• ক্রিকেট

বিদায় ‘ক্যাপ্টেন কুল’

পোস্টটি ৭৯২৩ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের শেষ ওভার। উত্তেজনার পারদ সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছে গিয়েছে। ভারত-পাকিস্তান দুই পক্ষের ক্রিকেটার, কর্মকর্তাদের মাঝে দুশ্চিন্তার ভাবটা স্পষ্ট। এতকিছুর মাঝেও একজন মানুষ ‘বরফশীতল’ মুখভঙ্গি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। রীতিমত ‘জুয়া’ খেলে শেষ ওভার অপ্রত্যাশিতভাবে জোগিন্দর শর্মার হাতে বল তুলে দিলেন। মিসবাহর সেই অদ্ভুত শট শ্রীশান্তের হাতে ধরা পড়া মাত্রই উল্লাসে ফেটে পড়লো পুরো টিম ইন্ডিয়া। লম্বা চুলের ওই ‘বরফশীতল’ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির মুখে বিশ্বজয়ের হাসি। তিনি মহেন্দ্র সিং ধোনি।

 

সেদিন শেষ ওভারে ধোনির সাহসী সিদ্ধান্তের কারণেই দীর্ঘ ২৪ বছর পর আইসিসির কোনো ইভেন্টের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ভারত। অধিনায়ক হিসেবে স্বপ্নযাত্রার শুরু তখনই। জাতীয় দল কিংবা আইপিএল, যেখানেই হাত দিয়েছেন সোনা ফলেছে।

বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে ধোনি

২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডেই বাদ পড়ার পর বাড়িতে ঢিল পড়েছে।  ঢিলের আঘাতটা শুধু বাড়ির কাচে না, মনেও লেগেছিল। অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া একটা দলকে ধীরে ধীরে পরের বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করিয়েছেন। ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটাকে সত্যি করার পথে নিতে হয়েছে কঠিন কিছু সিদ্ধান্তও। সিনিয়র কিছু ক্রিকেটারকে দল থেকে বাদ দেওয়ায় ‘ক্ষমতালোভী’, ‘ডিকটেটর’ কত উপাধিই না জুড়ে দিয়েছিল মানুষ।

 

কিন্তু ধোনি জানতেন, একদিন এই মানুষই তাঁর জয়জয়কার করবে। হয়েছেও তাই। ২৮ বছর পর ভারতকে এনে দিয়েছেন বিশ্বকাপ শিরোপা। ওয়াংখেড়ের ফাইনালে ছয় মেরে ক্যামেরাম্যানদের জন্য পোজ দিয়ে থাকার ওই মুহূর্তটা ভারতবাসী চিরদিন মনে রাখবে।

চেন্নাইয়ের হয়ে আইপিএল জয়

মনে রাখার মতো কাজ প্রতিনিয়তই করেছেন। জাতীয় দলের পাশাপাশি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়েও নিজের চৌকশ নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন। জিতেছেন আইপিএল শিরোপা, চ্যাম্পিয়নস লীগ। রূপকথার মতো কেটেছে কয়েকটি বছর।

সব রূপকথার গল্পেরই শেষ আছে। ধোনির স্বপ্নযাত্রারও শেষ হয়েছে। দুই বছর আগে টেস্ট ছেড়েছেন। কিছুদিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্বকেও বিদায় জানালেন। আজ শেষবারের মতো অধিনায়ক হিসেবে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন। বিনামূল্যে প্রবেশের দিন প্রায় ২০ হাজার দর্শক পুরো সময়টাই ‘ধোনি’ ‘ধোনি’ চিৎকারে মাতিয়ে রেখেছিল।

আজকে টস করার সময় কি চোখ দুটো খানিকটা ভিজে উঠেছিল? ফ্ল্যাশব্যাকের মতো ভেসে উঠছিল ২০০৭ সালের সেই মুহূর্তটা? ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালের সেই ছয়টা?

বিদায় ‘ক্যাপ্টেন কুল’......