ভারতকে হতাশ করলেন চেজ
কালজয়ী রেগে শিল্পী বব মার্লের বিখ্যাত একটি গান আছে,“গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ,স্ট্যান্ড আপ ফর ইওর রাইট.। গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ,ডোন্ট গিভ আপ দ্য ফাইট।” হয়তো এই গানটাই কাল অনুপ্রেরণা দিয়েছিল রস্টন চেজকে। যে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারটা মোটামুটি সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল, সেটিই দারুণভাবে বাঁচিয়ে দিলেন এই অলরাউন্ডার। ম্যাচের শেষ দিনে তার অপরাজিত ১৩৭ রানের উপর ভর করে কিংস্টন টেস্ট ড্র করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।প্রথম ইনিংসেও চেজ নিয়েছিলেন ৫ উইকেট, ম্যাচটা পুরোপুরিই নিজের করে নিয়েছেন।
চতুর্থ দিন যখন ৪৮ রানে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, ভারতকে আর ব্যাট করাতেই তখন আরও ২৫৬ রান প্রয়োজন। “অ্যাটাক ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স” মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে এর পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও চেজ।
প্রথম ওভারেই অমিত মিশ্রকে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি দিয়ে শুরু চেজের। শামির পরের ওভারে তাঁর মাথার উপর দিয়ে ছক্কা,সঙ্গে দুই বাউন্ডারি।
কিং স্টনের মন্থর পিচ ও স্লো আউটফিল্ডে রান তোলা খুব একটা সহজ ছিল না। কিন্তু চেজ-ব্ল্যাকউডের সেটি করতেই সমস্যাই হয়নি। ৬৩ রানে ব্ল্যাকউড ফিরে যাওয়ার পর চেজকে সঙ্গ দিয়েছেন ডারউইচ। দুজন মিলে ১৪৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটা একটু একটু নিয়ে গেছেন ড্রয়ের দিকে। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে ডারউইচ আউট হয়ে গেলেও চেজ ছিলেন অবিচল। চা বিরতির আগেই তুলে ফেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।এরই সাথে অনন্য এক রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেন।একই টেস্টে সেঞ্চুরি এবং পাঁচ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় আছেন কিংবদন্তী ক্যারিবিয় অলরাউন্ডার গ্যারি সোবার্স,ডেনিস অ্যাটকিনসন,কলি স্মিথ।১৯৬৬ সালে সোবার্সের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এই কীর্তি আর কারও নেই।
চেজের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ স্যার ভিভ রিচার্ডসও,‘‘এ কোনও রকেট সায়েন্স নয়, সিম্পল বেসিকস অব ক্রিকেট। বল দেখো, অপেক্ষা করো, যথাসম্ভব নিখুঁত ফুটওয়ার্ক আর তাড়াহুড়ো না করে সঠিক শট বাছাই। এগুলোই তো গত কয়েক দিন ধরে বলে যাচ্ছি। এত দিনে বোধহয় কানে ঢুকল।’’
২০১১-১২ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া চেজের প্রথম শ্রেণিতে আছে মাত্র একটি সেঞ্চুরি।ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে অভিষেক হওয়ার দুই ম্যাচের মাথায় করে ফেললেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।৬ উইকেট হারিয়ে ৩৮৮ রান করে পঞ্চম দিন পার করে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভেস্তে গেলো ভারতের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন।