বাংলাদেশের দুইয়ে দুই: লিটন-মুশফিকের পর বোলারদের সম্মিলিত পারফর্ম্যান্সে বড় জয়
২য় ওয়ানডে, চট্টগ্রাম (টস-বাংলাদেশ/ব্যাটিং)
বাংলাদেশ- ৩০৬/৪, ৫০ ওভার (লিটন ১৩৬, মুশফিক ৮৬, সাকিব ২০, ফারিদ ২/৫৬, রশিদ ১/৫৪, ফারুকী ১/৫৯)
আফগানিস্তান- ২১৮, ৪৫.১ ওভার (নাজিবুল্লাহ ৫৪, রহমত ৫২, নবী ৩২, তাসকিন ২/৩১, সাকিব ২/৩৮, আফিফ ১/০)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৮৮ রানে জয়ী
টানা দুই জয়ে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করে ফেলল বাংলাদেশ। লিটন দাস-মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড ২০২ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আফগানিস্তানকে কোণঠাসা করে ৮৮ রানের জয় পেয়েছে তারা।
৩০৭ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই হোঁচট খায় আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ওভারেই রান আউট হয়ে রিয়াজ হাসান ফেরার পরে চতুর্থ ওভারে ফিরে যান হাশমতউল্লাহ শহীদি। দশম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইও ফিরলে ৩৪ রান তুলতেই ৩ উইকেট খুইয়ে বসে আফগানরা। সেই বিপর্যয় থেকে তাদের তেনে তোলেন রহমত শাহ-নাজিবুল্লাহ জাদরান জুটি।
নাজিবুল্লাহর ইনিংসে অবশ্য নাটকীয়তার কমতি ছিল না। এলবিডব্লিউ আবেদনে রিভিউতে বেঁচে যাওয়ার পর শরিফুল একেবারে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তার। এরপর সাকিবের ওভারে বাংলাদেশের রান আউটের আবেদন করা ও ফিরিয়ে নেওয়ার অদ্ভুতুড়ে কান্ডকারবারে টিকে যান সেই যাত্রায়। এরপর অন্য প্রান্তে থাকা রহমত ফিফটি পূর্ণ করে গিয়ার পাল্টাতে গেলেই তাসকিনের দারুণ এক বলে স্টাম্প খুইয়ে ফিরে যান ৫২ রানে।
ওই ওভারেই নাজিবুল্লাহ সিরিজে নিজের টানা দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করেন। তবে এক ওভার পরেই ওই তাসকিনের শিকার হয়ে নাজিবুল্লাহ থামেন ৫৪ রানে। এই দুজনের বিদায়ের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি আফগানরা। মোহাম্মদ নবি-রশিদ খান জুটি মাঝে চেষ্টা করেছিলেন। মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার হয়ে ৩২ রানে নবী ফিরলে সেই চেষ্টা অবশ্য ধোপে টেকেনি। ২৯ রান করে এরপর মোস্তাফিজুর রহমানের বলে স্টাম্প খুইয়ে ফিরে যান রশিদ খানও। ফাজালহক ফারুকীকে নিজের প্রথম বলেই ফিরিয়ে এরপর বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন আফিফ হোসেন।
টসে জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং নিলেও এদিনও শুরুতেই আঘাত হানেন ফাজালহক ফারুকী। তামিম ইকবাল এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলে উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টেকেননি সাকিব আল হাসানও। আফগান বোলারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে অবশ্য উইকেটে থিতু হয়ে যান অন্য প্রান্তে থাকা লিটন দাস। মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ইনিংস মেরামত করে ফিফটিও পেয়ে যান লিটন, ৬৫ বলে।
লিটনের ফিফটির পর মুশফিকও হয়ে ওঠেন সপ্রতিভ। ক্যারিয়ারের ৪১তম ওয়ানডে ফিফটি পূর্ণ করেন মুশফিক ৫৫ বলে। তাতেই দুজনের জুটি ১০০-রান পেরুলে দুজনেই গিয়ার পাল্টান। আফগান ফিল্ডাররাও তাদের সুযোগ দিয়েছেন যথেষ্ট। ৮৭ রানে থাকার সময় এক্সট্রা কাভারে পড়েছিল লিটনের সহজ ক্যাচ; মুজিবের পরের ওভারে স্টাম্পিং মিসের সুবাদে জীবন পেয়েছিলেন মুশফিকও।
সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ৫ম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুল করেননি লিটন। লিটন সেঞ্চুরি পেলেও সেটা করতে পারেননি মুশফিক। ফারিদ আহমাদ মালিককে তুলে মারতে গিয়ে ১৩৬ রানে লিটন থামলে তার পরের বলেই থামেন মুশফিকও। স্কুপ করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে মুশফিক করেছেন ৮৬ রান। এর আগে অবশ্য দুজনে মিলে গড়েছেন ২০২ রানের জুটি, যা বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ৩য় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। শেষ ৩ ওভারে যদিও মাহমুদউল্লাহ-আফিফ জুটি সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে হাত খুলে খেলতে পারেননি, তুলেছিলেন ১৯ রান। বাংলাদেশ তাই গিয়ে থামে ৩০৬ রানে।