• আইপিএল ২০২০
  • " />

     

    বিদায়ের আগে পাঞ্জাবকে চেন্নাইয়ের 'বিষাক্ত চুমু'

    বিদায়ের আগে পাঞ্জাবকে চেন্নাইয়ের 'বিষাক্ত চুমু'    

    কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ১৫৩/৬, ২০ ওভার (হুডা ৬২*, রাহুল ২৯, আগারওয়াল ২৬, এনগিডি ৩/৩৯, তাহির ১/২৪, জাদেজা ১/১৭)
    চেন্নাই সুপার কিংস ১৫৪/১, ১৮.৫ ওভার (গাইকোয়াড় ৬২*, ডু প্লেসি ৪৮, রাইডু ৩০*, জর্ডান ১/৩১)
    চেন্নাই ৯ উইকেটে জয়ী


    ম্যাচের আগে এমএস ধোনিকে প্রশ্ন করলেন ড্যানি মরিসন, চেন্নাইয়ের হয়ে এটিই তার শেষ ম্যাচ কিনা। ধোনির জবাব, ‘অবশ্যই না’। তার কথা অনুযায়ী, আইপিএলে থাকছেন তিনি এখনও। চেন্নাই অবশ্য এই আইপিএলে থাকছে না আর, সবার আগে বিদায়ঘন্টা বেজে গেছে তাদের, আজ ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ ম্যাচ। তবে চেন্নাইয়ের জন্য যা বিদায়ী মুহুর্ত, পাঞ্জাবের জন্য সেটিই ছিল টিকে থাকার লড়াই। প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখতে এ ম্যাচ জিততেই হতো তাদের। চেন্নাই সেটি হতে দিল না, বিদায়ের আগে পাঞ্জাবকে দিয়ে গেল ‘বিষাক্ত’ চুমু। এর আগে বেঙ্গালুরু ও কলকাতাকে হারিয়ে তাদের প্লে-অফের যাত্রা কঠিন করে তুলেছিল চেন্নাই, এবার তাদের শেষ শিকার হলো পাঞ্জাব। 

    টানা ৫ ম্যাচ জয়ে উজ্জীবিত পাঞ্জাবকে এর আগে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিল রাজস্থান। বাঁচা-মরার শেষ দুই ম্যাচে এসে সব গুবলেট পাকিয়ে গেল পাঞ্জাবের, আবুধাবিতে এদিন বোর্ডে পর্যাপ্ত রান তুলতে পারেনি তারা, এরপর বোলিং যেমন হয়নি আঁটসাঁট, ফিল্ডিংয়েও সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে তাদের। চেন্নাইয়ের জন্য অবশ্য যাওয়ার আগে যা কিছু সম্ভব নিয়ে যাওয়ার ব্যাপার ছিল, রুতুরাজ গাইকোয়াড়ের ব্যাটিং নিশ্চিতভাবেই তার একটি হয়ে থাকবে। টানা তিন ফিফটি করলেন তিনি এ নিয়ে, রানতাড়ায় এদিনও ছিলেন দারুণ, ধীর-স্থির থেকে অসাধারণ টাইমিংয়ের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ৬২ রানে। 

    আবুধাবিতে এর আগে একটি জয়ও পায়নি পাঞ্জাব, এদিন ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালই হয়েছিল তাদের। লোকেশ রাহুল ও মায়াঙ্ক আগারওয়ালের জুটি ৫.২ ওভারে তুলেছিল ৪৮ রান, পরে দুজনই ফিরেছিলেন লুঙ্গি এনগিডির বলে বোল্ড হয়ে। ইনিংসের মাঝপথে পুরো খেই হারিয়ে ফেলেছিল পাঞ্জাবের ব্যাটিং, প্রথম উইকেটের পরের ১১ ওভারে মাত্র ৬০ রান তুলতে তারা হারিয়ে ফেলেছিল আরও ৪ উইকেট। শেষে গিয়ে দীপক হুডার ৩০ বলে ৬২ রান একটু মোমেন্টাম এনে দিয়েছিল তাদের, শেষ ৩ ওভার হুডার ওই ইনিংসে ভর করে তারা তুলেছিল ৪০ রান। 


    তবে সে মোমেন্টাম দ্রুতই মিলিয়ে গেছে তাদের ফাফ ডু প্লেসি ও গাইকোয়াড়ের ওপেনিং জুটিতে। ৫ রানে দাঁড়িয়ে একটা কঠিন সুযোগ দিয়েছিলেন ডু প্লেসি, সেটি হাতছাড়া হয়েছে। এরপর দুজন মিলে তুলেছেন ৮২ রান, ১০ম ওভারে গিয়ে ভেঙেছে সে জুটি। ততক্ষণে গাইকোয়াড়ের একটা ক্যাচ নাকচ করেছেন টিভি আম্পায়ার, সেটিতে হয়তো মনোবল আরও ভেঙে গেছে পাঞ্জাবের। ডু প্লেসির ক্যাচ নিয়ে হয়তো টিভি আম্পায়ারের বক্সের দিকেই তাকালেন রাহুল, কিন্তু সেটিও আর ফেরাতে পারলো না তাদের। উলটো এরপর রাইডুর ক্যাচ ফেললেন তিনি।

    রাহুলের পারফরম্যান্সই ছিল এদিন পাঞ্জাবের প্রতীকি, ব্যাটসম্যানরা যেমন মাঝের ওভারে মোমেন্টাম পাননি, বোলাররাও মিস করে গেছেন উইকেট-টু-উইকেট বোলিংয়ের কৌশল, বিশেষ করে স্পিনাররা। চেন্নাইয়ের জন্য ইমরান তাহির ও রবিন্দ্র জাদেজা যা করেছেন, সেটি করতে পারেননি রভি বিষ্ণয়, মুরুগান আশ্বিনরা। পরেরজন বেশ ইকোনমিক্যাল বোলিং করলেও উইকেটের দেখা পাননি, এ ম্যাচে যা প্রয়োজন ছিল বড্ড তাদের। 

    গাইকোয়াড়কে শেষ পর্যন্ত আউট করতে পারেননি তারা, অন্যদিকে আম্বাতি রাইডু দেখিয়েছেন সমানসংখ্যক বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলার বিলাসিতা। ১৯তম ওভারে রাহুল বোলিংয়ে আনলেন ক্রিস গেইলকে, ম্যাচের ফল আনুষ্ঠানিকভাবে আসার আগে সেটি ইঙ্গিত করলো, ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেছে তাদের। 

    পাঞ্জাবের জন্য এ মৌসুম ছিল রোলার-কোস্টার ধরনের-- শুরুতে সব ফসকে যাচ্ছিল, মাঝে টানা জয় আসতে লাগলো, এরপর মোক্ষম সময়ে আবার ফসকে গেল সব। চেন্নাইয়ের জন্য অবশ্য ব্যাপারটা সোজা-সাপটা, নিজেদের হারিয়ে খুঁজতে খুঁজতে যখন সব শেষ হয়ে গেছে, ততক্ষণে গিয়ে একটু ছন্দ পেয়েছে তারা। ধোনি থাকবেন কিনা, সে প্রশ্নও উঠেছে আরও আগেই। 

    আপাতত তিনি থাকছেন, সেটি নিশ্চিত করলেন। সঙ্গে তার দল নিশ্চিত করলো, আরব আমিরাত থেকে আইপিএল শেষে ভারত ফেরার যাত্রায় আগেভাগে পাঞ্জাবও সঙ্গী হচ্ছে তাদের।