• আইসিসি মেয়েদের বিশ্বকাপ
  • " />

     

    স্বপ্নের জয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লেন নিগার-ফাহিমারা

    স্বপ্নের জয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লেন নিগার-ফাহিমারা    

    বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ২৩৪-৭ (ফারজানা ৭১, নিগার ৪৬, শারমিন ৪৪’ নাশরা ৩/৪১)

    পাকিস্তান ৫০ ওভারে ২২৫-৯ (সিদ্রা ১০৪; ফাহিমা ৩-৩৮, রুমানা ২-২৯)

    ফলঃ বাংলাদেশ ৯ রানে জয়ী


    ঘুম ভেঙে যারা দেরিতে উঠে ম্যাচটা দেখেছেন, তাদের দুইরকম অনুভূতি হওয়ার কথা। বাংলাদেশের ২৩৪ রান নিশ্চিতভাবেই দারুণ একটা সংগ্রহ। ওয়ানদেতেই এত রান কখনো করতে পারেনি বাংলাদেশ! তবে পাকিস্তানের দুই ওপেনার যেভাবে শুরু করেছিলেন তাতে মহাসাগরের ওপারে টিভি সেটের সামনে অনেকেই পরে গিয়েছিলেন টেনশনে। নাটক আর উত্তেজনার রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ শেষে জিতেছে বাংলাদেশ, প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম জয়টা এসেছে পাকিস্তানের বিপক্ষেই।

    ম্যাচের টার্নিং ওভার বলতে সম্ভবত ফাহিমা খাতুনের ওই ওভারটার কথাই বলতে হবে। পাকিস্তানের দুই ওপেনার নাহিদা খান ও সিদ্রা আমিন দারুণ শুরু করেছিলেন তার আগে। ৯১ রানের জুটি গড়ার পর নাহিদাকে বোল্ড করে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন রুমানা। এরপর অধিনায়ক বিসমা মারুফ ও সিদ্রা ম্যাচটা বাংলাদেশের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে দুজন যোগ করলেন আরও ৬৪ রান। বিসমা জাহানারার বলে আউট হলেও সিদ্রা ওমাইমাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সবকিছু বদলে গেল ফাহিমার ৪২তম ওভারে এসে। ওই ওভারের শেষ বলে ওমাইমাকে ফারজানার ক্যাচ বানিয়ে দরকারি ব্রেক থ্রু এনে দেন ফাহিমা।

    এক ওভার পর ম্যাচের পাল্লাটা একাই ঘুরিয়ে দিয়েছেন। ওভারের দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লু করেন আলিয়া রিয়াজকে, পরের বলে ফাতিমা সানাও এলবিডব্লু। শেষ বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান সিদ্রা নওয়াজ। হুট করেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।

    তারপরও সিদ্রা আমিন ছিলেন। সেজন্য পাকিস্তানের আশাও বেঁচে ছিল। ডায়ানা বেগকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লক্ষ্যের দিকে। সেঞ্চুরিও হয়ে গেল সিদ্রার, পাকিস্তানের হয়ে বিশ্বকাপে যা প্রথম। কিন্তু এরপরেই সম্ভবত ম্যাচের দ্বিতীয় টার্নিং পয়েন্ট। অসম্ভব একটা ডাবলস নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান সিদ্রা। তার আগে অবশ্য ডায়নাকে এলবিডব্লু করে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট এনে দিয়েছেন সালমা। ৯ উইকেট পড়ার পর বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে অনেকটাই। আস্কিং রেট বেড়ে ওভারপ্রতি আটের বেশি হয়ে গিয়েছিল। শেষ দিকে নাশরা ও ফাতিমা চেষ্টা করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে পেরেছেন।

    তার আগে অবশ্য বাংলাদেশ একটু আফসোস করতেই পারে, অমন শুরুর পর কেন ২৫০ হলো না! বরাবরের মতো এবারও দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার শামীমা সুলতানা ও ফারজানা সুপ্তি। ৩৭ রান উঠে আসে দ্রুত, এরপর আউট হয়ে যান শামীমা। পাওয়ারপ্লেতে অঠে ৫১ রান, উইকেটের চারপাশে দারুণ সব শট খেলছিলেন সুপ্তি। দলের ৭৯ রানে ৪৪ রান করে আউট হন সুপ্তি।

    তবে ফারজানা ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি হাল ধরেছিলেন। দুজন তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ঠিক ৯৬ রান। ৪৬ রান করে আউট হন জ্যোতি, তখনও ১০ ওভার হাতে রেখে বাংলাদেশের রান ১৭৫। এরপর একটু খাত খুলে ফেলেন ফারজানা, শেষ পর্যন্ত আউট হন ৭১ রানে। সেই ওভারেই ফাহিমা আউট হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের ২৫০ করার সম্ভাবনা ধাক্কা খায়। শেষ দিকে রুমানা, রিতু মনি ও সালমারা তাই খুব বেশি করতে পারেননি। সেটাই অবশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দিন শেষে সেটাই হয়ে গেছে যথেষ্টর চেয়ে বেশি, বাংলাদেশ পেয়েছে স্বপ্নের এক জয়।