• এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ
  • " />

     

    অবিশ্বাস্য ফেরায় ভারতকে হারাল বাংলাদেশের যুবারা

    অবিশ্বাস্য ফেরায় ভারতকে হারাল বাংলাদেশের যুবারা    

    ৫৪ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচের স্কোরলাইন, ভারত ৩-০ বাংলাদেশ।

    আরেকটি পরাজয়ের পান্ডুলিপি লেখার কাজটা তখন শুরু করে দেওয়াই যেত। জাতীয় ফুটবলে সাফল্য এখন সোনার হরিণ, বয়সভিত্তিক দলগুলোর কাছ থেকেই যা একটু স্বস্তির খবর আসে। সাফ অনূর্ধ্ব ১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে তেমন কিছু অন্তত আসছে না, ৫৪ মিনিটের পর নিঃসংশয় হয়ে গিয়েছিলেন বোধ হয় অনেকেই।

     

    এরপরেই ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল সবকিছু। ৫৪ মিনিটের পর যারা ম্যাচের খবর রাখা বাদ দিয়েছিলেন, তারা ম্যাচ শেষে চমকে যেতে পারেন ভূত দেখার মতো। বাংলাদেশ ৪-৩ ভারত! তিন গোলে পিছিয়ে থেকে চার গোলে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। জাতীয় দলে দূরে থাক, বয়সভিত্তিক দলেও তো এমন প্রত্যাবর্তনের কাহিনী বাংলাদেশের ফুটবলে লেখা হয়েছে কি না সন্দেহ।

    অথচ দেশ ছাড়ার আগেই বাংলাদেশ কোচ মাহবুব হোসেন জোর গলায় বলতে পারেননি, বাংলাদেশ ভালো কিছু করবেই। জাতীয় দলে যেমনই হোক, এমনিতে বয়সভিত্তিক দলে এখনো ভারতের সঙ্গে ব্যবধান অতটা প্রকট নয়। এই ভারতের কাছে আগের বারের সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে টাইব্রেকারে হেরে বাদ পড়েছিল বাংলাদেশ। ভারত এরপর অনেক এগিয়ে গেছে, আর বাংলাদেশ নেমে গেছে আরও তলানিতে। ৫৪ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইনে তারই প্রতিফলন।

    এরপরেই একটা কর্নার পেল বাংলাদেশ, তাতে উড়ে গিয়ে হেড করে গোল করলেন জাফর ইকবাল। পাঁচ মিনিট পর আবার গোল পেল বাংলাদেশ। ভারতের একজন খেলোয়াড় ব্যাকপাস দেওয়ায় গোলরক্ষক সেটা হাত দিয়ে রিসিভ করলে বক্সের ভেতর ফ্রিকিক পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে গোল করে ব্যবধান কমান অধিনায়ক রহমত মিয়া।
     

    বাংলাদেশ যেন এরপরেই জেগে ওঠে দারুণভাবে। আক্রমণের ধারাবাহিকতায় এসে যায় আরেকটি গোল। ৭৪ মিনিটে ভারতের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এবার বক্সে বল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ক্রস থেকে মোহাম্মদ সুফিল হেড করে গোল করে সমতা ফেরান।

    ৩-৩ হওয়ার পর একটু জেগে ওঠে ভারত, দুই দলই এরপর জয়সূচক গোলের জন্য চেষ্টা করতে থাকে। ৮৫ মিনিটে ভারত সেটি পেয়েই গিয়েছিল, একটুর জন্য শট চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে আবারও কর্নার পায় বাংলাদেশ। এবার আবার হেড করে গোল করেন জাফর ইকবাল, আবারও সেট পিসেই করলেন বাজিমাত। গোল করেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন, সেই কান্নার রেশ মিলিয়ে না যেতেই বাজল শেষ বাঁশি।

    থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামের গুটিকয়েক বাংলাদেশ ভক্ত তখন চেঁচিয়ে যাচ্ছে সমানে। তাঁদের সামনেই ভিক্টরি-ল্যাপ দিল বাংলাদেশের যুবারা। যে জয়ধ্বনি দেশের অনুরণিত হলো ৬৬৫ কিলোমিটার দূরের ঢাকাতেও, দেশের ফুটবলের মরা গাঙে ক্ষণিকের জন্য হলেও এলো জোয়ার। এমন প্রত্যাবর্তন যে অনেক অনেক দিন দেখেনি বাংলাদেশের ফুটবল!