• আইপিএল ২০২০
  • " />

     

    দাপুটে জয়ে দুইয়ে দিল্লি, হেরেও প্লে-অফে বেঙ্গালুরু

    দাপুটে জয়ে দুইয়ে দিল্লি, হেরেও প্লে-অফে বেঙ্গালুরু    

    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ১৫২/৭, ২০ ওভার (পাডিক্কাল ৫০, ডি ভিলিয়ার্স ৩৫, কোহলি ২৯, নরকিয়া ৩/৩৩, রাবাদা ২/৩০, আশ্বিন ১/১৮)
    দিল্লি ক্যাপিটালস ১৫৪/৪, ১৯ ওভার  (ধাওয়ান ৫৪, রাহানে ৬০, শাহবাজ ২/২৬)
    দিল্লি ৬ উইকেটে জয়ী


    দিল্লি এ ম্যাচে এসেছিল টানা ৪ ম্যাচ হার নিয়ে, বেঙ্গালুরু ৩ ম্যাচ। এ ম্যাচে জয়ী দলের প্লে-অফে দুই নম্বর পজিশন নিশ্চিত, তবে পরাজিত দলের সম্ভাবনা ছিল প্লে-অফের বাইরে ছিটকে যাওয়ার। প্রথম ইনিংসের পর নিশ্চিত হয়েছিল-- ১৭.৩ ওভারের মাঝে দিল্লিকে জিততে না দিলে প্লে-অফ নিশ্চিত হবে বেঙ্গালুরুর, আর বেঙ্গালুরুকে ১৮ রানের বেশি ব্যবধানে হারতে না দিলে নিরাপদ থাকবে দিল্লিও। শেষ পর্যন্ত হয়েছে সেটিই, তবে দাপুটে জয়ে বেঙ্গালুরুকে টপকে দুইয়ে উঠে গেছে দিল্লি, তারা খেলবে কোয়ালিফাইয়ার। বেঙ্গালুরুকে খেলতে হবে এলিমিনেটর। সেখানে তাদের সঙ্গী হবে এখন টানা চার ম্যাচে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা।

    এই সমীকরণে এখন কলকাতার ভাগ্য পুরোটাই নির্ভর করছে মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের সঙ্গে হায়দরাবাদের ম্যাচের ওপর। সেখানে হায়দরাবাদ জিতলে প্লে-অফে মুম্বাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরুর সঙ্গী হবে তারা, আর হারলে দরজা খুলে যাবে কলকাতার। 

    ‘উইনার টেকস ইট অল’ প্রেক্ষাপট এ ম্যাচকে বানিয়েছিল হাই-ভোল্টেজ, সে চাপ দারুণভাবে সামাল দিল শেষ পর্যন্ত দিল্লিই। টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা পেস জুটি আনরিখ নরকিয়া ও কাগিসো রাবাদা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কার্যকর হয়ে উঠলেন আবারও, সঙ্গে রবি আশ্বিনের স্পিনে দেখালেন ঝলক। বেঙ্গালুরুকে ১৫২ রানে আটকে দেওয়ার পর শিখর ধাওয়ান ও আজিঙ্কা রাহানের জোড়া ফিফটিতে যে ভিত পেয়েছিল তারা, হুট করে একটু চাপে পড়লেও সেটি সামাল দিয়েছে তারা। 

    প্লে-অফের আগে তাই দুশ্চিন্তায় বেশি থাকতে হবে বেঙ্গালুরুকেই। বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের ওপর তাদের ব্যাটিং অতি-নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, সেটি এখন মোটামুটি প্রমাণিতই। টসে হেরে ব্যাটিং করতে হয়েছিল তাদের, ওপেনিংয়ে ফিফটি পেয়েছিলেন দেবদূর পাডিকাল। তবে তার ১২১.৯৫ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস ঠিক বড় স্কোরের ভিতটা গড়তে পারেনি, আরেক ওপেনার জশ ফিলিপি এদিনও ব্যর্থ হয়েছেন। পাডিকাল-কোহলির জুটিতে উঠেছিল ৫৭ রান, তবে সে সময় দুজন মিলে খেলেছেন ৫০ বল। 


    ১৩ রানে একবার জীবন পাওয়া বিরাট কোহলি হয়তো শিশিরের প্রভাব মাথায় রেখে দ্রুত রান তুলতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু শেষ হাসিটা হেসেছেন রবি আশ্বিনই। আইপিএলে প্রথমবারের মতো কোহলির উইকেট পেয়েছেন তিনি, বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফিরেছেন ২৪ বলে ২৯ রান করে। শেষ ওভারে স্ট্রাইক নিজের কাছে রাখতে চাওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে রান-আউট হওয়ার আগে ডি ভিলিয়ার্স করেছেন ২১ বলে ৩৫, সঙ্গে শিভাম দুবের ১১ বলে ১৭ রানে দেড়শ পেরিয়েছে তারা। নরকিয়া নিয়েছেন ৩ উইকেট, রাবাদা ২টি, উঠে যাওয়ার আগে নিজের ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়েছিলেন আশ্বিন। 

    দিল্লিকে আটকে রাখতে দ্রুতই উইকেট দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর, দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ সিরাজের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে সেটি পেয়েছিল তারা। অফস্টাম্পে সোজা সিমে পড়া বলটা মুভমেন্ট করে গিয়ে ভেঙেছে ক্রিজে আটকে থাকা পৃথ্বি শর, তবে এদিন আসলে অমন একটা ডেলিভারি শুধু যথেষ্ট ছিল না বেঙ্গালুরুর। 

    শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন শিখর ধাওয়ান, সঙ্গে আজিঙ্কা রাহানেকে তিনে পাঠিয়ে বেশ স্বস্তিতেই ছিল দিল্লি। টানা দুই ইনিংস ডাকের পর ঠিক সময়ে জ্বলে উঠলেন ধাওয়ান, শাহবাজের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ৪১ বলে ৫৪, ছয়টি চার মারলেও ছয় মারেননি একটিও। তার সঙ্গে রাহানের ৮৮ রানের জুটি অনেকখানিই এগিয়ে দিয়েছিল দিল্লিকে। 

    এই আইপিএলে এখন পর্যন্ত নিস্প্রভ থাকা রাহানে এদিন ফিফটি পূর্ণ করলেন ৩৭ বলে, ওয়াশিংটন সুন্দরকে রিভার্স-সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ৪৬ বলে ৬০, তাদের প্লে-অফ নিশ্চিত হয়েছে এর আগেই। রাহানের আগে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার, ধাওয়ানের উইকেটের পর ৩৩ বলে কোনো বাউন্ডারি হয়নি, তবে তাতেও কিছু যায় আসেনি, সিরাজের করা ১৯তম ওভারে মার্কাস স্টোইনিসের মারা ছয়ের পর ঋষভ পান্টের চারে জয় নিশ্চিত হয়েছে দিল্লির।