দেশকে ফিরিয়ে দেওয়া রুশোয় রুষ্ট ডমিঙ্গো
কাইল অ্যাবটের কলপ্যাক চুক্তির সত্যতা নিশ্চিত হবার কিছুক্ষণ পরেই আরেকটা ধাক্কা খেয়েছে প্রোটিয়ারা। জাতীয় দলের আরেক খেলোয়াড় রাইলি রুশো দেশের হয়ে খেলবার ইচ্ছেটা বলিদান দিয়ে ৩ বছরের কলপ্যাক চুক্তি করেছেন হ্যাম্পশায়ারের সাথেই। ২৭ বছরের তরুণ ব্যাটসম্যান নিজেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এভাবে শেষ করে দেওয়ায় চূড়ান্ত হতাশ জাতীয় দল কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
তিক্তস্বরে জানিয়েছেন খারাপ ফর্ম থাকা সত্ত্বেও তাকে দলে সুযোগ দিয়েছেন তারা। "যখন রুশো ৫ ম্যাচে কোন রানই করেনি, তখন আমরা তাকে সাহস যুগিয়েছি। দলে সুযোগ দিয়েছি। যদি সে কৃষ্ণ বর্ণের কেউ হত, তখন বলা হত বর্ণ কোটাতেই সে সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু তেমনটা হয়নি।"
ক্যারিয়ারের প্রথম ৬ ওয়ানডের ৪টিতেই শূন্য রানে আউট হওয়া রুশোর অদ্ভুত আচরণ নিয়েই বেশি খেপেছেন তিনি। "অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকেই আমার সাথে তার কোন যোগাযোগ হয়নি। আমাদের অনেকেই রাইলির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পারেনি। দুঃখজনক হল, সে আইফোন থেকে আমাদের মেইল করে জানিয়েছে কলপ্যাক চুক্তির খবর জানিয়েছে। আমার নামের বানান পর্যন্ত ভুল লিখেছে। আমরা এতটাই বাজে অবস্থানে আছি। এটাই সত্যি। সে অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের ব্যাকআপ ছিল। পরবর্তী সুযোগটা সেই পেত। কিন্তু তাকে নিয়ে আমি প্রচণ্ড হতাশ।"
ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রুশো আর কোনদিনই জাতীয় দলে ডাক পাবেন না। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে প্রধান নির্বাহী হারুন লরগাত বলেছেন, "আজকের দিনটা কেবল দক্ষিণ আফ্রিকা নয় বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্যই হতাশাজনক দিন। রাইলি অনেকদিন ইনজুরিতে থাকার সময় আমরা সেরা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছি এবং কোন ধরণের কার্পণ্য দেখাইনি। রাইলি এবং অ্যাবট দুজনকেই গত বছর প্রচুর পরিমাণে সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং তারা নিশ্চিতভাবেই আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ছিল। আমরা তাদের সাথে দেখা করে সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ করলেও দুজনেই কলপ্যাক চুক্তির ব্যাপারে অনড় ছিল। তাই আমরা কেবল তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য শুভকামনা জানাতে পারি।”
২০১৪ সালের আগস্টে অভিষেক হবার পর ৩৬টি ওয়ানডে ও ১৫টি টি২০ খেলা রুশো অবশ্য জানিয়েছেন, "জাতীয় দল ছাড়ার সিদ্ধান্তটা কঠিন হলেও এই বয়সে আমার পরিবারের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার জন্য জরুরী ছিল। প্রোটিয়াদের হয়ে খেলা উপভোগ করেছি, দূর থেকে হলেও সবসময় আবেগ নিয়েই ওদের খেলা দেখতে বসব। ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকাকে ধন্যবাদ আমাকে খেলার সুযোগ দেবার জন্য। আগে দুবার সুযোগ পেলেও কাউন্টি খেলা হয়নি। ক্যারিয়ারে সবাই কাউন্টি খেলতে চায়। আমি হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।"
নিজের শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান ছিল রুশোর। গত অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করা সিরিজে ৫ ম্যাচে ৭৮ গড়ে করেছিলেন ৩১১ রান। অস্ট্রেলিয়ার সাথে ২-১ ব্যবধানে জেতা সিরিজের মূল একাদশে সুযোগ না পেলেও ছিলেন অতিরিক্ত হিসেবে। শ্রীলংকার সাথে চলতি সিরিজে পায়ের ইনজুরির জন্য দলে জায়গা হয়নি তার।