• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    যেভাবে 'বিপ্লব' হলো বেলজিয়ামে

    যেভাবে 'বিপ্লব' হলো বেলজিয়ামে    

    “বিলিভ দ্যা হাইপ”, ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দেওয়ার পর বেলজিয়ামের জার্সি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাসের এই ছবিটা নিশ্চয় চোখে পড়েছে? বিশ্বকাপের আগে যারা বেলজিয়ামের এই দলটা সম্পর্কে খোঁজ রাখেননি, তারাও শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করেছে। এই বেলজিয়াম অসাধারণ। গোলরক্ষকের জায়গা থেকে স্ট্রাইকার পর্যন্ত তারকায় ঠাসা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, স্পেন- বিশ্ব  ফুটবলের নামকরা সব দলের সঙ্গে এক কাতারে ফেলে দেওয়া যায় তাদের। আর তাদের সামর্থ্যটাও যে কোনো অংশে কম না সেটার প্রমাণ তো মিলেছে এই বিশ্বকাপে।

    ইউরোপের নামকরা দেশগুলোর সব নামকরা লিগ আছে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ঐতিহ্য তো আরও পুরনো। সেখানে বেলজিয়ান লিগের কথা ধোপেই টেকে না। বেলজিয়ান ফুটবল নিয়ে তাই উন্মাদনার কোনো কারণও নেই। কিন্তু বড় সব দলের সঙ্গে হুট করেই বেলজিয়ামের পাল্লা দেওয়ার রহস্য কি? সোনালি প্রজন্ম? সেটার সন্ধান কি হুট করেই কোনো এক স্বর্ণালী বিকেলে মিলে গেছে? এমনটাও কি হয়?

    বেলজিয়ামের এই সাফল্যের গাঁথুনি অনেকদিনের। এক যুগের। সূচনা ছিল একটা বিপর্যয় দিয়ে। সব সাফল্যে পেছনের গল্পটা যেমন পরিশ্রমের, সেরকমই। কিন্তু পার্থক্য হলো একটা দলের নয়, কয়েকজনের খেলোয়াড়ের নয়। পরিশ্রমটা ছিল গোটা জাতির। স্বপ্নটা দেখেছিলেন একজন, সেটা বাস্তবায়ন করেছেন সবাই মিলে।

    ১৯৯০ বিশ্বকাপ, ইতালি। মিকেল স্যাবলন তখন বেলজিয়ামের সহকারী কোচ। তখনও একটা সোনালী প্রজন্মই ছিল বেলজিয়ামের। আগের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়ে যে দল নামটার প্রতি সুবিচার করেছিল। কিন্তু ইতালি বিশ্বকাপ আসতে আসতে সেই সূর্য অস্ত যাওয়ার পথে। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে বেলজিয়ামের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। স্যাবলন টাইব্রেকারের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। একটা কাগজে খেলোয়াড়দের নামও টুকে ফেললেন। কিন্তু তার আগেই হেরে গেল বেলজিয়াম। স্যাবলনের কাছে থাকা ওই কাগজটা আর কাজেই লাগল না। পরের বিশ্বকাপেও যাত্রা থামল দ্বিতীয় রাউন্ডে। সোনালী প্রজন্মের শেষ। এরপর পতন। ফ্রান্স বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বই পার হতে পারল না বেলজিয়াম। ২০০২ এ বাছাইপর্ব পেরিয়ে আবারও বিশ্বকাপে, আবারও সেই একই ফল। এরপর টানা এক যুগ বেলজিয়াম হারিয়ে গেল। সেটাই হয়ে গেল জরুরী খবর।

    বেলজিয়ামের ওই হারিয়ে যাওয়াটা আগেই থেকেই আঁচ করেছিলেন অনেকে। ২০০০ সালে ইউরোর সহ-আয়োজক ছিল তারা। তবুও গ্রুপপর্বেই বিদায়। ওই বিদায়টা নাড়িয়েই দিয়ে গেল বেলজিয়ামের ফুটবলকে। ওই ফলটা অবশ্য অনেকের কাছেই অনুমিত ছিল। তাদের দলে ছিলেন স্যাবলনও। কোচিং ছেড়ে তিনি ততোদিনে হয়ে গেছেন বেলজিয়াম ফুটবলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। দেশের মানুষ দলকে দেখতে চায় বিশ্ব দরবারে, ইউরোর মতো আসরে- স্যাবলন আর সেটা চাননি। তিনি হারিয়েই যেতে চাইলেন। নিজেদের গুটিয়ে নিতে চাইলেন।

    এবার তার কাগজের পরিকল্পনা অন্ততপক্ষে জাতির সামনে দেখাতে পারলেন। তাতে অবশ্য রাতারাতি তিনি বেলজিয়ানদের ভরসার পাত্রে পরিণত হতে পারলেন না। কিন্তু স্যাবলনের একটা গুণ ছিল, যেটা করতে চান, সেটা যে কোনোভাবে করিয়ে নিতে পারেন। দেশের হর্তা-কর্তাদের কাছ থেকে তাই অনুমতিটা মিলল।

    ফুটবলার নয়, কোচও নয়, অবকাঠামোও নয়- স্যাবলনের পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু শিশুরা। তাদের জন্য থাকবে কোচ, তাদের জন্য হবে অবকাঠামো। তারাই হবেন ফুটবলার। বেলজিয়াম এক্ষেত্রে অনুসরণ করলো নেদারল্যান্ডসের ব্লু প্রিন্ট। আর ইউনিভার্সিটি অফ ব্রাসেলসের এক দল গবেষককে দিলেন নিরীক্ষার সুযোগ। তাদের ফল হাতে পৌঁছাতেই গলদটা ধরা পড়ল স্যাবলনের চোখে। বয়সভিত্তিক দলের শিশুরা প্রতি ম্যাচে গড়ে ৫টা পাসও দেয় না! কেউ কেউ কোনো ম্যাচে বলের নাগালই পায় না। বয়সভিত্তিক মানে সেখানে ৩ থেকে শুরু করে ১৪ পর্যন্ত সব শিশু-কিশোরের রেকর্ডই আছে। অথচ এখান থেকেই নাকি উঠে আসবে ফুটবলার!

    বেলজিয়াম ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে তাই বিপ্লবী একটা সিদ্ধান্তই নিতে হলো। সেটা দেখে ভ্রু কুঁচকানো লোকের সংখ্যাই ছিল বেশি। অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলের আগে দেশের কোথাও ১১ জনের ফুটবল খেলা যাবে না। এর নিচের দলগুলোর জন্য ১ বনাম ১ থেকে শুরু করে ৮ বনাম ৮ সবরকম পদ্ধতিই নির্ধারণ করে দেওয়া হলো।

    যুক্তি ছিল, একটি শিশু ফুটবলকে তখনই ভালোবাসবে যখন যে বল পায়ে দৌড়াবে। সেই সুযোগ করে দেওয়াটাই ছিল লক্ষ্য। গবেষণাপত্রেও এই পরামর্শ ছিল। ৬, ৮ জনের ফুটবলের শিশুদের অনেক বেশি আগ্রহের কথা গবেষকরাই জানিয়েছিলেন। ৩/৪ বছরের শিশুদের জন্য তাই ১ বনাম ১ খেলার জন্য অনেকগুলো পিচ বানিয়ে নেওয়া হলো পুরো দেশজুড়ে। খেলা চলবে সাড়ে তিন মিনিট। এক ম্যাচ শেষে ওই দুইজনকেই নিয়ে যাওয়া হবে আলাদা পিচে। একইভাবে চলা অন্য খেলাগুলোর জয়ীর সঙ্গে খেলবে জয়ী। আর হেরে যাওয়া দুই শিশু আরেক ম্যাচে তার মতোই আরেকজনের সঙ্গে খেলবে। অর্থাৎ দুই, তিন ম্যাচ শেষে একই ধরনের শিশুরা একসঙ্গেই খেলা শুরু করবে। তাতে কিছুটা পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য আলাদা যত্নের ব্যবস্থা করা যাবে।

    হাতেখড়ির পর ৬ বনাম ৬ এরপর ৮ বনাম ৮। শিশুদের যত ম্যাচ খেলানো যায় ততোই ভালো। অনুশীলনে তারা যতই একে অপরকে পাস দিতে শিখুক, ম্যাচের পরিস্থিতি তো আলাদা। নিজের জন্য জায়গা তৈরি করা, সিদ্ধান্ত নেওয়া এসব কিছু যাতে প্রাকৃতিকভাবেই একটা শিশুর মধ্যে গড়ে ওঠে সেই সুযোগ করে দেওয়া। সবগুলো ধাপ পেরিয়ে অনূর্ধ্ব-১৪ দলে ভিড়তে পারাদের জন্যও বেঁধে দেওয়া হলো নিয়ম। এক ফর্মেশনে খেলবে সবাই। ৪-৩-৩। এতোদিন বেলজিয়ামের খেলার ধরন কিছুটা রক্ষণাত্মক। বেলজিয়ানরাও একঘেয়ে ফুটবলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। এতোদিন প্রতিপক্ষের গোল ঠেকানোর ছক কষেছে বেলজিয়ানরা, স্যাবলন এবার গোল দিতে চাইলেন।

    স্যাবলনের এসব পরিকল্পনা যে বেলজিয়ামের ক্লাবগুলো হাসিমুখেই মেনে নিয়েছিল তাও নয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তিনি বেলজিয়ামের প্রায় সবগুলো ক্লাবকেই রাজি করিয়ে নিয়েছিলেন নিজের কথায়। অনেকের সঙ্গে সমঝোতাও করতে হয়েছে তাকে, যেমন অ্যান্ডারলেখট তাদের যুব একাডেমিতে ৪-৩-৩ এর বদলে ৩-৪-৩ ফর্মেশনে খেলাতে চাইলো। স্যাবলনকে ওইটুকু ছাড় দিতেই হয়েছিল। কিন্তু একটা ব্যাপারে তাকে টলানো যায়নি একটুও। বয়সভিত্তিক দলে কোনো ক্লাবেই র‍্যাংকিং পদ্ধতি থাকবে না। একেবারে কড়া নিষেধাজ্ঞা। স্যাবলনকে শুরু কয় বছর শ’খানেক প্রেজেন্টেশন দিয়ে বেড়াতে হয়েছে, নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে। সোজা বাংলায় নিজের আইডিয়া বিক্রি করেছেন তিনি।

    একবার এমন এক প্রেজেন্টেশনের দিতে ঢুকবেন। সেই ক্লাবের গেটের বাইরে দেখেন বয়সভিত্তিক দলের র‍্যাংকিং ঝোলানো। ভেতরে কয়েক শ মানুষ অপেক্ষা করছে তার জন্য। স্যাবলন সেখানে ঢুকবেনই না! তার কথা মতো প্রথমে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশবোর্ড সরালো, তারপরই প্রেজেন্টেশন দিতে ঢুকলেন তিনি। স্যাবলন বরাবরই গবেষণাপত্রে বিশ্বাসী, সংখ্যায় বিশ্বাসী। বয়সভিত্তিক দলগুলোর ফল নির্ভর ফুটবল খেলার ধরন শিশুদের খেলায় বাজে প্রভাব ফেলছে- গবেষণার বিশেষ দ্রষ্টব্যে এই পয়েন্টটাও ছিল হাইলাইট করা। স্যাবলন তাই বয়সভিত্তিক ফুটবলে ফল দিয়ে যাচাই করার পদ্ধতিই উঠিয়ে দিলেন। র‍্যাংকিংও বাতিল সেই কারণে। কখনও প্রয়োগ করে, কখনও ছাড় দিয়ে- এভাবেই ক্লাবগুলোকেও যুক্ত করেছিলেন তার “গোল্ডেন প্রজেক্টে”।

    ফল নির্ভর ফুটবল খেলতে গিয়ে খেলোয়াড়দের নিজেদের উন্নতিটা বাধাগ্রস্থ হচ্ছিল বেলজিয়ামে। কোন ম্যাচে কে কতো গোল করল, বেলজিয়ামের অনূর্ধ্ব ১৭ দল বিশ্বকাপে সুযোগ পেল কি না, অনূর্ধ্ব ২০ দল গ্রুপপর্ব পার করলো কি না- এসব প্রশ্ন নিয়ে বেলজিয়ানদের মনে আগ্রহ থাকলেও, উলটো পথে হাঁটলো বেলজিয়ামের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। কোনো খেলোয়াড় একবার বয়সভিত্তিক দল পার করে ওপরের পর্যায়ে চলে গেলে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেও তাকে আর ফেরানো হলো না আগের দলে। কারণ তার এই দল থেকে যতটুকু পাওয়ার কথা ছিল, সেই যোগ্যতা সে অর্জন করে ফেলেছে। একটা ম্যাচ জিততে তাকে আর ফেরত আনার প্রক্রিয়াটা তাকে কেবল পিছনেই নিয়ে যাবে। সঙ্গে নতুন একজনের সুযোগ হারাবে।  

    এসবকিছুর বাস্তবায়নের জন্য স্যাবলন অর্থ যোগাড় করেছিলেন ২০০০ সালের ইউরো থেকে। আয়োজক দেশ হওয়ায় বড় অঙ্কের একটা টাকা পেয়েছিল বেলজিয়াম। সেটা যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করেছেন ‘স্বপ্নবিলাসী’ স্যাবলন। বেলজিয়ানদের কাছে স্যাবলনের এই সিদ্ধান্তগুলো বিলাসীতাই মনে হয়েছিল। ফুটবল দলীয় খেলা, অথচ এখানে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে একক নৈপুন্যের। বেলজিয়ানদের জাত গেল জাত গেল রবের শুরুটাও তখন থেকে। তারওপর যে বিশাল প্রক্রিয়ার দিকে পা বাড়িয়েছেন স্যাবলন তা তো দুই বছরেই আলোর মুখ দেখবে না। তিনি তো হাত দিয়েছেন মূলে। বেলজিয়ান ফুটবলারেরা মাঠের খেলায় কি করল সেটা দিয়েও তো বিচার হবে তার। সেই বিচারে মুন্ডুপাতই হলো বেলজিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের।

    বেলজিয়ামের সরকার সহায়তার হাত বাড়িয়ে রেখেছিল আগে থেকেই। দেশের ৮ টি স্কুলকে বিশেষায়িত করে সেখানে সবার খেলার ব্যবস্থা করা হলো। সপ্তাহে ৪ দিন, সকালে। সেখানে স্কুলের শিক্ষকেরাই ফুটবল শিক্ষা দিলেন। এই শিক্ষকেরা অবশ্য পাঠ্যবই ধরে পড়াতেন না। তাদের নিয়োগই দেওয়া হয়েছিল এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে। তার আগে তাদের জন্য বিনামূল্যে কোচিং শিখুন নামের ক্যাম্পেইনও চলেছে বেলজিয়ামের শহরে-শহরে।

    সকালের পর বিকেলে আবার নিজের ক্লাবের হয়ে অনুশীলনের সুযোগ পেত স্কুলপড়ুয়ারা। দুইবেলা কোচিং পেয়ে তাতে রাতারাতি উন্নতিই ঘটলো বয়সভিত্তিক দলগুলোয়। তাতে ক্লাবগুলোও উপকৃত হলো। অবকাঠামোর দিকে নজর দেওয়াটা তাই ছিল সময়ের ব্যাপার। অ্যান্ডারলেখট স্ট্যান্ডার্ড লিয়েজ, গেনক – বেলজিয়ামের প্রায় সবগুলো বড় ক্লাবই নিজেদের অবকাঠামো তৈরি করলো। সেখান থেকে লাভ করতেও বেশি সময় লাগলো না। স্ট্যান্ডার্ড লিয়েজের কথাই ধরা যাক, ১৮ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে একাডেমির জন্য নতুন অবকাঠামো তৈরি করেছিল তারা। ততোদিনে সুফল দেখতে শুরু করেছে বেলজিয়াম ফুটবল। এক মারুয়ন ফেলাইনিকে বিক্রি করেই স্ট্যান্ডার্ড লিয়েজ পেল ১৯ মিলিয়ন ইউরো! এমন ভুরি ভুরি উদাহরণ দেখানো যাবে আরও। এখনকার বেলজিয়ামের দলের সদসা যারা, তাদের সবাই বেরিয়ে এসেছেন এই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই। কয়েক বছর পর বেলজিয়াম র‍্যাংকিং তরতর করে উঠতেই শুরু করলো কেবল। স্যাবলনের অবশ্য এই লক্ষ্যই ছিল না! কিন্তু ঠিকপথে এগুচ্ছিলেন , সেই পথই লক্ষ্যে নিয়ে গেছে।  সবকিছুর জন্য তাই একা স্যাবলনের কৃতিত্ব দেওয়াটাও অপরাধই হয়ে যায়, ক্লাবগুলোর অবদান তো কোনো অংশেই কম নয়।

    বছর দশেক আগে প্রিমিয়ার লিগে বেলজিয়ান খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়াই কঠিন ব্যাপার ছিল। হাতে গোণা দুই-একজন সুযোগ পেতেন। এখন প্রিমিয়ার লিগে ব্রিটিশ খেলোয়াড়দের পর সবচেয়ে বেশি বেলজিয়ানদের সংখ্যা। লা লিগাতেও নিয়মিত তারা। প্রতি বছর সংখ্যাটা কেবল বাড়ছেই। বেলজিয়ামের ফুটবলে ওই পদ্ধতিটা এখনও অনুসরণ করা হচ্ছে প্রতিদিন। তাই আগের বিশ্বকাপ আর ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়লেও মেধা সঙ্কটে পড়তে হয়নি বেলজিয়ামকে। বেলজিয়ামের বিশ্বকাপ দলে প্রায় প্রতিটি জায়গায় রয়েছে দুইজন করে বিশ্বমানের খেলোয়াড়। অন্তত আরও ৫ জন খেলোয়াড় দলে সুযোগই পাননি, যাদের এই বিশ্বকাপের বেশিরভাগ দলই হয়ত নিজেদের দলে নিতে চাইত। এক যুগের পরিশ্রম তো আর হুট করেই হারিয়ে যায় না। আর সেই পরিশ্রম তো এখনও চলছে বেলজিয়ামে। “সোনালী প্রজন্ম” তাই আসলে একটা মিথ। যে উন্মাদনা নিয়ে বেলজিয়াম এসেছে, সেটা হুট করেই মিলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ইউ বেটার, “বিলিভ দ্য হাইপ”।