সেই অভিজ্ঞতা সিপিএলে কাজে লাগাতে চান মিরাজ
সাকিব আল হাসানের জন্য ব্যাপারটা আলাদা কিছু নয়। সেই ২০১৩ সালে প্রথম খেলেছিলেন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে, আর গত বছর তো জ্যামাইকা তালাওয়াসকে জিতিয়েই দেশে ফিরেছিলেন। গত আসরে সেন্ট লুসিয়ার হিয়ে খেলেছিলেন তামিম ইকবালও। তবে মেহেদী হাসান মিরাজের জন্য অভিজ্ঞতাটা সব দিক দিয়েই নতুন। প্রথমবার সিপিএলে খেলছেন বলেই শুধু নয়, কোনো বিদেশী টি-টোয়েন্টি লিগেও যে এটা মিরাজের প্রথম ‘মিশন’। তবে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলার জন্য দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দলের এই অলরাউন্ডার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, চার বছর আগে ক্যারিবিয়ান-অভিজ্ঞতা এবারও কাজে দেবে।
চার বছর আগের সেই অভিজ্ঞতা মিরাজের অনেক দিনই মনে থাকার কথা। অধিনায়ক হিসেবে প্রথমবারের মতো গিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে সেই অভিযানও ছিল দারুণ রোমাঞ্চকর। প্রথম ছয় ম্যাচ শেষে সিরিজে ছিল সমতা। সপ্তম ম্যাচটাই হয়ে গিয়েছিল সিরিজ নির্ধারণী। তাতে অধিনায়ক মিরাজ বল হাতে দেখালেন ভেলকি। চার উইকেট নিয়ে মাত্র ১৬৮ রানের পুঁজিকেই অনেক বানিয়ে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। এখনো যেন সেই স্মৃতিটা জ্বলজ্বল করছে বাংলাদেশের তরুণ অলরাউন্ডারের চোখে, '২০১৩ সালে আমি একবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিলাম। সেবার অনূর্ধ ১৯ দলের হয়ে আমরা সিরিজ জিতেছিলাম, আমি নিজেও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছিলাম। ৭ ম্যাচে আমি প্রায় ১৩টা উইকেট নিয়েছিলাম।’
সেবার অবশ্য মিরাজরা শুধু গায়ানাতেই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে মিরাজ মনে করছেন, অভিজ্ঞতাটা এবারও কাজে আসবে, ‘ওখানে কন্ডিশন আমি জানি । আমি শুধু গায়ানায় খেলেছি, আমার মনে হয় অন্য উকেটগুলো এরকমই হবে। আগের বারের এই অভিজ্ঞতা কাজে আসবে বলে আশা করি। আর সিনিয়রদের কাছ থেকে যতদূর শুনেছি, ওয়েস্ট ইন্ডিজে টার্নিং উইকেট থাকবে, বেশ সাহায্য পাব। সেরকম হলে আমার জন্য ভালো হবে।’
চার বছর আগে মিরাজের ব্যাটিং পরিচয়টাও ছিল বড়। তবে এখন মূলত তাঁর ভূমিকাটা বোলারেরই। মিরাজও জানালেন, ত্রিনবাগো তাঁকে মূলত বোলার হিসেবেই ভাবছে। তবে সুযোগ পেলে ব্যাটিংয়েও কিছু করতে চান, আমাকে মূলত স্পিনার হিসেবে নেওয়া হচ্ছে, সুযোগ পেলে ব্যাটসম্যান হিসেবেও কিছু করার । শেষের দিকে নেমে যদি ১০,১৫ বা ১২ রান লাগবে ওই সময় ভালো কিছু করতে পারলে অবশ্যই সেটা কাজে দেবে । তবে মূল লক্ষ্য অবশ্যই বোলিং।’
আগের বারের বিপিএলে রাজশাহী কিংসের হয়ে অফ স্পিনে পেয়েছিলেন ১৫ উইকেট। সেবার ড্যারেন স্যামির সঙ্গে ছিলেন একই দলে। মিরাজ বলছেন, ক্যারিবিয়ানদের কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতাও কাজে দেবে, বিপিএলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেকে ছিল, স্যামি তো আমার দলেই ছিল। ব্রাভো-গেইল আছে। ওদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি। আশা করি এটা কাজে লাগাতে পারব।’
এখনো অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে মাত্র এক ম্যাচ খেলেছেন। মিরাজ জানেন, সিপিএলে ভালো করলে সেই দরজা খুলে যেতে পারে অনেক দিনের জন্য। তবে সেজন্য চাপ নিচ্ছেন না, ‘চাপ নিলেই চাপ, আর না না নিলে চাপ নেই। নির্ভার থাকাটাই আমার কাছে বড় কথা। আর আমি ওখানে ভালো করলে বাংলাদেশেরও নাম সবাই জানবে।'
আগামী ১৫ আগস্টেই মিরাজের দেশে ফেরার কথা, অনুমতি মিলেছে ততদিনেরই। তবে অস্ট্রেলিয়া সফর শেষ পর্যন্ত না হলে লম্বা হতে পারে মিরাজের ক্যারিবিয়ান-অভিযান।