'পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়'
মহাকাব্যিক এক জুটিতে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিতে পৌঁছে দিয়েছেন। সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সেই ২২৪ রানের জুটি নিয়ে ম্যাচের পর থেকেই সংবাদমাধ্যমে রীতিমতো ‘তোলপাড়’ পরে গেছে। দেশীয় গণমাধ্যম তো বটেই, সাকিব-মাহমুদউল্লাহর জুটি নিয়ে বিদেশি পত্রিকাতেও আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের খবরে ২২৪ রানেই সেই জুটিকেই প্রাধান্য দিয়েছে বিবিসি। বাংলাদেশের এই জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে, ব্যাটিং বিপর্যয় সামলে উঠে সাকিব-মাহমুদউল্লাহ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। চাপের মুখে দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তাই বাংলাদেশেকে সেমিফাইনালে নিয়ে গেছে বলে মনে করছে বিবিসি।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া শিরোনাম করেছে, ‘বাঘের গর্জন, ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিদায়’। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় পাওয়াকে ‘অপ্রত্যাশিত’ ঘটনা হিসেবেই বলা হয়েছে। সাকিব-মাহমুদউল্লাহর ওই জুটির পাশাপাশি মোসাদ্দেক হোসেনের বোলিংয়ের প্রশংসাও করেছে পত্রিকাটি। মোসাদ্দেকের ওই স্পেলেই কিউইরা নিজেদের ইনিংসে খানিকটা খেই হারিয়ে ফেলেছিল,বলছে তারা। আরেক অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকা সিডনি মর্নিং হেরাল্ডও নিউজিল্যান্ডের পরাজয়কে ‘অপ্রত্যাশিত’ বলছে। সেখানে বলা হয়, মূলত বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানের কাছেই সেদিন হেরে গেছে নিউজিল্যান্ড।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, প্রথমবারের মতো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠা বাংলাদেশ ‘চমকে’ দিয়েছে সবাইকেই। আরেক ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজার শিরোনাম করেছে, ‘শেষ চারে উঠে উল্লাস বাংলাদেশে’। বাংলাদেশের এই জয়ে ক্রিকেট বিশ্বে হইচই পরে গেছে বলেই বলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের সমর্থকদের উল্লাসের কথাও এসেছে তাদের রিপোর্টে।
ইংলিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানের মতে, এরকম ম্যাচে ৩৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের জয় পাওয়া অসাধারণ ব্যাপার। চাপের মুখে দুর্দান্ত এই জয়ের ‘কারিগর’ বলা হয়েছে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহকে। মাঠে উপস্থিত বাংলাদেশী সমর্থকদের কথাও ফলাও করে বলা হয়েছে এখানে।
আরেক ইংলিশ পত্রিকা টেলিগ্রাফ বলেছে, 'প্রত্যয়ী' সাকিব-মাহমুদউল্লাহতেই 'বিদায় ঘণ্টা' বেজে গেছে নিউজিল্যান্ডের। সাকিবকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের 'পোস্টার বয়' আখ্যা দিয়ে তারা বলেছে, ৭০ এর দশকের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের মতোই কিউই বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর ব্যাপারে বলা হয়েছে, তিনি ছিলেন 'ধৈর্যের প্রতিমূর্তি'।
প্রায় সব পত্রিকার রিপোর্টের কভারে ব্যবহার করা হয়েছে মাহমুদউল্লাহর উদযাপনের ছবি। ম্যাচ শেষে আইসিসির অফিশিয়াল পেজের কভার ফটোতেও ছিল তাঁরই ছবি।