পেনাল্টি মিস, শেষ মুহূর্তের গোল: আরও একটি ন্যু ক্যাম্প 'কামব্যাক থ্রিলারে' ফাইনালে বার্সা
একটা ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই এর চেয়ে খুব বেশি কিছু হতে পারত না। বার্সার ইতিহাসে স্মরণীয় রাত অনেকই এসেছে, পিএসজির বিপক্ষে সেই মিরাকলের মতো আর কিছু হবে না সম্ভবত। তবে কাল আরেকটি ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প দেখল ন্যু ক্যাম্প, দুর্ভাগ্য এবার দর্শকেরা ছিলেন না। পেনাল্টি, ভিএআর, শেষ মুহূর্তের গোল- এমন অনেক নাটকের পর ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বার্সা কাল সেভিয়াকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে, দ্বিতীয় লেগের জয়ে পৌঁছে গেছে কোপা দেল রের ফাইনালে। রোনাল্ড কোমানের সামনে হাতছানি দিচ্ছে বার্সা কোচ হিসেবে প্রথম শিরোপার হাতছানি।
কদিন ধরেই ন্যু ক্যাম্পের বাতাসে একটা অস্থিরতার হাওয়া। পুলিশ হানা দিয়েছে ক্লাবে, গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে সাবেক সভাপতি বার্তোমেউ, সিইও গ্রাউসহ আরও কয়েকজনকে। সামনেই আবার বার্সার সভাপতি নির্বাচন, তার আগে মাঠের খেলা নিয়ে কথা হচ্ছিল কমই। কিন্তু কালকের ম্যাচটা ছিল এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত বার্সার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণগুলোর একটি।
আগের লেগে ২-০ গোলে হেরে কাল নেমেছিল বার্সা, অন্তত ২-০ গোলে জিততেই হতো। জেতার বার্তাটা শুরু থেকেই দিয়ে রেখেছে বার্সা, প্রথম গোল পেয়ে গেছে ১২ মিনিতেই। মেসির পাস থেকে বক্সে বল পেয়েছিলেন উসমান দেম্বেলে, কিন্তু সেভিয়ার ডিফেন্ডারদের জটলায় শট নেওয়ার জায়গা পাচ্ছিলেন না। হুট করেই জায়গা করে নিয়ে দারুণ এক শতে বল জড়িয়ে দিলেন জালে, বার্সা পেয়ে গেল প্রথম গোল।
এরপর আক্রমণ পালটা আক্রমণে ম্যাচ জমে ওঠে। এরপর প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি, তবে ম্যাচ জমে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৭ মিনিটে জর্দি আলবার ভলি জালে জড়িয়ে যেতে পারত, কিন্তু ফিরএ আসে পোস্টে লেগে। এরপর ৫ মিনিট পরেই পেনাল্টি পেয়ে যায় সেভিয়া। বক্সের ভেতর অস্কার মিনগুয়েজ ফেলে দেন লুকাস ওকাম্পসকে, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সেভিয়ার গোল মানে বার্সাকে করতে হতো আরও তিন গোল, কিন্তু টের স্টেগেন ঠেকিয়ে দেন কিকটা।
বার্সা এরপরও গোলের চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু পাচ্ছিল না আর। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে সেভিয়ার ফার্নান্দো লাল কার্ড দেখে চলে যান বাইরে। যোগ করা সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে মনে হচ্ছিল বার্সার সময় ফুরিয়ে গেছে, তখন মেসির ফ্রিকিক দেয়ালে লেগে বাইরে গেলে কর্নার পায় বার্সা। সেই কর্নার থেকে পিকের হেডে সমতা ফেরায়। ম্যাচ যায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে মার্টিন ব্রাথওয়েট গোল করে এবার এগিয়ে দেন বার্সাকে। নাটক হয়েছে অবশ্য এরপরও। দশ জন নিয়েই পেনাল্টির আবেদন করেছিল সেভিয়া, কিন্তু ভিএআরের সিদ্ধান্ত গেছে বার্সার পক্ষেই। শেষ পর্যন্ত স্মরণীয় এক জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বার্সা।
ফাইনালে বার্সার প্রতিপক্ষ হতে পারে অ্যাথলেটিক বিলবাও বা লেভান্তে। এই দুই দলের সেমির প্রথম লেগ ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে।