• আইপিএল ২০২০
  • " />

     

    বোল্ট-রোহিতে দিল্লিকে পাত্তা না দিয়ে পঞ্চমবার আইপিএলের মসনদে মুম্বাই

    বোল্ট-রোহিতে দিল্লিকে পাত্তা না দিয়ে পঞ্চমবার আইপিএলের মসনদে মুম্বাই    

    দিল্লি ক্যাপিটালস ১৫৬/৭, ২০ ওভার (আইয়ার ৬৫*, পান্ট ৫৬, বোল্ট ৩/৩০, কোল্টার-নাইল ২/২৯)
    মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ১৫৭/৫, ১৮.৪ ওভার (রোহিত ৬৮, কিষান ৩৩*, নরকিয়া ২/২৫) 
    মুম্বাই ৫ উইকেটে জয়ী ও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন 


    শিরোপাটা মুম্বাইয়েরই ছিল। মুম্বাইয়েরই থাকলো। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে ফাইনালে এসেছিল দিল্লি, তবে এর আগে তিনবার মুম্বাইয়ের বিপক্ষে দেখা হয়ে হেরেছিল তারা তিনবারই। ফাইনালে এসেও চিত্রটা বদলালো না। 

    ট্রেন্ট বোল্টের তোপের পর রোহিত শর্মার ঠিক সময়ে জ্বলে ওঠায় ভর করে টানা দ্বিতীয়বার ও সব মিলিয়ে পঞ্চমবারের মতো আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। দুবাইয়ের ফাইনালে প্রথম বল থেকেই নিজেদের রূপটা দেখিয়েছিল মুম্বাই, শ্রেয়াস আইয়ারের দল তাদেরকে আটকাতে পারেনি শেষ পর্যন্ত অনায়াস জয় পাওয়া থেকে। ২০০৯-১০, ২০১১ মৌসুমে চেন্নাই সুপার কিংসের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা দুই শিরোপা জিতলো মুম্বাই, আইপিএলে তাদের চেয়ে বেশি শিরোপাও নেই এখন অন্য কারও।

    টসে জিতে এদিন আবারও ব্যাটিং নিয়েছিল দিল্লি, তবে প্রথম বলেই ট্রেন্ট বোল্টের লেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এজড হয়ে ফিরলেন আগেরদিনের ম্যাচসেরা মার্কাস স্টোইনিস, দিল্লির সামনে কী আছে-- তা নির্ধারিত হয়ে গেল যেন তখনই। পাওয়ারপ্লেতে দিল্লি হারিয়েছে আরও ২ উইকেট-- বোল্টের লেগসাইডের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হয়েছেন আজিঙ্কা রাহানে, জয়ন্ত যাদবকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে বোল্ড রাহানে। 

    যাদব এদিন খেলেছেন টুর্নামেন্টে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ, তবে দিল্লির বাঁহাতিদের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের এ অফস্পিনারকে খেলানোর ট্যাকটিকস কাজে লেগেছে দারুণভাবে। ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়েছেন এ অফস্পিনার। পাওয়ারপ্লেতে দিল্লি তুলেছিল ৪১ রান। 


    শ্রেয়াস আইয়ার ও মোটামুটি সাদামাটা টুর্নামেন্ট কাটানো ঋষভ পান্ট দিল্লিকে টানলেন এরপর, দুজনই করলেন ফিফটি। তবে শেষদিকে গিয়ে উড়ান দেওয়া হলো না আর তাদের। ৩৮ বলে ৫৬ রান করে বড় অসময়ে বেখাপ্পা ধরনের আউট হয়েছেন পান্ট, আইয়ার অবশ্য অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত, ৫০ বলে ৬৫ রান করে। তবে শিমরন হেটমায়ারকে হিটিংয়ের সুযোগই দেয়নি মুম্বাই, দিল্লিকে তারা আটকে রেখেছে ১৫৬ রানের ভেতরই। 

    মুম্বাইয়ের ব্যাটিং পাওয়ার-হাউসের কাছে সে লক্ষ্য তেমন বড় নয়, তবে ফাইনাল বলেই হয়তো ইনিংস শুরুর আগে আশা করেছিল দিল্লি। রবি আশ্বিনের করা প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে ছয় মেরে রোহিত বুঝালেন, তাদের মনোভাবটা কেমন। 


    কুইন্টন ডি কক ও তিনি মিলে কাগিসো রাবাদার প্রথম ওভারে তুললেন ১৪ রান, ৪ ওভারে ৪০। স্টোইনিস এসে ব্রেকথ্রু দিলেন, ডি কক তার বাইরের বলে খোঁচা মেরে ফিরলেন। সূর্যকুমার যাদব এসে আবারও হতাশ করলেন দিল্লিকে, প্রথম ২ বলেই ১০ রান নিয়ে। 

    পাওয়ারপ্লেতে ৬১ রানের পর প্রথম ১০ ওভারে ৮৮, মুম্বাই তখন শিরোপার দিকে ছুটছিল। রোহিতের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝির পর নিজের উইকেটটা স্যাক্রিফাইস করে ফিরলেন যাদব, তবে তাতেও মোমেন্টাম দিল্লির দিকে কোনোমতেই যেতে দিলেন না রোহিত। ফাইনালে এসে নিজের দারুণ টাইমিং ও প্লেসমেন্টের প্রদর্শনী দেখালেন তিনি, শেষ পর্যন্ত নরকিয়ার বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ৫১ বলে ৬৮, যে ইনিংসের দ্বিতীয়ভাগে তুলনামূলক ধীরগতির ছিলেন তিনি। 

    যাদব ফিরলেও রোহিতের সঙ্গীর অভাব হয়নি, পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ধারাবাহিক ইশান কিষান খেলেছেন দারুণ কিছু শট, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৯ বলে ৩৩ রানে। শেষদিকে কাইরন পোলার্ড, হারদিক পান্ডিয়া আউট হয়েছেন, তবে বলা ভাল, ‘উইনিং রান’ নেওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন। কিষানকে একপাশে রেখে যেটি নিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। 

    দুবাইয়ে গিয়ে আরেকবার আইপিএলের মসনদে বসেছে মুম্বাই, এবার দিল্লিকে পাত্তা না দিয়েই।