মেয়েদের ফুটবল; অচেনা স্বপ্নযাত্রা? নাকি চিরচেনা উল্টো পথ?
পোস্টটি ১৫০৭ বার পঠিত হয়েছেকমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা উপহার দিলেন মারিয়া মান্ডারা। জাতীয় পর্যায়ে মূল সাফ শিরোপা এখনো জেতা না হলেও বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগীতায় বাংলাদেশের মেয়েরা বরাবরই এই অঞ্চলের ফুটবলে ছড়ি ঘোরাচ্ছে। মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের ইতিহাস খুব একটা পুরোনো না হওয়ায় এই অঞ্চলে বাংলাদেশের সাফল্য পরিমাপ করার সময় এখনো আসেনি। তবে বয়স ভিত্তিক ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েরা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে ফেলেছে প্রতিবেশী দেশগুলোর চাইতে বাংলাদেশ দুই সিড়ি উপরেই আছে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সম্ভব হলে নারী ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েদের মূল শিরোপা সময়ের ব্যাপার মাত্র। একটা সময় ভারত ছাড়া এ অঞ্চলের অন্য সব প্রতিবেশীর চেয়ে ছেলেদের ফুটবলেও বাংলাদেশ বেশ এগিয়েই ছিল। স্বপ্নের পরিধি বড় করতে না পারা আর পৃথিবীর অন্যতম দূর্বল ফুটবল অঞ্চলের শ্রেষ্টত্ব অর্জনের হাতছানি বাংলাদেশের ফুটবলে এতটাই পরিতৃপ্তির ছিল যে নিজেদের আঞ্চলিক শক্তিমত্তা ধরে রাখাও সম্ভব হয়নি আমাদের। যারা একসময় আমাদের সমীহ করত, আজ আমরাই সেই মালদ্বীপ, নেপালকে সমীহ করি। ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আমাদের নারী ফুটবলও আজ একই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে। ছেলেদের ফুটবল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যেমন অসম্ভব নয়, ভুলের পুনরাবৃত্তির চোরাবালিতে সাঁতার কেটে নিজেদের অবস্থান হারানোও খুব সম্ভব। বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাস বলছে এদেশে অতীত ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার কোন দৃশ্যমান নজির আমাদের নাই। আছে ভুলের সাগরে হাবুডুবু খাওয়ার সমৃদ্ধ ইতিহাস। আমার এই লেখা তাই ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখে অশ্রুসিক্ত।
চিত্রঃ সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়ন ২০২১ বাংলাদেশ দল। (ফটোগ্রাফারঃ ওমর ফারুক)
ফিরে যাই ১৯৮৪ সালে। বাংলাদেশ তখন এ অঞ্চলের ফুটবলের অন্যতম সেরা দল। ক্রিকেট আর হকিতে পাকিস্তানকে নিজেদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর আসনে বসানো ভারত ফুটবলে বাংলাদেশকেই তখন আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের পথে মূল প্রতিদ্বন্দী হিসেবে ভাবত। শুধু জাতীয় দল বিবেচনাতেই নয়, অর্থনৈতিক শক্তিতে এশিয়ার অন্যসব অঞ্চলের চেয়ে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার ঘরোয়া ফুটবল কাঠামো আর প্রতিযোগীতার মানেও বাংলাদেশ তখন না বুঝেই অনেক এগিয়ে। এশিয়ার ফুটবলে রাজত্ব করা পশ্চিম এশিয়ার খেলোয়াররা তখন দেশের বাইরে খেলার জন্য এশিয়ার অন্যান্য বড় লীগের মধ্যে বাংলাদেশের লীগটাকেও বিবেচনায় রাখেন।
ঠিক এমন একটা সময়ে নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে প্রথমবারের মত বসল দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের ক্রীড়া আসর- সাফ গেমস। এশিয়ার ফুটবলে নিম্ন-মধ্যম শক্তির দেশ থেকে উচ্চ-মধ্যম শক্তির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে লড়াই করা দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ- ভারত ও বাংলাদেশের ফুটবল শাসকরা একটি ভুল করে বসলেন। এশিয়ার উচ্চ মধ্যম শক্তিতে রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ ভুলে সাফ গেমসের ফুটবলের ইভেন্টটাকে পাখির চোখ করলেন। স্বপ্নের সীমানা হল ছোট। সাফ গেমসের প্রথম আসরে স্বাগতিক নেপালের কাছে ফুটবল ইভেন্টের সোনা হাতছাড়া হলেও সাফ গেমসের পরের কয়েকটি আসরে সব ইভেন্ট মিলিয়ে সোনা জয়ের একচেটিয়া রাজত্ব কায়েম করা ভারত দ্রুতই উপলব্ধি করে নিয়েছিল, অন্যান্য খেলার মত সাফ গেমস কখনও তাদের ফুটবল সামর্থ্য প্রমাণের মঞ্চ হতে পারেনা। এশিয়ার মানদণ্ডে কিছুটা পিছিয়ে পড়েই ভারত চোখ সরালো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল থেকে। প্রথম কয়েকটি আসরের পর থেকেই ভারত সাফ গেমসের ফুটবল ইভেন্টটাকে বিবেচনা করত তরুণ খেলোয়াড় অন্বেষণ আর পরীক্ষা নীরিক্ষা করে জাতীয় দলের বেঞ্চকে শক্তিশালী করার মঞ্চ হিসেবে। কিন্তু ভুল ভাঙ্গেনি বাংলাদেশের। ফুটবল মানদন্ডে পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ার জাদরেল প্রতিপক্ষদের সাথে ফুটবল মাঠে চোখে চোখ রেখে লড়াই করলেও তারা তখনও দক্ষিণ এশিয়ার মানদন্ডে নিজেদের এগিয়ে থাকা শক্তি হিসাবে বিশ্বাস রাখতে পারেনি।
খেলাধুলা ছাড়াও অন্যান্য অনেক মানদন্ডে হীনমন্যতায় ভোগা বাংলাদেশ ফুটবল মাঠে মালদ্বীপ-ভুটানকে নিয়ে ছেলেখেলা করে কিছু হীনমন্যতা ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগকে বিশেষ কিছু ভাবত। সাফের মঞ্চে ফুটবলে সোনার স্বপ্নটাকে হিমালয়ের চুড়া মনে করে বসে রইল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজেদের পতনের বীজটা সেখানেই রোপন করেছিল বাংলাদেশ। ফিফার বিশ্ব র্যাংকিং পদ্ধতি চালু হয়নি তখনো। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে অনেকগুলো মানসম্পন্ন ফুটবল দেশের জন্ম হয়নি তখনো। অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ আফ্রিকা আর ফুটবল বিচ্ছিন্ন ওশেনিয়ার অধিকাংশ দেশকে পেছনে ফেলে এশিয়ার মধ্যম শক্তি বাংলাদেশ ফিফা র্যাংকিং চালু থাকলে ৮০-৮৫তম স্থানে থাকলেও বিস্ময়ের কিছু ছিলনা। তবে সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গীর অভাব ও সংকীর্ণ স্বার্থ চিন্তা পাশ কাটিয়ে সামনে এগোনোর চ্যালেঞ্জ নিতে চায়নি তৎকালীন বাফুফে নীতি নির্ধারকেরা। তারা হয়ত ভেবেছিলেন ভারত ছাড়া সেই অর্থে বড় প্রতিপক্ষ না থাকায় সাফের ফুটবলের সোনা জয় সাধ্যের ভিতরে থাকা এমন এক অর্জনের হাতছানি যা বাফুফের শাসক হিসেবে তাদের সাফল্য প্রদর্শনের সুযোগ করে দেবে। সেই সাথে বাফুফের ক্ষমতার গদি আরও পাকাপোক্ত হবে। যদিও ফুটবল বিধাতা তাদের সেই আশায় গুড়ে বালি ছিটিয়ে দীর্ঘদিন সেই সোনা অধরাই রেখেছেন। বাফুফের শয়নে স্বপনে তখন একটাই চাওয়া। জিততে হবে সাফের সোনা। সোনাতো নয়, এ নাকি গরীবের বিশ্বকাপ।
নেপাল তখনো বেশ পিছিয়ে। পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কাকে ফুটবলীয় আবগ কখনো স্পর্শ করেনি। ফুটবলে তারা কোনকালেই সিরিয়াস না। মালদ্বীপ, ভুটান তখন ফুটবল মাঠে হামাগুড়ি দিচ্ছে। ক্লাব ফুটবলে প্রতিপক্ষদের চেয়ে বেশ এগিয়ে থাকার কারণে সেই অধরা সাফের সোনা জয়ের লক্ষ্য পূরণে বাফুফে কর্তারা ফুটবল সম্প্রসারণ করে মেধাবী ফুটবল অন্বেষণ, ঘরোয়া ফুটবলের মানোন্নয়নের মত কাজে মনযোগ দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। বরং জাতীয় দলকে চাঙ্গা রাখাই তাদের একমাত্র কর্তব্য মনে করতেন। অন্যান্য রাস্ট্রগুলোর ফুটবলীয় পরিকল্পনাগুলো যখন আবর্তিত হয় বিশ্বকাপ আর মহাদেশীয় বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতা ঘিরে, তাদের লক্ষ্য চুড়ান্ত পর্বের দিকে বাংলাদেশ তখনো পরিকল্পনা সাজায় সেই দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিযোগীতা ঘিরে। বাংলাদেশ উপলব্ধি করতে পারেনি যে ছোট থেকে মধ্যম শক্তির দলে পরিণত হতে ছোট অর্জনের হাতছানি পরিত্যাগ করে ছুটতে হয় বড় লক্ষ্যের দিকে। বড় লক্ষ্যে ছুটলে আপনাতেই ধরা দেয় ছোট লক্ষ্য। তাই ছোট অর্জনের যে স্বীকৃতি, বড় অর্জনের লক্ষ্য স্থির করা সাহসী পদক্ষেপের সম্মান তার চেয়েও বেশি।
পুরুষদের ফুটবলকে চূড়ান্তভাবে গলা টিপে হত্যা করে মেরে ফেলা হয়েছে বহু আগেই। এখন আমরা সামনে মেয়েদের ফুটবলকে মুকুলেই হত্যা করার সুবর্ণ সুযোগ। কর্তাব্যক্তিদের ব্যক্তিগত স্বার্থ আর নিজ অবদান তুলে ধরার আয়োজনে সর্বশান্ত হতে আমাদের মেয়েদের ফুটবলে সময় খুব বেশি লাগবেনা। বিষয়টা ব্যাখ্যা প্রয়োজন।
আশির দশকের ফুটবলে (তৎকালীন প্রেক্ষাপটে ফুটবল বলতে পুরুষদের ফুটবলই বোঝানো হত) দক্ষিণ এশীয় মান বিবেচনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ সামনে এগোনোর চেস্টা না করে ভুটান মালদ্বীপকে নিয়ে ছেলেখেলা করেই তৃপ্তির সর্বোচ্চ ঢেঁকুর তুলত। সেই একই পথে হেঁটে বর্তমান মেয়েদের ফুটবলে ভারত ছাড়া অন্যান্য প্রতিবেশীদের চেয়ে অনেকটুকু এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ সেই একই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে। সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশীয় অনুর্ধ্ব ১৯ প্রতীযোগীতায় ভুটান, শ্রীলংকার গোলে ১৮ বার বল পাঠিয়ে ছেলেখেলা (আসলে লেখা উচিত মেয়েখেলা) করা বাংলার মেয়েদের পারফর্মেন্সে বোর্ড সভাপতি সহ বাফুফের কর্তাব্যক্তিদের কোমড় নাচন সেই সত্যটি প্রতিফলিত করছে। মেয়েদের আশা জাগানিয়া পারফর্মেন্সে খুশি হতে দোষ নেই। কিন্তু ভয়টা পরিতৃপ্তিতে। এ ধরনের অভিযোগ ওঠালে সংশ্লিষ্টরা গলা উঁচু করে অথবা অভিব্যক্তিতে ভীষণ দ্বিমত প্রকাশ করে জানিয়ে দেবেন যে তারা পরিতৃপ্ত নন। তবে মুখে দ্বিমত করতে কাজ করতে হয়না, শুধু চাপার জোর লাগে। তাই তাদের মুখের বুলিতে গুরুত্ব দেয়ার বোধ করি কোন অবকাশ নেই। এই যেমন শ্রীলংকার মেয়েদের মত নবীন ফুটবল খেলতে শুরু করা দলকে ১২-০ গোলে উড়িয়ে দেয়ার পর একটি দৈনিক পত্রিকাকে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী বললেন, “এখানে ভারত ও নেপালের মতো শক্তিশালী দল আছে। তাদের সঙ্গে খেলে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে”। সমশক্তির দুটি দেশকে “শক্তিশালী” তকমা দিয়ে তিনি তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন, সেটা তিনি স্বীকার না করলেও বুঝে নিতে কস্ট হওয়ার কথা না। দুই বছর আগে এএফসি অনুর্ধ্ব ১৭ পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্বে অস্ট্রেলিয়ার মত বিশ্বমানের দলের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়াই করে ড্র করা বাংলাদেশের সেই দলটাই ২ বছর পর অনুর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে এসে নেপাল ভারতকে শক্তিশালী বলার একমাত্র কারণ হতে পারে স্বপ্নের সীমানা বড় করার সাহস দেখতে না পারা। শ্রীলংকার মত দলের বিপক্ষে এশিয়ার মানদন্ডে এগিয়ে থাকা ইরান বা ভিয়েতনামও হয়ত এর চেয়ে খুব বেশি বড় ব্যবধানে জিততে পারতনা। সেই অর্থে বাংলাদেশের মেয়েদের এই দলটা হয়ত শক্তির মানদণ্ডে ইরান থেকে যোজন যোজন দূরত্বে নেই। প্রয়োজন নিজেদের আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে স্বপ্নের সীমানাটাকে বড় করার সৎ সাহস, যা আশির দশকে ছেলেদের দলটা করতে পারেনি। কারণ আমরা স্বপ্নটাকে বড় করিনি। ভারত, নেপালকে হারিয়ে সাফ জয় ছিল আমাদের স্বপ্নের সর্বোচ্চ সীমানা।
এই স্বপ্ন বড় করার কাজ স্বার্থান্বেসী কর্মকর্তারা করবেন না। কোচও করবেন না। সাফল্যের খেরো খাতায় নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করার জন্য তাদেরকে শ্রীলংকা, ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারানোর কৃতিত্বকে বড় করে দেখাতে হবে। তবে সেটাও একসময় আর ধরে রাখা যাবেনা। ভারতের দৃষ্টি সীমানা বরাবরই দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে। এখনতো তা বিশ্ব পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার। নেপালের ফুটবলেও দক্ষিণ এশিয়ার সাফল্যকে বড় করে দেখা হয়না। নিজেদের স্থান ধরে রাখতে তারা তৃপ্তি খোজেনা। বয়স কম হলেই মেয়েদের বয়সভিত্তিক দলে জাতীয় দলের খেলোয়ারদের সাফ অঞ্চলের প্রতিযোগীতায় খেলানোর কোন প্রয়োজন নেই। কারণ বয়সভিত্তিক দলের মূল সাফল্য শিরোপা জয়ের না, ভবিষ্যেতের জাতীয় দলকে শক্তিশালী করার মাঝে। সেটা জানে দেখেই জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন কম বয়সী খেলোয়ারকে দলে না নিয়েই ভারত এসেছিল। বাংলাদেশের জয়ের কৃতিত্বর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাবোধ রেখেই বলা যায়, আমাদের বয়স দলে জাতীয় দলের খেলোয়ার যুক্ত করে বিজয় অর্জন খুব বেশি দূর এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবেনা। তাছাড়া শ্রীলংকা বা ভুটানের সাথে লড়াই করে সেমি ফাইনাল বা ফাইনাল পর্যন্ত যেতে আমাদের তৃতীয় বা চতুর্থ শক্তির দলটাই যথেষ্ট। আর প্রথম দলটার প্রয়োজন বেশি বেশি ইরান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মত দলগুলার সাথে নিয়মিত প্রতিযোগীতা করা। সেটা পুরুষদের ফুটবলে সম্ভব না হলেও মেয়েদের ফুটবলে খুব সম্ভব। অস্ট্রেলিয়ার ছেলেদের অনুর্ধ্ব ১৯ দলটা বাংলাদেশের ছেলেদের অনুর্ধ্ব ১৯ দলের সাথে খেলতে ইচ্ছুক হবেনা। কারণ বাংলাদেশের দলকে হারানো বা প্রতিদ্বন্দীতাপূর্ণ ফুটবল থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ তাতে মিলবেনা। তবে মেয়েদের দলটার সাথে খেলার সুযোগ তাদের না নেয়ার কারণ নেই। কারণ সর্বশেষ মুখোমুখিতে আমাদের মেয়েরা প্রমাণ করেছিল তারা অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বমানের দলটার সাথে লড়াই করার যোগ্যতা রাখে। এ এফ সি কাপের বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগীতার চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেই ক্ষান্ত দেয়নি এদেশের মেয়েরা। মূল পর্বে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে ২-২ গোলে রুখে দেয়ার গল্পটা আন্তর্জাতিক মহলে মেয়েদের ফুটবলে বাংলাদেশকে চিনিয়েছিল।
২০১৮ সালেরএফ এফ সি অনুর্ধ্ব ১৭ মূল পর্বে লড়ছে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। ফটো ক্রেডিটঃ এ এন বি।
এখন পর্যন্ত তারা যে সঠিক পথেই আছে তার প্রমাণ এই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। অভিনন্দন মেয়েদের, কোচিং স্টাফদের, এবং বাফুফেকে। তবে এখন প্রয়োজন বাফুফের সত্যিকারের উদ্যোগ আর তৃপ্তির ঢেঁকুর বন্ধ করে সামনে তাকানোর। পুরুষ ফুটবলে বিশ্বমান অসম্ভব কল্পনা। কিন্তু নারী ফুটবলে তা হয়ত এখনও বাস্তবতা বিবর্জিত নয়। তবে এই সুযোগ বেশিদিন থাকবেনা বলাই বাহুল্য।
থাম্বনেইল এর জন্য বিশেষ ধন্যবাদ দ্য মুসলিম টাইমস বিডি ডট কম কে।
- 0 মন্তব্য