• আইপিএল ২০২০
  • " />

     

    মুম্বাইকে পাত্তা না দিয়ে, কলকাতাকে হতাশ করে প্লে-অফে হায়দরাবাদ

    মুম্বাইকে পাত্তা না দিয়ে, কলকাতাকে হতাশ করে প্লে-অফে হায়দরাবাদ    

    মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ১৪৯-৮, ২০ ওভার (পোলার্ড ৪১, যাদব ৩৬, কিশান ৩৩, সন্দিপ ৩/৩৪, নাদিম ২/১৯, হোল্ডার ২/২৫, রশিদ ১/৩২)
    সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৫১-০, ১৭.১ ওভার (ওয়ার্নার ৮৫, ঋদ্ধিমান ৫৮) 
    হায়দরাবাদ ১০ উইকেটে জয়ী


    টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, চাপও সবচেয়ে বেশি থাকার কথা ছিল হায়দরাবাদের ওপর। প্লে-অফে যেতে জয়ের বিকল্প নেই, এমন সমীকরণের সঙ্গে সামনে আবার টেবিলের শীর্ষে থাকা মুম্বাই। অথচ চাপের ছিঁটেফোঁটাও খুঁজে পাওয়া গেল না তাদের পারফরম্যান্সে, সন্দিপ শর্মার সঙ্গে জেসন হোল্ডার, শাহবাজ নাদিম, রশিদ খানের দারুণ বোলিংয়ে মুম্বাইকে ‘বিলো-পার’ ১৪৯ রানে আটকে দেওয়ার পর ডেভিড ওয়ার্নার ও ঋদ্ধিমান সাহার জোড়া ফিফটিতে কোনো উইকেট না হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে প্লে-অফে চলে গেছে তারা, বেঙ্গালুরুকে টপকে উঠে গেছে তিনে। শারজায় না থেকেও এ ম্যাচে থাকা কলকাতাকেও হতাশ করেছে তারা। প্লে-অফে এলিমিনেটর ম্যাচে  হায়দরাবাদ মুখোমুখি হবে বেঙ্গালুরুর। 

    প্লে-অফ নিশ্চিত হওয়া মুম্বাই এদিন বিশ্রাম দিয়েছিল দুই স্ট্রাইক বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ ও ট্রেন্ট বোল্টকে, তবে ফিরেছিলেন নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে বাদ পড়া রোহিত অবশ্য ছন্দ খুঁজে পাননি। ধীরগতির নিচু বাউন্সওয়ালা উইকেটে ব্যাটিংয়ে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি তার দলও, শিশিরের প্রভাবে পরবর্তীতে ব্যাটিং তুলনামূলক সহজ হয়ে এসেছে, সেটির সুবিধা পুরোপুরি আদায় করেছেন ওয়ার্নার-ঋদ্ধিমান। প্লে-অফের দৌড়ে হায়দরাবাদ তাই টানা হারালো আগেই শেষ চারে যাওয়া তিন দলকে-- দিল্লি, বেঙ্গালুরুর পর মুম্বাইকে। টানা চার ম্যাচে হারকে সঙ্গী করে যাওয়া বেঙ্গালুরু তাদের প্রতিপক্ষ, শেষ ম্যাচে মুম্বাইয়ের আত্মবিশ্বাসেও আঘাত করলো তারা। তাদের আত্মবিশ্বাসকে নিয়ে গেল আরেকটু উঁচুতে। 

    মুম্বাইয়ের একাদশ দেখেই হয়তো এদিন বেশ একটু হতাশ হতে হয়েছিল এ ম্যাচে নজর রাখা ও হায়দরাবাদের হার চাওয়া কলকাতাকে, তবে প্লে-অফের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে মুম্বাই বুমরাহ-বোল্টের সঙ্গে পান্ডিয়াকে খেলানোর ঝুঁকিও নেয়নি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ টসটা জিতে এগিয়ে গেছে হায়দরাবাদ, সেসবই আরও দাপুটে পারফরম্যান্সে অনূদিত করেছে তারা রানতাড়ায়। পাওয়ারপ্লেতে কুইন্টন ডি ককের ১৩ বলে ২৫ রানে ভর করে ৪৮ রান তুলেছিল মুম্বাই, তবে হারিয়ে ফেলেছিল রোহিত ও ডি কককে। সন্দিপ শর্মা আরেকবার জ্বলে উঠেছেন পাওয়ারপ্লেতে, দুটি উইকেটই নিয়েছেন তিনি। 


    সূর্যকুমার যাদব ও ঈশান কিষাণ এরপর একটু টেনেছিলেন মুম্বাইকে, তবে ৭ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে থমকে দাঁড়াতে হয়েছে তাদের। নাদিমের বলে স্টাম্পড হয়েছেন যাদব, ব্যাটিং-অর্ডারে প্রোমোশন পাওয়া ক্রুনাল পান্ডিয়া তুলেছেন ক্যাচ। পরের ওভারে রশিদের গুগলিতে এজড হয়েছেন সৌরভ তিওয়ারি। 

    মুম্বাইয়ের আশা হয়ে ছিলেন কাইরন পোলার্ড, তবে তাকে বেশ কিছুক্ষণ খোলসবন্দি করে রাখতে পেরেছিলে হায়দরাবাদ। রশিদের বলে বেশ ক্লোজ কল থেকে পোলার্ড বেঁচেও গেছেন এলবিডব্লিউ থেকে, অন্যপাশে কিশানকে হারিয়ে ফেললেও পোলার্ড শেষ পর্যন্ত বড় শট খেলেছেন ১৯তম ওভারে গিয়ে, সেখান থেকে ৬ বলের মাঝে ৪টি ছয় মেরেছিলেন তিনি। তবে তার ৪১ রানের ইনিংসও ঠিক ‘পার’ স্কোরটা পার করাতে পারেনি মুম্বাইকে। 

    এরপর হায়দরাবাদের রানতাড়ার গল্পটা আসলে খুবই সংক্ষিপ্ত, সরলরৈখিক। বুমরাহ-বোল্টের অনুপস্থিতি ছিল স্পষ্ট, সঙ্গে ওয়ার্নার-ঋদ্ধিমানকে মনে হয়েছে খুবই পরিস্কার মানসিকতা নিয়ে মিশনে নামা দুজন। পাওয়ারপ্লেতেই দুজন মিলে তুলে ফেলেছিলেন ৫৬ রান, পাওয়ারপ্লের পরও তাদের রানরেট কোনো ওভারেই নামেনি ৮-এর নিচে। 

    দুজন মিলে মেরেছেন ১৯টি বাউন্ডারি, এর মাঝে মাত্র দুটি ছয়। একসময় ঋদ্ধিমান রানসংখ্যায় এগিয়ে ছিলেন ওয়ার্নারের চেয়ে, তবে খানিক বাদেই তাকে ছাড়িয়ে গেছেন পরেরজন। রাহুল চাহারকে ছয় মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছেন ৩৫ বলে, সে ওভারেই পূর্ণ করেছেন ঋদ্ধিমানও, ৩৪ বলে। এরপরও আলগা শট খেলেননি দুজনের কেউই। 

    ১৮তম ওভারে গিয়ে পান্ডিয়াকে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেছেন ওয়ার্নার, এরপর তার মোটামুটি বুনো উদযাপনই বলে দিচ্ছিল, আত্মবিশ্বাসের কোন পর্যায়ে আছে তার দল।