সন্দিপ-হোল্ডারে বেঙ্গালুরুকে পিষ্ট করে টিকে থাকলো হায়দরাবাদ
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ১২০/৭, ২০ ওভার (ফিলিপি ৩২, ডি ভিলিয়ার্স ২৪, সুন্দর ২১, সন্দিপ ২/২০, হোল্ডার ২/২৭)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১২১/৫, ১৪.১ ওভার (সাহা ৩৯, হোল্ডার ২৬*, পান্ডে ২৬, চেহেল ২/১৯, উদানা ১/২০)
হায়দরাবাদ ৫ উইকেটে জয়ী
হায়দরাবাদের জন্য ছিল বাঁচামরার ম্যাচ। আর দিনের প্রথম ম্যাচে দিল্লির হার বেঙ্গালুরুকে একটু স্বস্তি এনে দিয়েছিল। তবে শারজাহর ধীরগতির উইকেটে, ম্যাচের পরেরভাগে শিশিরের উপস্থিতিতে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে সহজ জয়ে টিকে থাকলো হায়দরাবাদ। এবারের আইপিএলে প্লে-অফের লাইন-আপ ঠিক করতে এখন অপেক্ষা করতে হবে গ্রুপপর্বের শেষদিন পর্যন্ত। হায়দরাবাদের পরের ম্যাচ আগেই প্লে-অফ ও শীর্ষ দুই নিশ্চিত করা মুম্বাইয়ের বিপক্ষে, বেঙ্গালুরু নামবে দিল্লির বিপক্ষে। সে ম্যাচটি বেঙ্গালুরু ও দিল্লির জন্য কার্যত কোয়ার্টার ফাইনাল, জেতা দলের নিশ্চিত হবে প্লে-অফের সঙ্গে শীর্ষ দুই পজিশনও।
টসের সময়ই সাইমন ডুল বেঙ্গালুরু অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে এদিন মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, প্রভাব থাকতে পারে শিশিরের। তবে কোহলি সেটির সঙ্গে ঠিক একমত না হয়ে বলেছিলেন, পরে ফিল্ডিং করতে হলেও মোটেই অখুশী নন তিনি। ম্যাচশেষে তিনি স্বীকার করলেন, শিশিরের প্রভাব বড্ড প্রকট হয়ে উঠেছিল, এমনকি বল ভেজা থাকার কারণে পরিবর্তনও করতে হয়েছে। অবশ্য আগে ব্যাটিং করে বোর্ডে ১২০ রান কখনোই যথেষ্ট মনে হয়নি বেঙ্গালুরুর, আর পরের ইনিংসের মাঝে যুঝভেন্দ্র চেহেলের দুর্দান্ত বোলিং ক্ষণিকের জন্য আশা জোগালেও জেসন হোল্ডার ১০ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে তা উড়িয়ে দিয়েছেন।
ব্যাটিংয়ের জন্য একটু কঠিন উইকেট ছিল শারজায়ও, বল ব্যাটে প্রথমদিকে আসছিল বেশ ধীরগতিতে, নিচুও হচ্ছিল। সেখানেই সুবিধা করতে পারেনি বেঙ্গালুরু। সন্দিপ শর্মার মিডিয়াম পেস দারুণ কার্যকর হয়েছে হায়দরাবাদের জন্য। পাড্ডিকাল হয়েছেন বোল্ড, শর্ট এক্সট্রা কাভারে উইলিয়ামসনের হাতে কোহলি ক্যাচ দিয়েছেন, পাওয়ারপ্লেতে ৩০ রানের বেশি তুলতে পারেনি বেঙ্গালুরু।
মাঝে ক্রিজের বেশ পেছনে গিয়ে খেলা এবি ডি ভিলিয়ার্সকে দেখে মনে হচ্ছিল, এ পিচে ব্যাটিংয়ের মন্ত্রটা ধরে ফেলেছেন তিনি, তবে শাহবাজ নাদিমকে একটা ছয়ের পর এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন তিনিও। এতক্ষণ টিকে থাকা জশ ফিলিপি ক্যাচ দিয়েছেন রশিদ খানের বলে, এরপর আর বেঙ্গালুরুর উড়ান দেওয়া হয়নি। ওয়াশিংটন সুন্দরের ১৮ বলে ২১ বা টিকে থাকতে লড়াই করা গুরকিরাত সিংয়ের ২৪ বলে ১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস সহায়তা করতে পারেনি তাদের।
রানতাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সুন্দরের প্রথম বলে ছয় মারা ডেভিড ওয়ার্নার ঠিক পরের বলেই মিড-অনে ধরা পড়ে ফিরেছিলেন, কিন্তু ঋদ্ধিমান সাহা ও মনিশ পান্ডে নিশ্চিত করেছেন, ভাল একটা শুরু পাচ্ছেন তারা। পাওয়ারপ্লেতেই হায়দরাবাদ তুলে ফেলেছিল ৫৮ রান।
ততক্ষণে শিশির জেঁকে বসেছে, তবে ভেজা বলেও নিজের কারুকার্য দেখিয়েছিলেন চেহেল। প্রথম ওভারে তাকে তুলে মারতে গিয়ে নিজের শেষ ডেকে এনেছেন পান্ডে, নিজের তৃতীয় ওভারে দারুণ ফ্লাইটে বোকা বানিয়েছেন সাহাকে। মাঝে উইলিয়ামসনকে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান-আউটের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন, তবে সাহার শট স্টাম্পে লাগার আগে চেহেলের হাত ছোঁয়নি, টিভি আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এমন, অবশ্য উইলিয়ামসন ক্রিজের ভেতরেই ছিলেন। সেই উইলিয়ামসনকে ফিরিয়েছেন ইসুরু উদানা, শর্ট এক্সট্রা কাভারে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে, যেখানে তিনি নিয়েছিলেন কোহলির ক্যাচ।
হায়দরাবাদের তখন প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান, মোটামুটি এমন অবস্থা থেকেই পাঞ্জাবের বিপক্ষে ম্যাচ হেরেছিল তারা। তবে হোল্ডার তেমন কিছুর পুনরাবৃত্তি হতে দেননি, মুখোমুখি হওয়া তৃতীয় বলেই মেরেছেন ছয়। নভদিপ সাইনির করা পরের ওভারে তিনি ও অভিষেক শর্মা তুলেছেন ১৯ রান, অভিষেক ফিরলেও ১৫তম ওভারের প্রথম বলে চেহেলকে ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করেছেন হোল্ডার। বুঝিয়ে দিয়েছেন, দিনটা তাদেরই, ভেজা বলের ‘মাস্টার’ চেহেল বা তার দলের নয়।
আগেভাগেই ম্যাচ জয় হায়দরাবাদকে নেট রানরেটে আরেকটু ওপরে তুলেছে, মুম্বাই ছাড়া এখন একমাত্র তাদেরই রান-রেট ধনাত্মক, সেটিও ০.৫৫৫। প্লে-অফের লড়াইয়ে যা তাদেরকে এগিয়েই রাখবে শেষ ম্যাচের আগেও।