স্মিথের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার রাত
সংক্ষিপ্ত স্কোর
১ম দিন শেষে
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ৯০ ওভারে ২৮৮/৩ (স্মিথ ১০৯*, রেনশ ৭১, হ্যান্ডসকম্ব ৬৪*; আমির ১/৪০, ওয়াহাব ১/৫৬, ইয়াসির ১/৯৬)
গোলাপী বলটা হঠাৎ করেই ত্রাস হয়ে উঠল। নতুন বল পেয়ে ধাঁধাঁর মতো দুর্বোধ্য হয়ে গেলেন মোহাম্মদ আমির ও রাহাত আলী। চার মেরে ৯৭ রানে পোঁছানোর পর স্টিভেন স্মিথকে কেউ যেন ঢুকিয়ে দিল খোলসে। পরের দুই রানের জন্য অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে খেলতে হলো আরও ১৪ বল। শেষ পর্যন্ত আমিরকে চার মেরেই সেই মুহূর্তটা এলো, পাকিস্তানের সঙ্গে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন স্মিথ। প্রথম দিন শেষে ব্রিসবেনে দিনটা তাই অস্ট্রেলিয়ারই।
অথচ স্মিথ আউট হয়ে যেতে পারতেন ৯৭ রানে। আমিরের বলটা প্রথমে ব্যাটে লাগেনি বলেই মনে হয়েছিল। উইকেটকিপার বা ফিল্ডার, কেউই খুব একটা আবেদন করেননি। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেছে, স্মিথের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে গিয়েছিল বল। কে জানে, ব্রিসবেনের দর্শকদের উল্লাসেই সেই শব্দ চাপা পড়ে গেছে!
গোলাপী বলে, কৃত্রিম আলোয় দর্শকেরা সারা দুপুর-রাতই চেঁচিয়ে উৎসাহ দিয়ে গেছেন দলকে। ঘরের ছেলে ম্যাট রেনশ সেই সমর্থন নিয়েই তো ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে এসে পেয়ে গেছেন নিজের প্রথম ফিফটি। তবে সকালের সেশনে অস্ট্রেলিয়াকে ভালোই ধাক্কা দিয়েছিল পাকিস্তান।
৭০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ার পর আমিরের বলে এলবিডব্লু হয়ে যান ডেভিড ওয়ার্নার। পরের ওভারে ইয়াসির শাহর বলে আউট উসমান খাজাও, শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন মিসবাহ উল হককে। এরপর রেনশকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক স্মিথ।
তবে শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি আর পাওয়া হয়নি রেনশর। ৭১ রান করে ওয়াহাব রিয়াজের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। তবে স্মিথ ছিলেন অবিচল। এক আমির ছাড়া আরে কেউই তাঁকে সেভাবে ভোগাতে পারছিলেন না। প্রথম স্পেলের পর তো টানা ৩৯ বলে কোনো রানই দেননি আমির।
কিন্তু শেষ বিকেলে এসে হঠাৎ করেই হয়ে গেল দুর্ঘটনাটা। ফিল্ডিং করতে গিয়ে হঠাৎ করেই ভারসাম্য হারিয়ে বলের লাইন মিস করেন আমির। সঙ্গে সঙ্গেই ব্যথায় কাতরে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। একটু পরেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মাঠের বাইরে। মনে হচ্ছিল, আজ বোধ হয় আর বলই করতে পারবেন না। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর আবার মাঠে ফিরেছেন, স্মিথকে তো আউটও করে ফেলেছিলেন। চোটটা যে গুরুতর নয়, সেটাও পরিষ্কারই।
সেটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। নতুন বল পাওয়ার পর স্লিপে আরও বেশ কয়েকবার সুযোগ দিয়েছেন স্মিথ-হ্যান্ডসকম্বরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৩৭ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন দুজন। চতুর্থ উইকেটে দুজন কাল সেটি আরও অনেক দূরের নিয়ে যেতে চাইবেন। আর সেটা হলে আমিরদের সামনে লম্বা একটা দিনই অপেক্ষা করছে!