তাসমানপাড়ে আবার
পোস্টটি ৫০৭৪ বার পঠিত হয়েছে
নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ আগেও গেছে। ম্যাচ জয়ের কিংবা ড্রয়ের ন্যূনতম কোন স্মৃতি সেখানে নেই। সাকল্যে খুশি হবার মত যেটি প্রথমে মাথায় আসে তা হল সাকিব আল হাসানের ডাবল সেঞ্চুরি, মুশির নান্দনিক ইনিংস আর গতবারের সফরে কিছু ম্যাচে 'জয়ের সুযোগ' তৈরি করতে পারা। গতবারের আগের সফরগুলো যতভাবে সম্ভব ততভাবেই ভুলে যাওয়া ভাল। বাতাসের নাচনের সাথে সাপুড়ে ম্যাককালাম, ভিট্টরির সেই বীণে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবটুকু লজ্জাই যেন খোলশমুক্ত হয়েছিল। তার তুলনায় গতবারের সফরটি থেকে বরং আনন্দের কিছু রসদ মেলে!
নিউজিল্যান্ড সফর নিয়ে এত কথা বলার কারণ হল আবারও আমরা তাসমান পাড়ে যাচ্ছি। দিনক্ষণের হিসেবে সফরের প্রথম ম্যাচটি খেলতে আর ১ মাসও বাকি নেই। যদিও বিপিএল নিয়ে দল এবং দল সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ ব্যাস্ত হয়ে আছেন, কিন্তু তাই বলে তো আর সফর-ক্ষণ ধীরে চলবে না!
প্রকৃতিগতভাবেই নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বেশ 'স্বাস্থ্যবান'। বাইরের কোন দল খেলতে এলে সেই দলকে টিম-কিউইর বিপক্ষে যত না বেশি খেলতে হয়, তার থেকে ঢের বেশি যুঝতে হয় বাতাসের সাথে। উপমহাদেশের দলগুলোর জন্যে তা জীবন্ত বিভীষিকা। তা সেই বিভীষিকায় পা দেওয়ার আগে টিম বাংলাদেশের প্রস্তুতি কি?
উত্তর কিছুই না। লংগার ফর্ম্যাট দিয়ে শুরু করব। ওপেন করবেন তামিম, সাথে অনুমিত ভাবে সাদমান ইসলাম। তামিম সিনিওরমোস্ট ক্রিকেটার, যেকোন কন্ডিশানে তিনি দ্রুত মানিয়ে নেবেন এমনটা আশা রাখি। কিন্তু সাদমানের ক্ষেত্রে? সদ্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করা একজনের পক্ষে নিউজিল্যান্ড সফর শুরু করা মোটেও সহজ হবার কথা নয়। এছাড়া তিনি খেলার মধ্যেও নেই। ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ২০ ওভারের বিপিএল এ তিনি দলে সুযোগ পাচ্ছেন না। তো নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনি হাতিঘোড়া কিছু একটা কিভাবে করে ফেলবেন মাথায় আসছে না। অন্তত উর্ধ্বতন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কেউ এ বিষয়ে ভেবেছেন বলে মনে হচ্ছে না।
সফর যেহেতু শুরু হবে ওয়ানডে দিয়ে, সেহেতু টেস্ট ম্যাচের আগে দল মানিয়ে নেবে আশা রাখছি। শুধুই টেস্টে খেলবেন সাদমান, মুমিনুল রা গ্রানাইটের পিচে প্রাকটিসের সুযোগ পাবেন আশা করছি। অন্য যারা সব ফর্ম্যাটে খেলবেন, টেস্টের আগে কন্ডিশনের সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নেবেন তাও আশা রাখছি।
কিন্তু গোল বাঁধবে ওয়ানডে নিয়ে। আমরা ৫০ ওভারের এই ফরম্যাটটা সবথেকে ভাল খেলি। যেকোন ফর্ম্যাটের তুলনায় এই ফরম্যাটে সমর্থকদের চাহিদা, প্রত্যাশা, ভাবনা থাকে অনেক উঁচুতে। কিন্তু নিরাশার খবর, এবার ওয়ানডের জন্যে বাংলাদেশ পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগ কিংবা সময় কোনটিই পুরোপুরি পাচ্ছে না। ৮ ই ফেব্রুয়ারি বিপিএল ফাইনাল খেলে ১৩ ই ফেব্রুয়ারি নেমে পড়তে হবে নেপিয়ারের বাতাসের বিপক্ষে যুঝতে, ব্লাকক্যাপদের বিপক্ষে তারপরে!
প্রস্তুতির আগে দলের খবর জেনে ফেলাটা বুদ্ধিমানের কাজ। আমরা যেহেতু বোকা নই, তাই বুদ্ধিমানের কাজটাই আগে করে ফেলাটা ভাল দেখাবে। বিপিএল এর মাঝেই ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণা হয়েছে। জন্ম দিয়েছে কিছু সমালোচনাও। সেসব নিয়েই 'ছোট মুখে কিছু বড় কথা' শোনাব বলে মনস্থির করেছি।
দল ঘোষণার পর সব থেকে বড় বিতর্কটা জন্ম দিচ্ছে সাব্বির রহমানকে ঘিরে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হবার আগেই সাব্বিরকে ফেরানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে। সত্যি বলতে, নিষেধাজ্ঞা কমানো কিংবা বাড়ানো বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটির বিষয়। নির্বাচক কিংবা ক্যাপ্টেন কারোরই এ বিষয়ে কিছু করার অথবা বলার নেই। হঠাৎ কেন নিষেধাজ্ঞা কমানো হল সেরকম কোন বিবৃতিও ডিসিপ্লিনারি কমিটি থেকে অফিশিয়ালি দেওয়া হয়নি। আলোচনাকে অতিরঞ্জিত না করতে আমরা নিষেধাজ্ঞা কমানোকে 'ধ্রুব সত্য ' ধরে নিয়ে এগোচ্ছি।
প্রধান নির্বাচক বলেছেন সাব্বিরকে নেওয়া হয়েছে ক্যাপ্টেনের চাওয়াতে। ক্যাপ্টেন বলেছেন তিনি তার দাবি আর ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যা দিয়েছেন মাত্র। সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচক। দল গোছানোর ব্যাবস্থাতেও মূলত এমনই হবার কথা। অবশ্যই অধিনায়ক কিছু নির্দিষ্ট চাহিদার কথা বলবেন, নির্বাচক শুধু তা বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তাহলে পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে ভুল কোথায়? আমার মনে হয়, পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে একমাত্র যে জায়গাটাতে ভুল রয়েছে সেটি হল চিফ সিলেক্টরের মিডিয়ার সামনে বেফাঁস কথা বলে ফেলাটা। অধিনায়ক, কোচ প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন চাওয়া পাওয়া থাকবে, কিন্তু প্রক্রিয়ার অন্তস্থ বিষয়গুলো মিডিয়ার সামনে বেফাঁস বলে ফেলাটা চিফ সিলেক্টরের পরিণতিবোধের দিকেই মূলত আঙুল তোলে। দল নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াটির কতৃত্ব এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা যেহেতু একমাত্র তাঁরই তার মানে এটি বলার অপেক্ষা রাখছে না যে পুরো প্রক্রিয়াটির মুখপাত্রও তিনিই। সুতরাং, মুখপাত্র হয়ে একে তাকে জড়িয়ে ফেলাটা অবশ্যই তার জন্যে শোভন নয় এটা প্রধান নির্বাচককে বুঝতে হবে। অধিনায়ক যে যুক্তিতে সাব্বিরকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেই যুক্তি মিডিয়াতে তাঁরই তো প্রকাশ করার কথা ছিল। অন্তত একমত না হলে তো তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে অধিনায়কের সাথে ঐকমত্যে পৌছুতেন না।
এই যে বিতর্কিত সাব্বিরকে ফেরানো নিয়ে এত কান্ড ঘটে গেল? এই ব্যাপারটি কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটাও ভেবে ফেলা যাক। মূলত সাব্বিরকে নেওয়া হয়েছে ৭ নম্বরে খেলানোর জন্যে, দ্রুত কিছু রান তোলার জন্যে, সেটিও ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে। এই ব্যাপারটি বুঝতে গেলে ২ টি অনুষঙ্গ মাথায় রাখা জরুরী, এক. ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন আর দুই. সাব্বিরের বিকল্প।
প্রথমটি ছিল ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন। সন্দেহাতীতভাবে কন্ডিশন হবে পেস বোলিং ফ্রেন্ডলি। বল ব্যাটে আসবে দ্রুত। অবশ্যই 'বাণিজ্যিক' কারণে পিচে রান করার মত রসদ থাকবে কিন্তু সেই রসদকে ব্যাবহার করার জন্যে ব্যাটসম্যানকে যথেষ্ট সাহসী, যথেষ্ট আগ্রাসী হতে হবে।
দ্বিতীয় যুক্তিতে আসি। ৭ নং এ কে কে খেলতে পারতেন? মোসাদ্দেক সৈকত, আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিথুন, সাব্বির রহমান। ৭ নং এ খেলানোর জন্যে এ মুহুর্তে পরীক্ষিত খেলোয়াড় আছে এই ৪ জন।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এর আদর্শ জায়গা ৭ নং নয়। ৭ নং এ লাগবে পাওয়ার হিটিং এবিলিটি, পেস বোলিং এর বিপক্ষে আগ্রাসী হবার সক্ষমতা। মূলত একজন 'ইনিংস ডেভেলপার' ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক সৈকত সে কাজটি কখনই পারবেন না। এছাড়া তিনি ভাল ছন্দেও নেই। তাই ৭ নং এ সৈকত যথার্থ হবেন না একথা বুঝতে বাকি রইল না।
আরিফুল হক গত বিপিএল দিয়ে লাইমলাইটে এসেছিলেন। গত বিপিএল এর কিছু ম্যাচে বড় শট খেলার সামর্থ্য, ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ ফিনিশ করার সক্ষমতা আর সাব্বির রহমানের বিতর্ক এই ৩ এ মিলে আরিফুল হক জাতীয় দলের দরজা খুলতে পেরেছিলেন। খুলতে যদিও বা পেরেছেন, করতে তিনি পারেননি কিছুই। দলে যে কয়বার তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন, ম্যাচ ফিনিশ করতে পারেননি, বড় শটস খেলার সামর্থ্যও দেখাতে পারেননি। জাতীয় দলের সুযোগ বিনষ্ট হওয়াতে তার সামনে সুযোগ ছিল বিপিএল এ পুনরায় নিজেকে ফিরে পাওয়া। সেটি তো তিনি পান নি, উল্টো নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। এমন একজনকে অন্তত জাতীয় দলের ৭ নং জায়গাটি দেওয়া যায় না।
মোহাম্মদ মিথুন স্পিনটা বেশ ভালই খেলেন। কিন্তু বাতাসের সাথে পেস বোলিং এর সুইং তিনি সামলাতে পারবেন কিনা সে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে গত বছরের জিম্বাবুয়ের -উইন্ডিজের সাথে টেস্ট সিরিজ। যা হোক এরপরও তিনি দলে আছেন, ৭ নং এ যদি তিনিই নামেন তবুও দলে আরেকটি বিকল্পও দরকার হয়।
এরপরও একটি প্রশ্ন বেশ জোরেশোরেই উঠে আসে। এই পজিশনে তো সাব্বিরও ব্যার্থ। ব্যার্থদের বাদ দিয়ে আমরা আরেকজন 'পরীক্ষিত ব্যার্থ' নিচ্ছি কিনা সেটিও ভেবে দেখবার মত বিষয়। এখানে তখন মূল কথা যেটি আসে সেটি হল, যখন দৃশ্যমানন ফলাফলে অন্ধকার দেখা যায় তখন শুধুমাত্রই সক্ষমতার ওপর নির্ভর করা ছাড়া দ্বিতীয় কোন উপায় থাকে না।
এরপরও, দাঁড়ি বসানোর আগে যেটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে সেটি হল, মাশরাফি বলেছেন তিনি সাব্বিরকে চাইছেন।শত রূপকথার জন্ম দিয়েছেন যেই অধিনায়ক, যে নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পালাবদল ঘটেছে, তাঁর সিদ্ধান্তে আমাদের আস্থা এবং শ্রদ্ধা দুটোই রাখতে হবে।
এরপরের সমালোচনাটি সৌম্য সরকারের অন্তর্ভুক্তি। মূলত চলমান বিপিএল এ ব্যাট হাতে ব্যার্থতা এ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রথমত সৌম্যর দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমালোচনার কোন সুযোগ নেই। কেননা ওয়ানডে আর টি-২০ দুটি ভিন্ন ফর্ম্যাটের খেলা। এক ফর্ম্যাটের ফর্ম দেখে আরেক ফর্ম্যাটের প্লেয়ার সিলেক্ট করাটা চূড়ান্ত বোকামির শামিল।
সৌম্যকে নেওয়া হয়েছে টপ অর্ডারে ৩ নং এ খেলানোর জন্যে। সৌম্য শেষ যে ৩ টি ৫০ ওভারের ম্যাচ টপ অর্ডারে খেলেছেন (লক্ষ্য করুন, টপ অর্ডারে) তার একটি হল জিম্বাবুয়ের সাথে সাভারের প্রাকটিস ম্যাচ। রান করেছিলেন ১১৪ বলে ১০২*। এরপর জিম্বাবুয়ের সাথে তৃতীয় ওয়ানডেতেই সৌম্যকে হুট করে ফেরানো হয়, খেলানো হয় টপ অর্ডারেই। রান করেছিলেন ৯২ বলে ১১৭। উইন্ডিজ সিরিজের ওয়ানডে দলেই ছিলেন সৌম্য। ওয়ানডে সিরিজ শুরু আগে প্রস্তুতি ম্যাচেও সৌম্য ৩ এ ব্যাট করেছিলেন। রান করেছিলেন ৮৩ বলে ১০৩*। এরপর উইন্ডিজের সাথেই প্রথম দুই ওয়ানডেতে লোয়ার অর্ডারে রান না পাওয়ার পর শেষ ওয়ানডেতে তাকে প্রমোট করা হয় ৩ নং এ। সিলেটের সেই ম্যাচটিতে তিনি করেছিলেন ৮১ বলে ৮০।
অর্থাৎ শেষ যে চারটি ৫০ ওভারের ম্যাচে আন্তর্জাতিক কোন দলের বিপক্ষে সৌম্য টপ অর্ডারে ব্যাট করেছেন সেখানে ৪ ম্যাচের ৩ টিতেই তিনি সেঞ্চুরি করেছেন, একটা ম্যাচে করেছেন ৮০। এভারেজ ছিল ২০১(!) এবং স্ট্রাইক রেট ১০৮.৬৪।
স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, যখনই তিনি ওয়ানডে ফরম্যাটে টপ অর্ডারে ব্যাট হাতে নেমেছেন, ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। এছাড়াও পেস বোলিং টা সৌম্য বেশ ভালই খেলেন, যে ধরণের পিচে তিনি ব্যাট করতে ভালবাসেন ঠিক সে ধরণের পিচই তিনি ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডে পাবেন।
এরপরও সৌম্যর দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাই কি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়ল না?
ইমরুল কায়েসের বাদ পড়া নিয়েও জল ঘোলা হচ্ছে বেশ। একটা দল যখন নির্বাচন করা হয়, তখন নানা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তা করা হয়। আর এই প্রক্রিয়ার মধ্যে, কম্বিনেশন, কন্ডিশন নানা অনুষঙ্গে কেউ কেউ বাদ পড়েন, কেউবা ফিরে আসেন। ইমরুল কায়েস কে খুব সম্ভবত ছুড়ে ফেলা হয়নি। আপাতত, নিউজিল্যান্ডে ইমরুল কায়েসের কোন প্রয়োজন নেই। তামিম লিটন সৌম্যর পর ইমরুল কে নেওয়ার প্রয়োজন খুব সম্ভবত টিম ম্যানেজমেন্ট অনুভব করেনি। যদিও গত সিরিজেও ইমরুল খারাপ করেননি, নিউজিল্যান্ডেই বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবথেকে বেশি রান করেছিলেন। কিন্তু রান করাটাই শুধু মুখ্য নয়, গুরুত্ব পাবে এপ্রোচটাও। তামিম ইকবাল এখন ইনিংস গড়তে পছন্দ করেন, 'ধীরে চল' নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে শেষ অব্দি ব্যাট করে দলের রান ফোলাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।সুতরাং, তামিমের এই প্লেয়িং স্টাইলে নন স্ট্রাইকের ব্যাটসম্যানদের চালিয়ে খেলতে হবে। পাওয়ারপ্লে কে ব্যাবহার করতে হবে। সেটা সৌম্য-লিটনের চেয়ে অবশ্যই ইমরুল বেশি পারবেন না।
দলের সাথে রনি ঘুরে বেড়ান। একটা দুইটা ম্যাচ খেলেন। এতে নিজেকে প্রমাণ করা যায় না। তারপরও রনি বাদ গেলেন। আমার ধারণা, রনি বাদ গেছেন কন্ডিশন আর কম্বিনেশন চিন্তা করে। রনির ধাঁচের বোলার স্কোয়াডে ইতোমধ্যে মাশরাফি আর মুস্তাফিজ আছেন।এদিকে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে আমাদের দ্রুত গতির বোলার লাগবে। সে কারণে তাসকিনের জন্যে রনিকে জায়গা ছাড়তে হতই, এদিকে তাসকিনও আছেন উড়ন্ত ফর্মে।
এতসব সিদ্ধান্তের পরও ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে লম্বা চওড়া আশা করা যাচ্ছে না। কেননা, নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাবার আগে লম্বা প্রস্তুতির দরকার হয়। তার জন্যে লম্বা প্রক্রিয়ার অনুসরণ করতে হয়। অন্তত এক মাস আগে থেকে গ্রানাইটের পিচে প্রাকটিস করাটা প্রয়োজনীয় ছিল, কিছুদিন আগে গিয়ে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করাটা দরকারী ছিল, বোলিং মেশিনে নিখাদ সুইং এর প্রাকটিস জরুরী ছিল। অদৃষ্ট এই যে, এসব কিছু বিপিএল খেলার মধ্য দিয়ে সম্ভব নয়।তা এসব কিছু 'কর্তা' রা আর কবে বুঝেছেন?
- 0 মন্তব্য