• ফুটবল

গারিঞ্চা - "A Alegria do povo/জনতার আনন্দ"

পোস্টটি ১৯০ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

১৯৫৮ বিশ্বকাপ জয়ের পর গারিঞ্চা তার ব্রাজিলিয়ান টিমমেটদের সেলিব্রেট করতে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল।একজনকে ডেকে জিজ্ঞেস করে বসলো,"কি হয়েছে?সবাই কিসের জন্য এরকম উদযাপন?"

 

তার সেই টিমমেট উত্তর দিলো,"তুমি আসলেই জানোনা?আমরা বিশ্বকাপ জিতে গিয়েছি,তাই এই উদযাপন!"

 

গারিঞ্চা আসলেই জানতনা যে সে বিশ্বকাপ জিতে গিয়েছে কারণ তখনকার ব্রাজিলিয়ান ঘরোয়া লিগের টাইটেল ডিসাইড হতো ৩ টা ফাইনাল ম্যাচের পর।আর গারিঞ্চা ভেবে নিয়েছিল যে বিশ্বকাপের ফরম্যাটও একই!

 

গারিঞ্চা নিয়ে আরো একটা সত্য গল্পঃ প্রচলিত আছে। গারিঞ্চা জানতেন না যে ফুটবল খেলে অর্থ উপার্জন করা যায়।টাকার জন্য তিনি কোনোদিন খেলেননি,খেলেছেন সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, খেটে খাওয়া মানুষের কর্মব্যস্ত জীবনে একটু আনন্দের খোরাক দিতে।

 

বন্ধুপ্রতিম ছিলেন খুব।ম্যাচের পর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতেন নিয়মিত,বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারবেন না দেখে ইউরোপের বেশ কিছু ক্লাবের অফারও নির্দ্বিধায় প্রত্যাখ্যান করেছেন।

 

গারিঞ্চা ছিলেন ফুটবলের সৌন্দর্য্যের পূজারী।সমসাময়িক পেলে যখন গোল দিয়ে সান্তোসের মাঠ মাতাচ্ছেন,গারিঞ্চা তখন গোল দেওয়া নিয়ে মাথাই ঘামাতেন না।পায় বল রেখে ডিফেন্ডার এমনকি গোলকিপারকে নাচানোই ছিলো গারিঞ্চার শখ।এক ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকের মতে,"পেলে ফুটবল খেলত গোলের জন্য,গারিঞ্চা ফুটবল খেলতো ফুটবলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য।"

 

মাঠের দর্শকরা গারিঞ্চার সাথে সবচেয়ে ভালো কানেক্ট করতে পারতো।গারিঞ্চা যতক্ষণ ড্রিবল করতো,দর্শকরা "ole ole" বলে চিৎকার করতো।ভালোবেসে জনতার কাছ থেকে পেয়েছিলেন "A Alegria do povo" নাম,যায় অর্থ দাড়ায় "জনতার আনন্দ"।

 

বিনাতর্কে ফুটবল ইতিহাসের সেরা ড্রিবলার গারিঞ্চা,পেলের পর ব্রাজিলের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ও বটে,নামের পাশে দুইটা বিশ্বকাপ আছে তার।পেলের চেয়ে কিছু কম করে যাননি ব্রাজিলের ফুটবলের জন্য কিন্তু তার নামটা কখনো উচ্চারিত হয়নি সমস্বরে।

 

ব্রাজিলের অলিগলি অবশ্য ভোলেনি "জনতার আনন্দ" কে।সেখানে গারিঞ্চা পেলের পাশেই থাকবে,ব্রাজিলের প্রতিটা প্রজন্মে একটা নেইমার, ভিনিশিয়াস, অ্যান্থনি আসবে গারিঞ্চার কথা আবার মনে করিয়ে দিতে।

 

নিজের জীবনে কখনো ফুটবলের জটিল দিকগুলো নিয়ে ভাবেননি গারিঞ্চা।৩৯ বছর আগে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন এই সারল্য নিয়েই।