• ক্রিকেট

স্বপ্ন দ্যাখে বাংলাদেশ!!

পোস্টটি ১৯৮৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

গোজ দ্যা হিরো, বোল্ড হিম, ফুল অ্যান্ড স্ট্রেইট, দ্যা বাংলাদেশী টাইগার্স হ্যাভ নকড দ্যা ইংলিশ লায়নস আউট অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড কাপ, ওয়ান অফ দ্যা গ্রেটেস্ট ডেইজ ইন বাংলাদেশ ক্রিকেট হিস্টোরি, ওয়ান অফ দ্যা লোয়েস্ট পয়েন্টস ইন ইংলিশ হিস্টোরি- মাইক্রোফোনের সামনে নাসের হুসেইনের কন্ঠে তখন বাজছে বাংলাদেশের বিশ্বজয়ের গল্প, কিন্তু তার আগেই রুবেলকান্ডে উন্মাতাল অ্যাডিলেইড থেকে ঢাকা, পুরো বাংলাদেশ তখন বুঁদ কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন সত্যি উল্লাসে! ২০১৫ বিশ্বকাপটায় বাংলাদেশ দেখিয়েছে তাঁরা কি করতে পারে, সেই বিশ্বকাপটা বদলে দিয়েছে পুরো দেশের ক্রিকেটের গতিপথটাকেই! অবশ্য বদলে যাওয়ার শুরুটা আজ থেকে বিশ বছর আগে থেকেই, সেই ইংল্যান্ডে, যেখানে আবারো বসছে বিশ্বজয়ের আসর, নিজেদের বিশ্বকাপের প্রথম আসরের স্মৃতিমাখা ব্রিটেনে আবারো বাংলাদেশের সামনে বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়ার সুযোগ, অভিজ্ঞতায় ঋব্ধ পঞ্চপান্ডবের সাথে সৌম্য-মুস্তাফিজদের মত তারুণ্যে ভরপুর বাংলাদেশ বিলেতে যাচ্ছে নিজেদের ইতিহাসের সেরা দলটাকে নিয়েই!

এই বিলেতেই বাংলাদেশের কত শত মধুর স্মৃতি! বছর দুয়েক আগেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-রিয়াদের অবিশ্বাস্য এক জুটিতে স্রেফ খাদের কিনারা থেকেই বার্মিংহামের সেমিফাইনালের মঞ্চে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই একই কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে ২০০৫ সালের ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াবধের কাহিনীতো আরো বেশি স্বপ্নময়!কার্ডিফ থেকে ব্রিস্টল, বিলেতে হাজারো মধুর স্মৃতি বিশ্বকাপ অভিযানে প্রেরনা যুগোবেই মাশরাফীর দলকে। ২০১০ সালের ইংলিশ গ্রীষ্মে তামিম ইকবাল নামের এক বঙ্গসন্তানের কল্যানে ইংলিশ মিডিয়া নতুন করে চিনেছিল বাংলাদেশকে, ফর্ম্যাটটা সেবার টেস্ট হলেও লর্ডস আর ম্যানচেস্টারে তামিমের ব্যাক টু ব্যাক দুই সেঞ্চুরির ইতিহাসটা রঙিন পোষাকে নামার আগে সাহস দিবে পুরো বাংলাদেশকে, গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও কি দুর্দান্তইনা ছিলেন তামিম! সেই গ্রীষ্মেই ব্রিস্টলে রীতিমতো অসম্ভবকে সম্ভব করেছিল মাশরাফীর বাংলাদেশ, বৃত্তপূরনের সেই জয়টা সাক্ষ্য দিবে সেই বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে ইংলিশবধ করতে পারলে, এখনকার দুরন্ত বাংলাদেশ কেন নয়! বিলেত মুলুকে বাংলার সবচেয়ে বড় বিজয়ের গল্পটা ঠিক ২০ বছর আগে, নর্দাম্পটনে সেই জয়ের রেশটা বিশ বছর পরেও কেটেছে কি! পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই জয়টা বদলে দিয়েছে দেশের ক্রিকেটের মানচিত্রকেই, এবার অপেক্ষা সেই ইংল্যান্ডেই, দেশের ক্রিকেটটাকে আরো কয়েকধাপ উপরে নিয়ে যাওয়ার।

নিজেদের খেলা পাঁচটা বিশ্বকাপের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এবারই হতে হচ্ছে বাংলাদেশকে, ১৯৯৯ বিশ্বকাপের রোমাঞ্চটা ছিল প্রথম কোন কিছু অর্জনের, সেখানে স্কটল্যান্ড আর পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়ে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে প্রাপ্তিটা ছুয়েছিল আকাশের সীমানা। ২০০৩ বিশ্বকাপে যাওয়ার আগেই মাঠ আর মাঠের বাইরের অস্থিরতায় নিমজ্জিত বাংলাদেশ, সেই বিশ্বকাপটা দেশের ক্রিকেটের অন্যতম কালো অধ্যায় হিসেবেই থাকবে ইতিহাসের পাতায়। ২০০৭ বিশ্বকাপটা দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই বিশ্বকাপ বাংলাদেশকে দিয়েছিল দুহাত ভরেই! প্রথম ম্যাচেই টেন্ডুলকার,দ্রাবিড়, ধোনীদের তারকায় পূর্ন ভারতকে একেবারেই মাটিতে নামিয়ে এনেছিল মাশরাফী, সাকিব, তামিম, মুশফিকরা। সেই বিশ্বকাপ থেকেই এই চারজনের একসাথে দেশের ক্রিকেটের ভারটা বইতে শুরু করা, মাহমুদুল্লাহর যে অভিষেকটাও হয়নি তখনো। গায়ানায় দক্ষিন আফ্রিকাকে হারিয়ে দিবে বাংলাদেশ, সেটা বোধহয় নিজেরাও ভাবতে পারেনি ম্যাচের আগে, আয়ারল্যান্ডের সাথে হার, ইংল্যান্ডের কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী হয়ে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাসটা অবিশ্বাস্য, সেই ২০০৭ বিশ্বকাপে সুপার এইটের লক্ষ্যটাও কিন্তু মানুষের মুখে মুখে ছিলনা। প্রত্যাশার চাপটা ছিল ২০১১ বিশ্বকাপে, দেশের মাটির সেই মহাযজ্ঞের আকাশসম প্রত্যাশার খেসারত দিতে হয়েছিল ৫৮ আর ৭৮ এর লজ্জায় ডুবে! মাঝে অবশ্য শফিউল আর মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে হারতে বসা ম্যাচ অকল্পনীয়ভাবে জিতে আরেকবার ইংল্যান্ডবধে বিশ্বকাপটা রাঙ্গানোর একেবারেই দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ, আগে আয়ারল্যান্ড আর পরের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে কোয়ার্টারের সমীকরনটা প্রায় মিলিয়েই ফেলা গিয়েছিল। কিন্তু সেই দুই লজ্জার হারে রানরেটের তথৈবচ অবস্থায় সেবার গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ বাংলাদেশ, এবারের রাউন্ড রবিন পদ্ধতির বিশ্বকাপেও ওই রানরেটটার দিকেও বেশ খেয়াল রাখতেই হবে বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টকে।

প্রত্যাশার পাল্লাটা বোধহয় এতটা ভারি ছিলনা চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়াতেও, ২০১৪ সালের বিভীষিকার পর খোদ দেশের মানুষের মনেও অত বড় কোন স্বপ্ন ছিলনা, কিন্তু মাশরাফী বিন মোত্তর্জা নামের এক স্বপ্নপুরুষের হাত ধরে সেবার বাংলাদেশ পৌঁছে গিয়েছিল নতুন এক দিগন্তে, ২০১৫ বিশ্বকাপ বাংলাদেশের জন্য অভিজাতদের তালিকায় নাম লেখানোর প্রক্রিয়া শুরু বিশ্বকাপইতো। সেই বিশ্বকাপের কোয়ার্টারের অদেখা স্বপ্ন হয়েছিল সত্যি! ২০১৫ থেকে ২০১৯, ক্রিকেটের সব ফর্ম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের সাথে অজের নয় কোন দলই। এই সময়টা দুইবার এশিয়া কাপের ফাইনাল আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের ইতিহাসটা বিশ্বকাপ ঘিরে স্বপ্নটাকে বানিয়েছে আকাশছোঁয়া, কোটি বাঙালির স্বপ্নটা এবার বিশ্বজয়ের।

স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে ফারাকটাও এবার যেকোনসময়ের থেকে বেশি, এত প্রত্যাশার চাপের সাথে কঠিন ফর্ম্যাট আর প্রতিপক্ষ, ক্রিকেটারদের কাজটা কতটা কঠিন সেটা খুব সহজেই অনুমেয়। এই ফর্ম্যাটে সেমিফাইনালে যেতে হলে কমপক্ষে পাঁচটা ম্যাচ জিততেই হবে, আগের কোন বিশ্বকাপেই তিনটার বেশি ম্যাচ না জেতা বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ইতিহাস বদলানোর।ব্রিটিশ কন্ডিশন সবসময় অনুনমেয়, সেই কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জটাও অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। এখনো ৩০০+ তাড়া করা কিংবা শুরুতে ৩২০+ দাঁড় করানোর অভ্যেসটা গড়ে ওঠেনি দলের, যেখানে বিশ্বকাপে ৩০০ কে পার স্কোর ধরা হচ্ছে সেখানে তিনশর জুজুটা কাটানোও একটা বড় লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের। এক ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর পাকিস্তান ছাড়া কোন দলের বিপক্ষেই সাম্প্রতিক রেকর্ডটা খুব একটা সুখকর না বাংলাদেশের জন্য, আফগানিস্তানের সাথে শেষ ম্যাচটা জিতলেও সেটা এসেছিল বেশ কষ্টেই, এর আগের ম্যাচে আফগানরা হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। অস্ট্রেলিয়ার সাথে শেষ দুটো ওয়ানডেতেই অবশ্য বৃষ্টিই জয়ী, তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচটায় প্রায় হেরেই গিয়েছিল কিন্তু বাংলাদেশ। শ্রীলংকা, যাকে কিনা খুব সহজ প্রতিপক্ষই ভাবা হচ্ছেই, তাঁরাই কিন্তু ২০১৮ সালের শুরুতে ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দুটো ম্যাচ হারিয়েছে আমাদেরকে! ইন্ডিয়ার সাথেও রেকর্ডটা খুব একটা সুখকর না, ২০১৫ র হোম সিরিজে দ্যা ফিজ ম্যাজিকে দুটো ম্যাচই শেষ সুখস্মৃতি, তারপরে ইন্ডিয়ার সাথে একের পর এক স্নায়ুচাপে ভেঙ্গে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। নিউজিল্যান্ডের সাথে বিদ্ধস্ত হবার স্মৃতিটা একেবারেই তাজা, সাউথ আফ্রিকাও নিজেদের মাটিতে ২০১৭তে উড়িয়ে দিয়েছিল আমাদের। ইংল্যান্ড এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ, ২০১৬ তে হোম সিরিজে হার, ২০১৭র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৩০৫ করেও হার, রেকর্ডটা ওদের সাথেও একেবারেই সুখকর না!

তবে এগুলো সবই অতীত, বিশ্বকাপ একটা নতুন টুর্নামেন্ট, নতুন দিনে, নিজেদের দিনে যে বাংলাদেশের সামনে কেউই পাত্তা পায়না এটা খুব ভাল করেই জানে বিশ্ব! অতীত রেকর্ড মাঠে খুব একটা প্রভাব ফেলবেনা, নির্দিষ্ট দিনে মাশরাফী-সাকিবরা কেমন করতে পারবেন সেটার উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভাগ্য। এই দলটায় অভিজ্ঞতার এতটুকু ঘাটতি নেই, তরুন ক্রিকেটারদেরও বিশ্বজুড়ে নানান কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে শেষ চার বছরে। এই দলটাই চার বছর ধরে একসাথে খেলছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একই কন্ডিশনে এই দলটাই খেলেছে দুই বছর আগে। দুইবার নিউজিল্যান্ড ট্যুর, একবার সাউথ আফ্রিকা ট্যুর- এগুলোর অমুল্য অভিজ্ঞতা কাজেই দিবেই বিশ্বকাপের মঞ্চে। সৌম্য, লিটন, সাব্বির, মোসাদ্দেক, মিরাজ ,সাইফুদ্দিন আর মুস্তাফিজ- ছোট্ট ক্যারিয়ারে ওদের অভিজ্ঞতা নেহায়েতই কম না। সৌম্য আয়ারল্যান্ডে ফর্মটা দারুনভাবেই ফিরে পেয়েছে, ওপেনিংয়ে ব্যাকআপ লিটন প্রস্তুতি ম্যাচে ইন্ডিয়ান বোলারদের খেলেছে দারুনভাবেই। সৌম্য আর লিটন দুজনেই নিজেদের দিনে বিশ্বের সেরা দলকে একাই হারিয়ে দেয়ার সক্ষমতা রাখে, সৌম্যের সামনে অনেক বড় সুযোগ বিশ্বমঞ্চ কাঁপিয়ে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়ার। সাব্বির নিউজিল্যান্ডের সাথে সেঞ্চুরির পুনরাবৃত্তিই করতে চাইবে, তবে এবার তাঁকে হতে হবে আরো আগ্রাসী, আরো ভয়ংকর। মোসাদ্দেক ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতিয়ে নিজেকে ফিরে পেয়েছে দুর্দান্তভাবেই, তবে বিশ্বকাপে তার কাজটা অনেক বেশি কঠিন, স্পিনে দারুন মোসাদ্দেক গতিময় পেসের বিপক্ষে কিন্তু অতটা সহজাত নয় এখনো। মিরাজের দায়িত্বটা সাকিবের সাথে স্পিনটা সামাল দেয়ার, শুরু দিকে স্পিনারদের জন্য অতটা সহায়তা না থাকলেও সময়ের সাথে সাথে উইকেট হয়ে উঠবে ক্লান্ত, শুষ্ক। মিরাজের কাজটা তখন আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠবে নিশ্চিতভাবেই। সাইফুদ্দিন আর মিরাজকে একসাথে খেলানো হবে বড় ভুল, বরঞ্চ প্রতিপক্ষ বিবেচনায়, কন্ডিশন বিবেচনায় রোটেট করে তাদেরকে খেলাতে পারলেই আসবে সফলতা। মুস্তাফিজের বোলিং নিয়ে সন্দেহের অবকাশ ছিল যথেস্ট, কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর সেটা থাকছে সামান্যই। দারুন গতি আর মুভমেন্টে শুরুতে ইন্ডিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন, এই মুস্তাফিজকেইতো দেখতে চায় বাংলাদেশ!

মূল কাজটা করতে হবে অবশ্যই সাকিব, তামিম, মাশরাফী, মুশফিক আর রিয়াদের কোর গ্রুপকে। এই পঞ্চপান্ডবের একসাথে শেষ বিশ্বকাপটা রাঙ্গানোর কাজটা নিজেদেরকেই নিতে হবে অনেকখানি। সাকিবের সামনে সুযোগ দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের মহানায়ক হয়ে ওঠার, ব্যাটিংয়ে নাম্বার থ্রি আর স্পিনের নেতা হিসেবে নয়টা ম্যাচে ওয়ার্কলোডটা সবচেয়ে বেশি নিতে হবে সুপারম্যানকেই। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভাগ্য প্রায় পুরোটাই নির্ভর করবে সাকিবের পারফরম্যান্সের উপর, ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্ট সাকিব যে হতে পারেন, সেটা প্রমান করার বড় সু্যোগ সাকিবের সামনে। ব্যাটিংয়ে নাম্বার থ্রিতে সাকিব অবিশ্বাস্য, ধারাবাহিকতাটাযে সাকিব ধরে রাখবেন সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই একেবারেই। সাকিবের কাছে চাওয়াটা ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে নিয়ে যাওয়া, আর বোলার সাকিবের উপর পূর্ন আস্থাই আছে পুরো বাংলাদেশের। তামিম ইংল্যান্ডে দুর্দান্ত, মুশফিকের সাম্প্রতিক ফর্ম আশাটা বাড়িয়েই দিবে। আইসিসির টূর্নামেন্ট আসলে মাহমুদুল্লাহ রীতিমতো দানব বনে যান, বিশ্বকাপে দুটো সেঞ্চুরি, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একটা- রিয়াদ এবার করে দেখান আরো বড় কিছুই!

এই দলটাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন না দেখার কারন যেমন আছে, তেমন সাকিব-তামিমরা মাঠের ক্রিকেটেই স্বপ্নটা বড় করে তোলেন আমাদের। বড় কিছুর স্বপ্ন দেখাই যায়, যতক্ষন না সেটা দলের উপর চাপের বোঝা তৈরি করে। কন্ডিশন, ফর্ম্যাট যেমন বড় বাধা, তেমন সাকিব-মাশরাফীদের বিশ্বাসটাও অনেক বড় শক্তি। দল বিশ্বাস করছে, দেশের মানুষ বিশ্বাস করছে, বড় কিছু তাই না হয়ে পারে কি! গত চারটা বছর যেই স্পিরিট নিয়ে খেলেছে দল, সেটা নিয়ে খেলতে পারলে বড় কিছু হবেই। এত লম্বা টূর্নামেন্টে আপন অ্যান্ড ডাউন্স থাকবেই, হয়ত বড় হার আসবেই, খুবই স্বাভাবিক। গুরুত্বপূর্ন হল বিশ্বাসটা ধরে রাখা, নিজেদের উপর আস্থা ধরে রাখার। এই দলটা সেটা পারলেই, ধরা দিবে বড় কিছুই।

বিশ্বাস থাকলেই, জয় আসবেই!