• আইপিএল ২০২০
  • " />

     

    উইলিয়ামসন-সামাদ শঙ্কা কাটিয়ে দিল্লিকে প্রথমবার ফাইনালে নিয়ে গেলেন স্টোইনিস-রাবাদা

    উইলিয়ামসন-সামাদ শঙ্কা কাটিয়ে দিল্লিকে প্রথমবার ফাইনালে নিয়ে গেলেন স্টোইনিস-রাবাদা    

    দিল্লি ক্যাপিটালস ১৮৯-৩, ২০ ওভার (ধাওয়ান ৭৮, হেটমায়ার ৪২*, স্টোইনিস ৩৮, রশিদ ১/২৬, সন্দিপ ১/৩০)
    সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৭২-৮, ২০ ওভার (উইলিয়ামসন ৬৭, সামাদ ৩৩, রাবাদা ৪/২৯, স্টোইনিস ৩/২৬)
    দিল্লি ১৭ রানে জয়ী


    এলিমিনেটর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ইনিংস খেলতে হতো কেন উইলিয়ামসনকে, প্রায় তেমনই খেললেন তিনি। রঞ্জি ট্রফির আগের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ছয় মারা ১৯ বছর বয়সী আব্দুল সামাদকে করতে হতো দুর্দান্ত কিছু, প্রায় সেটি করে ফেলেছিলেন তিনি। তবে যে রাতটা হবে মার্কাস স্টোইনিসের, ধাওয়ান-হেটমায়ারের, যে রাতটা হবে কাগিসো রাবাদার, যে রাতটা হবে দিল্লি ক্যাপিটালসের, সেদিন উইলিয়ামসন-সামাদকে ডুবতে হবে হতাশায়। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ডেথ ওভারে সন্দিপ শর্মা ও টি নটরাজানের দারুণ বোলিংয়ের পর রানতাড়ায় উইলিয়ামসন-সামাদ একটু চোখ রাঙালেও দিল্লির প্রথমবারের ফাইনাল যাওয়ার পথে বাধা হতে পারেননি তারা। মঙ্গলবার দুবাইয়ে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে আইপিএলের ১৩তম মৌসুমের শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে নামবে শ্রেয়াস আইয়ারের দলই। 

    আবুধাবিতে শিশিরের প্রভাবের ব্যাপারটা একদিকে সরিয়ে ব্যাটিং নিয়েছিল দিল্লি, ওপেনিংয়ে স্টোইনিসের পর চারে পাঠিয়েছিল শিমরন হেটমায়ারকে। ৩ রানে জীবন পাওয়া স্টোইনিস-টোটকা দিল্লির কাজে লেগেছে ভালভাবেই, রশিদ খানের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেছেন ২৭ বলে ৩৮। অন্যদিকে ধাওয়ানও এলিমিনেটরের দুঃস্মৃতি পেছনে ফেলেছেন, ওপেনিং জুটিতে দুজন মিলে তুলেছিলেন ৮৬ রান, ৮.২ ওভারে। 

    স্টোইনিসের পর অধিনায়ক আইয়ারের সঙ্গে ধাওয়ান যোগ করেছেন আরও ৪০, একপাশ থেকে শুধু ধাওয়ানকে সঙ্গ দেওয়ার কাজটাই করেছিলেন আইয়ার। বোলিংয়ে খুব একটা সুবিধার দিন না কাটানো হোল্ডারের শিকার হওয়ার আগে ২০ বলে তিনি করেছেন ২১ রান। 

    এরপর হেটমায়ার এসে তুলেছেন আরেকদফা ঝড়, ধাওয়ান ও তিনি মিলে এ দফা ২৮ বল খেলে তুলে ফেলেছেন ৫২ রান। সন্দিপ ১৯তম ওভারে ফিরিয়েছেন ধাওয়ানকে, যদিও রিভিউ নিলে বেঁচে যেতে পারতেন তিনি। তবে তার ৫০ বলে ৭৮ রানের ইনিংস দিল্লিকে দিয়েছে বড় স্কোরের ভিত। শেষ ওভারে নটারাজান ব্লক-হোলে করে গেছেন ছয়টি ডেলিভারিই, শেষ ২ ওভারে দিল্লি বাউন্ডারি পায়নি কোনো, তুলতে পেরেছিল মাত্র ১৩ রান। 

    তবুও ১৮৯ রানতাড়ায় হায়দরাবাদের ভাল একটা শুরু প্রয়োজন ছিল, আরও স্পষ্ট করে বললে, দরকার ছিল তাদের অন্যতম স্তম্ভ ডেভিড ওয়ার্নারের কাছ থেকে ভাল একটা ইনিংস। ওপেনিংয়ে তারাও অদল-বদল করে পাঠিয়েছিল প্রিয়াম গার্গকে, তবে কাজে আসেনি সেটা। রাবাদার দারুণ এক ফুললেংথের ডেলিভারিতে ওয়ার্নারকে ফিরতে হয়েছে নিজের তৃতীয় বলেই। 


    ৫ম ওভারে স্টোইনিস এসে বোলিংয়ে ঝলক দেখিয়েছেন, গার্গের পর ওই ওভারেই ফিরেছেন মনিশ পান্ডে। সে দুই ডেলিভারি খুব একটা যুতসই ছিল না, তবুও এসেছে উইকেট। কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে এরপর যোগ দিয়েছেন জেসন হোল্ডার, এলিমিনেটরে রানতাড়ায় হায়দরাবাদের আরেক নায়ক। 

    উইলিয়ামসনের আইপিএল স্ট্রাইক রেট ১৩৪, হোল্ডারের ১৩৫, তবে তখন সমীকরণ বলছিল, মিলিতভাবে প্রায় ১৬২ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে হবে দুজনকে। হোল্ডার সেটি পারলেন না, ১৫ বলে ১১ রান করে আক্সার প্যাটেলের বলে ক্যাচ দিলেন। উইলিয়ামসন অবশ্য চেষ্টা করলেন, ৩৫ বলে ফিফটি করলেন, সামাদ এসে শুরু করলেন শট খেলা। 

    আনরিখ নরকিয়ার করা ১৬তম ওভারে সামাদের ছয়-চার-চারে উঠলো ১৬ রান, আশা জাগলো হায়দরাবাদের। তবে ১৭তম ওভারে আবারও হন্তারক হয়ে উঠলেন স্টোইনিস, এবার তার অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দিলেন উইলিয়ামসন, হায়দরাবাদের আশার অনেকটুকু শেষ হলো সেখানেই। 

    আশ্বিনের করা ১৮তম ওভারে উঠলো ১২ রান, শেষ ১২ বলে হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে রাবাদাকে ছয় মেরে তাদেরকে ম্যাচে রাখলেন সামাদ, এরপরের ৪ বলে তাদের কফিনে একের পর এক তিনটি পেরেক ঠুকে সব শেষ করে দিলেন রাবাদা। মাঝে একটা ওয়াইডসহ তিনটি বৈধ ডেলিভারিতে তিনি ফেরালেন সামাদ, রশিদ ও গোস্বামিকে। নরকিয়ার শেষ ওভার এরপর হয়ে দাঁড়াল দিল্লির প্রথম ফাইনালে যাওয়ার জন্য শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।