• ক্রিকেট

বাংলাদেশী ব্রান্ড অফ টি-২০ ক্রিকেটঃ আশা না দুরাশা?

পোস্টটি ৫২০২ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

 টি-২০ শেষ হয়েছে বহুদিন। দল এখন ডুবছে সাদা পোশাকের ভরাডুবিতে। কিন্তু একটা টি-২০ সিরিজের একটি ম্যাচে জয়, একটি ম্যাচে রোহিত শর্মার কাছে উড়ে যাওয়া আর একটি ম্যাচে ‘এভাবেও হেরে আসা যায়’ সুলভ হার দিয়েছে অনেকখানি বার্তা। না পাওয়ার এই সিরিজে বাংলাদেশ ক্রিকেট পেয়েছে অনেকখানি । কে জানে, তামিম ইকবালের বলা ‘বাংলাদেশী ব্রান্ড অফ টি-২০ ক্রিকেট’ টাও হয়ত ।

 

সামনের বছর টি-২০ বিশ্বকাপ। টি-২০ র যত আয়োজন সব যে বিশ্বকাপ ঘিরেই হবে তা নতুন করে বলা বাহুল্যতা। সেই দলটা কেমন হতে পারে?

 

টি-২০র ওপেনিং-এ তামিম ইকবালের থাকা উচিত নাকি উচিত না সে প্রশ্নে যাওয়াটা যৌক্তিক হবেনা। প্রথমত তামিম ইকবালকে দল বাদ দেবেনা, দ্বিতীয়ত তামিম ইকবালকে রিপ্লেস করার মত পারফর্ম আর কোন ব্যাটসম্যান করতে পারেনি। তবে তামিম ইকবালের সাথে আর কে নামবেন সেরকম একটি প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে বেশিরভাগই হয়ত নাঈম শেখেই নির্ভরতা খুঁজতে চাইবেন। অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে উঠে আসা এই সাহসী ব্যাটসম্যানের হাতে ব্যাটন চাইলে ধরিয়ে দেওয়াই যায়, মানসিকতার প্রশ্নে সেই ভার নিতে নাঈম শেখ প্রস্তুতও । তবে প্রশ্ন থেকে যাবে সামর্থ্যে । কিছুটা পায়ের আড়ষ্টতা, ফ্রন্ট ফুটে খেলার চাইতে ব্যাকফুটে খেলার সময় পায়ের নাজুক নড়াচড়াই মূলত সেই প্রশ্নের উঁকি দেওয়াচ্ছে। সাথে অফ সাইডে মারতে গিয়ে প্রয়োজনীয় স্ট্যামিনার ঘাটতি মনে করিয়ে দিচ্ছে, ফুটওয়ার্ক নিয়ে কাজ না করলে আরেকটি আনামুল হক বিজয় হতে হয়ত নাঈম শেখ খুব একটা সময় নেবেন না।

 

টি-২০ ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ পজিশন ‘নম্বর থ্রি’ । দলের সেরা ব্যাটসম্যানই মূলত ৩ নম্বরে খেলে থাকেন । আমি ঠিক জানিনা, কি কারণে টি-২০ এর বাংলাদেশ দলের সবচাইতে সেরা ব্যাটসম্যানটিকে দলের বাইরে রাখা হয় । এক ফর্ম্যাটের পারফর্ম্যান্স দেখে আরেক ফর্ম্যাটের খেলোয়াড় নির্বাচনের ‘ভুলভাল অভ্যেস’ আমাদের নির্বাচক প্যানেলের বহুদিনের। সাব্বির রহমানকে টি-২০ দল থেকে বাদ দেবার ক্ষেত্রে হয়ত কাজ করেছে সেটিই। এক প্রসঙ্গের অবতারণা করতে গিয়ে আরেক প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছি । ৩ নং পজিশনের কথা বলছিলাম । এই মুহুর্তে এই পজিশনে সবচাইতে বেশি মানাবে সাব্বির রহমানকে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে টি-২০ তে তিনি ৩ নং এই খেলেছেন। ৩ নং এ খেলার ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানও কথা বলবে সাব্বিরের পক্ষেই। 

টি-২০ তে সাব্বির ব্যাট করেছেন ৩,৫  আর ৬ নং এ। পজিশন ভেদে সাব্বিরের এভারেজ আর স্ট্রাইক রেটের পরিসংখ্যান তুলে ধরলাম ।

 

৩ নং এ সাব্বির ২৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ৭২৪ রান। এভারেজ ৩১.৪৮ ,স্ট্রাইক রেট ১২৮.১৪ । ক্যারিয়ারের ৪ হাফ সেঞ্চুরির ৩ টিই তিনি করেছেন ৩ নং-এ ব্যাট করে। ৫ নং এ ৬ ম্যাচ খেলে ১৯.৪০ এভারেজে করেছেন ৯৭ রান, স্ট্রাইক রেট ১১৯.৭৫ । ৬ নং এ ১০ ম্যাচে ১২.৫০ এভারেজে ১২৫ রান। স্ট্রাইক রেট ৯১.২৪ । সাব্বিরকে ৩ নং থেকে লোয়ার অর্ডারে ডিমোট করার পেছনে বড় একটা কারণ ছিল শেষের দিকে দ্রুত কিছু রান তোলা । পরিসংখ্যান বলছে, সেটি করতে তিনি বেশ ভালভাবেই ব্যার্থ হয়েছেন। ৬ নং এ নামা কোন ব্যাটসম্যানের কাছে দল অবশ্যই ৯১.২৪ স্ট্রাইক রেটের কোন ইনিংস চাইবে না। আবার সাব্বিরকে টপ অর্ডার ছাড়া করার আরেকটি কারণ হিসেবে শোনা যাচ্ছিল সাকিব আল হাসান নাকি ৩ এ ব্যাট করতে চান ( যদিও সাকিব ক্যাপ্টেন থাকাকালীন বেশ কিছু ম্যাচে আমরা ৩ নং এ সাব্বির / সৌম্য কে নামতে দেখেছি) । যেহেতু সাকিব এখন নেই, সেহেতু ৩ নং এ সাব্বিরকে ফিরিয়ে আনা হলে খুব বেশি খারাপ হবার কথা না। ১২৮.১৪ স্ট্রাইক রেটে ৩১.৪৮ এভারেজ টি-২০ ক্রিকেটে বিশেষ কিছুই ।

 

চার নং-এ অবশ্যই মুশফিকুর রহিম বড় আস্থা এবং নিশ্চিতভাবে দল তাকে ছাড়া কিছু ভাবছে না। ৫ নং এ নামেন বর্তমান টি-২০ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাঝেমধ্যে কিছু ইনিংস খেলে পরিসংখ্যান ঠিকঠাক রাখলেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ পুরোপুরি ধারাবাহিক নন কখনই। কিন্তু হাতে যেহেতু পর্যাপ্ত বিকল্প নেই, তাই রিয়াদ হয়ত টিকে যাবেন । কিংবা আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট হয়ত অভিজ্ঞতাকে পুরোপুরি এড়িয়ে যাবেনও না। তবে রিয়াদকে হয়ত ৫ এর চেয়ে ৬ এ নামানোই কার্যকরী হবে। ৩১.৩৩ এভারেজ আর ১২৩.৪৫ স্ট্রাইক রেট অন্তত সেরকম একটা বার্তাই দিচ্ছে। ( ৫ নং এ ২৭ ম্যাচে ১৭.৬৪ এভারেজ, স্ট্রাইক রেট ১২০.১৬ ) । ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ ম্যাচও তিনি ৬ এই খেলেছেন । 

 

৫ নং থেকে রিয়াদকে ৬ এ খেলানো হলে ৫ নং এ কে খেলতে পারেন সেরকম একটা প্রশ্ন তৈরি হয়ে যায়। প্রশ্ন একটি হলেও উত্তরটা হয়ত কয়েক রকম হতে পারে। তবে সবচেয়ে ভাল যে দুটি অপশন মাথায় আসবে তা হল সৌম্য সরকার আর আফিফ হোসেন ধ্রুব । ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ওয়ানডে ফর্ম্যাটে মারমার-কাটকাট ব্যাটিং করলেও টি-২০ ফর্ম্যাটে সৌম্য সরকার সবসময়ই বড় এক হতাশার নাম। পর্যাপ্ত সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও এভারেজকে কখনই ২০ ছাড়াতে পারেননি সৌম্য (১৭.২০) । পরিসংখ্যান যতটা বাজে, তারচেয়েও বাজে সৌম্য সরকারের টি-২০ ক্রিকেটের ব্যাটিং সেন্স। ফ্রন্ট ফুটে ভর দিয়ে লফটেড কাভার ড্রাইভ তিনি খেলবেনই, তা ‘সিলি মিড অফ’ এ ফিল্ডার থাকুক আর নাই থাকুক। লেগ সাইডে বাউন্ডারি লাইনে প্লেয়ার থাকুক আর না থাকুক, ‘কাউ কর্নার’ দিয়ে সৌম্য সরকারকে উড়িয়ে মারতেই হবে। তা বলে সুইং, কাটার যাই থাকুক না কেন। টি-২০ ক্রিকেটে ফিল্ডিং কে পাত্তা না দেওয়া এই ব্যাটিং সেন্স তবুও মানা যেত, যদি সৌম্য সরকারের ‘শট পাওয়ার’ পর্যাপ্ত থাকত। টি-২০ ক্রিকেটে এই ব্যাটিং এর কথা যদি বলি, আফিফ হোসেন ধ্রুবও আমাদের খুব বেশি বড় বার্তা দেননি। তবুও নতুন আসা এই তরুণের উপর ভরসা করতে দোষ কি? ৪৬ টি-২০ তে আস্থা রেখে ১ ফিফটি দেখানো সৌম্যের চাইতে খুব বেশি খারাপ হয়ত তিনি করবেন না। 

 

সৌম্যর কথা বললে লিটন দাসকে খানিকটা আলোচনায় না আনলে কেমন দেখায়? প্রতিভার মুলা ঝুলিয়ে সমস্ত শট সিলেকশান সেন্সের মূলোৎপাটন করা লিটন দাসের আরেকবার লাল-সবুজের টি-২০ দলে সুযোগ পাওয়াটাই হবে সবচেয়ে বড় শিরোনাম। মাঝেমধ্যে ‘ক্লাসিক’ কিছু ইনিংস খেলা একজনকে যে দলের দরকার নেই, সেটি দল লিটন দাসকে যত তাড়াতাড়ি বুঝিয়ে দেবে ততই মঙ্গল। ২০১৫ থেকে সুযোগ পাওয়া ‘নির্ভরতার আশা’ দেখতে দেখতে দেশে দু-তিনটে আন্দোলন হয়ে গেল, গোটা দুটো এশিয়া কাপ হয়ে গেল, দুদুটো বিশ্বকাপ হয়ে গেল, চাল ছেড়ে পেঁয়াজের দাম আকাশ ছাড়িয়ে গেল, তবুও ক্রমাগত ব্যার্থ লিটন দাস রয়ে যাচ্ছেন ‘তরুণ আশা’ হয়েই ।ফর্মের কথা ভুলে গিয়ে ভুলবশত মাঝেমধ্যে খেলা দুয়েকটা ইনিংস দিয়ে যদি কারো দলে জায়গা পাকা হয়, তবে সে দল নিয়ে আজকের এই লেখালেখিটাও নিতান্ত বিলাসিতা হিসেবে সমস্ত লিটন-ভক্তরা আমায় ক্ষমা করবেন।

 

প্রতিভার মূলা দেখিয়ে আশা হয়েছিলেন লিটন দাস। মুস্তাফিজুর রহমানের ব্যাপারটা ভিন্ন। তার মায়াবী কাটার দেখে ‘এ আশায় বাঁধি খেলাঘর’ গেয়ে উঠেছিলেন প্রায় সমস্ত ক্রিকেটভক্ত। তবে খেলাঘরে থেকে মুস্তাফিজুর যে আলস্যে আলেয়া হয়ে যাবেন তাই বা কজন বুঝতে পেরেছিলেন? একজন প্লেয়ারকে তার খারাপ সময়ে সাপোর্ট দিতে খুব বেশি সমস্যা থাকার কথা নয়, পরিশ্রমী কারো ফল দেবার আশায় অপেক্ষা করতে কারো আপত্তি জানানোর কথা নয় । কিন্তু কোন একজনের খেলার সময় যদি বডি-ল্যাংগুয়েজই মাঠে না থাকে, পর্যাপ্ত সুযোগ আর সুবিধার পরও যদি আত্ম-উন্নতিতে কেউ উদাসীন থাকে, তাকে মনে হয় আর অটোচয়েজ ভাবাটা ঠিক নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট যদি তাই আগামীর কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে তবে সেখানে অবশ্যই একটা ব্যাপার রাখতে হবে- মুস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া বাঁচা শিখতে হবে বাংলাদেশকে।

 

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে দীর্ঘদিন ধরে ‘ফিনিশার’ রোলে খেলানো হচ্ছে। ওয়ানডেতে যদি মানিয়েও যায়, টি-২০ তে তিনি মোটেই লোয়ার অর্ডারে নামার মত উপযুক্ত নন। টি-২০ তে তাকে খেলাতে হলে টপ অর্ডারে খেলাতে হবে। কিন্তু টপ অর্ডারে যেহেতু ‘বেটার অপশন’ হাতে আছে তাই আপাতত তাকে দলের বাইরে রাখাটাই খুব সম্ভবত ভাল হবে। 

 

আগের আলোচনায় ফিরে আসি। ৬ নং এ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদই সম্ভবত ‘ফিনিশিং টাচ’ টা দিয়ে দেবেন । ৭ নং এ একজন স্পিনার থাকবে- আপাতত সেটি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। বাঁহাতি স্পিনারের প্রয়োজনে এখানে আরাফাত সানিও আসতে পারেন । তবে বিপ্লবকে এই ফর্ম্যাটে টিকে থাকতে হলে প্রচুর স্পট বোলিং করতে হবে, নতুন কিছু শিখতে হবে। তবে আপাতত বিপ্লবকে দেখে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া বলেই মনে হচ্ছে। সীমিত সামর্থ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করে স্যামুয়েল বদ্রি, এডাম জাম্পারা পারলে বিপ্লবকে পারতে দোষ কোথায়?

 

সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে ব্যাটসম্যানের অভাব পোষানো গেলেও বাঁহাতি এক অর্থোডক্স আর একজন ক্যাপ্টেনের অভাব মনে হয় কখনই মিটবে না। দ্রুতই একজন কার্যকরী বাঁহাতি স্পিনার পাওয়ার আশা আপাতত কম। খুব প্রয়োজন হলে আরাফাত সানি কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। ছোট ফর্ম্যাটে তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থাকবার কথা নয়। বোলিং সেন্স ও নেহায়েত মন্দ নয়।বোলিং অ্যাকশন শুধরে গত কয়েক বিপিএলেও পারফর্ম করেছেন সমানতালে। তবে সৈকত না থাকাতে অফ স্পিনারের দায়িত্বটা সামলাতে হবে আফিফ আর রিয়াদকেই। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আফিফ ছিলেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। অবশ্যই প্রত্যেক ক্রিকেটপ্রেমী চাইবে, মিরাজকে যেমন ব্যাটিং সত্তা ‘দলের চাওয়া’ তে জাগাতে দেওয়া হয়নি, আফিফের ক্ষেত্রে তেমন কিছু হবেনা। 

 

স্পিনারদের দিকটা সামাল দেওয়া গেলেও পেস ডিপার্টমেন্ট চিন্তায় ফেলতে পারে বাংলাদেশকে। তবে সিলেশনে খুব বেশি চিন্তা করতে হবে না নির্বাচকদের। নতুন বলে এখন দেশের সেরা পেসার শফিউলের সাথে আল-আমিন থাকবেন পেস ডিপার্টমেন্টে। অতিদ্রুতই ভুলতে হবে মুস্তাফিজের নেশা। হেঁয়ালি এক বাঁহাতি পেসার ছেড়ে বাংলাদেশকে খুঁজতে হবে নতুন কোন তরুণ। তাতে আবু জায়েদ রাহী, আবু হায়দার রনি আর তাসকিন আহমেদ হতে পারেন ভাল অপশান। আবু জায়েদ রাহীকে নিলে শফিউল আর আবু জায়েদ একই দলে থাকবেন, তাতে বোলিং বৈচিত্র্য বাড়বেনা। সামনের বিশ্বকাপ যেহেতু অস্ট্রেলিয়াতে, তাই দ্রুতগতির একজন ফাস্ট বোলার দরকার হবে বাংলাদেশের। টিম বাংলাদেশকে তাই তাসকিনকে প্রস্তুত করে তুলতে হবে। তাসকিনেরও নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। সামনের টি-২০ বিশ্বকাপে বাজির ঘোড়া হয়ত হবেন তিনিই। 

 

তবে এত কিছুর মধ্যে একজন সত্যিকার অটো-চয়েজকে হয়ত আমরা বাদ দিতে পারব না। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের স্লগ ওভার আমাদের যারপরনাই দরকার হবে, তবে তিনি ফিরলে হয়ত স্লগ ওভার বিবেচনায় দলে নেওয়া আল-আমিনকে বেঞ্চেও থাকতে হতে পারে। আবার শফিউল-আল আমিন এর সাথে তৃতীয় সিমারও হতে পারেন সাইফুদ্দিন। কিন্তু তারপরও, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দ্রুতগতির একজন বোলার আমাদের লাগবে, যে কিনা কিছুটা রান দিলেও আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেক-থ্রু এনে দেবে। সেটি হতে পারতেন তাসকিন ।‘হতে পারত’ বলতে হচ্ছে। তাসকিনের ইঞ্জুরিই তা বলতে বাধ্য করেছে।

 

বাংলাদেশ দলে পাওয়ার হিটার নেই। টি-২০ তে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া কোন প্লেয়ার নেই। টিমকে তাই নির্ভর করতে হবে ‘স্কিল হিটিং’  আর ‘প্লানের প্রোপার এক্সিকিউশন’ এর ওপর। এমনটা হলে টি-২০ ক্রিকেটে আমরা যেকোন দলকেই হারাতে পারি, অন্তত নিদাহাস ট্রফি আমাদের সেটিই বোঝাচ্ছে। তবে সেই প্লানের বাস্তবায়নে তাড়াহুড়া করলে যে ফল বদলে যেতে পারে বিফলে সেটিও আমাদের বোঝাচ্ছে নিদাহাস ট্রফির পরেই খেলা ‘আফগানিস্তান সিরিজ’ । দলের কোচ-ক্যাপ্টেনকে তাই পরিকল্পনা করতে হবে আঁটসাঁট । সেই পরিকল্পনা বুঝিয়ে দিতে হবে দলের প্রত্যেক সদস্যকে।প্রত্যেক সদস্যকে নিজের দায়িত্ব বুঝে সেই মোতাবেক দায়িত্ব তুলেও নিতে হবে। তবেই টি-২০ ক্রিকেটেও পাওয়া যাবে অন্য এক বাংলাদেশকে।  দলে থাকা সম্পদের যথেষ্ট ব্যাবহার, অকার্যকর ‘তরুণ আশা’ সমূহের ভ্রম পরিহার আর নতুন আসাদের দায়িত্ব তুলে নেওয়া- স্বপ্ন দেখাতে পারে ‘বাংলাদেশী ব্রান্ড অফ টি-২০ ক্রিকেট’ এর।