• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    চট্টগ্রামে 'বার্তা' দিলেন অন্য শফিউল

    চট্টগ্রামে 'বার্তা' দিলেন অন্য শফিউল    

    জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তখন ঘনিয়ে এসেছে গোধূলী । পিচ কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘উইকেট তো খুবই ইভেন। নতুন বল অনেক এনজয় করেছি’। শফিউল ইসলাম অবশ্য কতটুকু ‘এনজয়’ করেছেন, সকালের স্পেল না দেখলে সেটা অনুমান করা মুশকিল। স্বপ্নের এক সকালে নিয়েছেন তিন উইকেট, পরে নিয়েছেন আরও দুইটি। মাঠে আসা দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন আর হাবিবুল বাশারকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে এর চেয়ে ভালোভাবে নিজের বার্তাটা বোধ হয় আর দিতে পারতেন না!

    শফিউলের জন্য এই ‘এনজয়’  করাটা অবশ্য বেশ অধারাবাহিকই। একটা সময় যতটা প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসেছিলেন, তার পূরণ করতে পেরেছেন খুব কম। সেটার জন্য যতটা না অফ ফর্ম, তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী চোট আর ফিটনেস সমস্যা। নইলে সাত বছরের ক্যারিয়ারটা নয় টেস্ট আর ৫৬ ওয়ানডের চেয়ে অনেক বড়ই হতে পারত। দিন শেষে অবশ্য জানিয়ে গেছেন, ফিটনেসের সমস্যাটা এখন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। আগের চেয়ে অনেক চনমনে বোধ করছেন, সেটাও বলে গেলেন।

    তবে সেটা না বললেও সারাদিনের বোলিং দেখলেই অনুমান করা যেত। তাসকিনের সঙ্গে নতুন বল পেয়ে একদিন থেকে আক্ষরিক অর্থেই সন্ত্রস্ত করে রেখেছেন ব্যাটসম্যানদের। উইকেট থেকে পেস আর বাউন্স আদায় করে নিয়েছেন প্রথম বল থেকেই। সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস, দুজনকেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। নিজের সেরা বলে শুন্য রানে ফিরিয়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহকে।  পাঁচ ওভারের প্রথম স্পেলেই আরও দুইটি উইকেট পেয়ে যেতে পারতেন। উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচটা ধরতে পারেননি লিটন দাশ, আর নাজমুল হোসেনের খোঁচাটা বেরিয়ে গেছে দুই স্লিপের মধ্য দিয়ে। দিন শেষে শফিউলের বোলিং ফিগার ১৭ রানে ৫ উইকেট, তাও মাত্র ৭.১ ওভার বল করে। ওই দুই উইকেট পেলে সেটা কী হতো অনুমান করুন।

    তবে শফিউলের ভাবনায় নিশ্চয় শুধু আজকের ম্যাচ নেই। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য এই দলের ক্যাম্পে আছেন সব মিলে সাত পেসার। যদি স্পিনই মূল অস্ত্র হয়, তাহলে মুস্তাফিজের সঙ্গে থাকবেন বড়জোর এক পেসার। সেই দৌড়ে বাকিদের চেয়ে আজকেই বেশ কিছুটা এগিয়ে গেলেন শফিউল। তবে সেই ভাবনা মনে থাকলেও মুখে বলে গেলেন, দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে তেমন কিছুই ভাবছেন না।

    তবে মাঠে যতটা সপ্রতিভ, ম্যাচ শেষে কথা বলতে গিয়ে ততটাই যেন খেই হারিয়ে ফেললেন।  শুধু অল্প করে জানিয়ে গেলেন, উইকেটটা তো সাহায্য করেছেই, তবে নিজের কাজটাই আগে ঠিকঠাক করার চেষ্টা করেছেন, উইকেট থেকে তো নতুন বলে একটু সাহায্য পাওয়া যায়-ই।। উইকেটে সেটা তো ছিলই, কিন্তু আমি নতুন বলটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।‘  

    এই প্রস্তুতি ম্যাচই শেষ নয়, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করার উপলক্ষ পাবেন। শফিউল সেটার জন্যও প্রস্তুত, ‘ভালো কিছু করলে নিজের আত্মবিশ্বাস অনেক ভালো হয়। এই স্পেল অবশ্য কাজ দেবে। শেখার অনেক কিছুই আছে, শিখছি যেন অ্যাকুরেসিটা বেশি হয়। উইকেট কী চায়, সুইংটা যেন ভালো থাকে। যেন ম্যাচে সেসব করে দেখাতে পারি।’

    শফিউল তার কিছুটা করে দেখাতে পারলেও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মুস্তাফিজের সঙ্গী নিয়ে ভাবতে হবে না বাংলাদেশকে।