিল, শুবমান গিল ও নিতিশ রানা তাদেরকে ওপেনিংয়ে এনে দিয়েছিলেন প্রথম ফিফটি রানের জুটি। তাদের ৫৩ রানের জুটি ভেঙেছিল করন শর্মার দারুণ এক ডেলিভারিতে, লাইন না বুঝে ক্রিজে আটকে থেকে বোল্ড হয়েছিলেন গিল।
পাওয়ারপ্লেতে কলকাতাকে মোমেন্টাম এনে দিয়েছিল শেষ ওভারটা, মিচেল স্যান্টনারকে নিতিশ রানা মেরেছিলেন দুই চারের সঙ্গে একটি ছয়। আরেকবার সে মোমেন্টাম এসেছিল ১৬তম ওভারে, এমএস ধোনি যখন সে ওভারে পেসের বদলে আরেকবার ভরসা রাখলেন আগের ৩ ওভারে ১৬ রান দেওয়া শর্মার স্পিনের ওপরই। রানা এবার টানা তিন ছয় মারলেন, সে ওভারে উঠেছিল ১৯।
এর আগে তিনে পাঠানো সুনিল নারাইন বা চারে আসা টুর্নামেন্টে প্রথমবার ম্যাচ খেলতে নামা রিংকু সিং তেমন কিছু করতে পারেননি, যথাক্রমে দুজনই সমানসংখ্যক বল খেলে করেছেন ৭ ওও ১১ রান। তবে রানা টিকে ছিলেন, এনগিডির বলে ফেরার আগে তিনি করেছেন ৬১ বলে ৮৭। এরপর দীনেশ কার্তিকের ১০ বলে ২১ রানের ঝড়ে মোটামুটি ভাল সংগ্রহই পেয়েছিল কলকাতা।
তবে শেষের ঝড়ে সব এলোমেলো করে দিলেন জাদেজা। এলোমেলো হয়ে গেল কলকাতার শেষ চারে যাওয়ার আশাও।