পাকিস্তানের ইতিহাসে ভরসা শফিক
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চতুর্থ দিন শেষে
অস্ট্রেলিয়া ৪২৯, ২০২/৫
পাকিস্তান ১৪২, ৩৮২/৮ (শফিক ১০০*, বার্ড ৩/৯৪)
এরকম মিশ্র অনুভূতি নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারে খুব কম রাতই হয়তো কাটিয়েছেন স্টিভ স্মিথ। পাকিস্তানের লেজকে গুটিয়ে ফেলার সর্বাত্মক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। আসাদ শফিকের অসাধারণ সেঞ্চুরির সুবাদে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। অসম্ভব এক লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাদের দরকার আর ১০৮ রান, তবে হাতে আছে মাত্র দুই উইকেট। কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতিতে এই ২ উইকেট তুলে নেয়াই বিশাল ব্যাপার মনে হতে পারে স্মিথের কাছে!
আজ সারাদিনে কী করেননি স্মিথ! একের পর এক বোলিং পরিবর্তন করিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার পরেও আধা ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় চেয়ে নিয়েছেন আম্পায়ার থেকে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। উল্টো দুইটি ক্যাচ মিস করে পাকিস্তানকে সুযোগ করে দিয়েছেন। স্মিথের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলা সেঞ্চুরি করা শফিক অপরাজিত আছেন দিনশেষে।
৫৫০ মিনিটের দীর্ঘ এই দিনে সকাল থেকেই ব্রিসবেনের আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল। স্টেডিয়ামের আশেপাশের অনেক জায়গায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টিও হয়েছিল রাতে। অজি ফাস্ট বোলারদের জন্য আদর্শ কন্ডিশন হলেও ইউনিস খান ও আজহার আলী দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শেষ ৬ ইনিংসে ইউনিসের রান মাত্র ১৬, প্রথম ইনিংসে তো শূন্য রানেই ফিরেছেন। তবে চতুর্থ ইনিংসে তাঁর গড় ৫৫, পাকিস্তান দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান এবার ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। আজহারকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ৯১ রানের জুটি।
কিন্তু আজহারকে স্টার্ক ফেরালে আবারো ভেঙ্গে পড়ে পাকিস্তানি মিডল অর্ডার। ২৮ রানের মাঝেই ফেরেন মিসবাহ ও ইউনিস। প্রথম ইনিংসের মতো এবারো ব্যর্থ মিসবাহ। উদ্ভট এক রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন ইউনিসও।
এরপরেই শুরু আসাদ শফিক এবং মোহাম্মদ আমিরের মহাকাব্যিক জুটির। অজি বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে দুজন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। কয়েকটি মুহূর্ত ছাড়া বাকি সময়টা স্বাচ্ছন্দ্যেই কাটিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। শেষের দিকে এসে স্মিথ দুটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন। পাকিস্তানের লেজের প্রতিরোধের চাপটা ভালোমতোই ঘিরে ধরেছিল স্মিথকে সেটা তাঁর শরীরী ভাষা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।
৯২ রানের জুটি শেষে আমির ফিরে গেলেও শফিককে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ। দারুণ ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া রিয়াজ দিনের একবারে শেষ ওভারে আউট হন। এরই মাঝে ব্রিসবেনে চতুর্থ ইনিংসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি করে ফেলেছে দল। দিনের শেষ তিনটি বল ভালোভাবেই সামলেছেন ইয়াসির শাহ। শফিক কি পারবেন ইয়াসিরকে নিয়ে শেষ দিনে অতিমানবীয় কিছু করে দেখাতে?