• ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইংল্যান্ড সফর ২০২০
  • " />

     

    দর্শকশূন্য মাঠের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মনোবিদের দ্বারস্থ স্টুয়ার্ট ব্রড

    দর্শকশূন্য মাঠের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মনোবিদের দ্বারস্থ স্টুয়ার্ট ব্রড    

    দর্শকশূন্য মাঠ, বল-ব্যাটের শব্দ আর দুই-চারটা কন্ঠস্বর ছাড়া তেমন কিছু নেই। প্রাক-মৌসুম, বা প্রস্তুতি ম্যাচ হলে নাহয় মানা যায়, কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে এমন ‘নিস্তব্ধ’ কন্ডিশনে টেস্ট খেলাটা একটা চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে ক্রিকেটারদের জন্য, মানছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। নতুন কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে মনোবীদের দ্বারস্থ হয়েছেন এই পেসার, সঙ্গে মনে রাখছেন মায়ের দেওয়া উপদেশ-- ‘১২ বছর বয়সে ক্রিকেটকে যেভাবে দেখতে, এখন দেখো সেভাবেই!’

    এই গ্রীষ্মে প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পরে পাকিস্তান-- দুই দলের বিপক্ষে ছয়টি টেস্ট খেলবে ইংল্যান্ড, প্রতিটিই হবে ‘বায়ো-সিকিউর’ দর্শকশূন্য ভেন্যুতে। পাকিস্তানের সঙ্গে তিনটি টি-টোয়েন্টিও হবে একইভাবে। সিরিজ শুরুর আগে ব্রড অংশ নিয়েছেন তাদের এখনকার আবাস এজিয়েস বোউল থেকে, ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে। 
     


    অনুশীলনে স্টুয়ার্ট ব্রড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে/ইংল্যান্ড ক্রিকেট


    দর্শকশূন্য মাঠে খেলার চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন সেখানেই, “আমার মনে হয় দর্শক ছাড়া ম্যাচ খেলার অনুভূতি আলাদা হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এখন আগের চেয়ে বেশি একটা মানসিক পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে, আমি সেটা জানি। এরই মাঝে আমাদের মনোবীদের সঙ্গে কথা বলেছি আমি, যাতে করে নিজের সেরাটা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থায় থাকতে পারি।” 

    ভিন্ন পর্যায়ের ম্যাচের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতা তার কাজে দেয়, এমন বলেছেন তিনি, “আপনি যদি আমাকে একটা অ্যাশেজ ম্যাচ বা একটা প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে বলেন, আমি জানি কোথায় আমাকে বেশি ভাল পারফর্ম করতে হবে। আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচের জন্য আমার আবেগ কোথায় থাকতে হবে, সেটা জানি আমি। জুনের শুরুতে এসব নিয়েই কাজ করা শুরু করেছি আমি।” 

    ম্যাচে উত্তেজনাকর মুহুর্তে চাপের সঙ্গে নিজের সেরাটা বেরিয়ে আসে ব্রডের, “এটা আমার জন্য একটা চিন্তার ব্যাপার। কারণ আমি জানি, যখন চাপে পড়ি, তখনই সেরা পারফর্ম করি। যখন ম্যাচ অনেক উত্তেজনার একটা অবস্থায় থাকে। আর যখন আমার মনে হয় যে ম্যাচে কিছু হচ্ছে না, শুধু এগুচ্ছে, তখন ক্রিকেটার হিসেবে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় থাকি আমি।” 
     

    আরও পড়ুন- করোনাভাইরাসের পর ক্রিকেটে কোন দেশ কবে ফিরছে?


    এমন সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে নিজে নিজে একটা বলয় তৈরি করছেন ব্রড। নিজের আবেগকে উঁচুতে রাখতে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে দ্বৈরথের দিকে বেশি নজর দেবেন, তাদের শক্তি-দূর্বলতা নিয়েও বেশি করে ভাবছেন। আর মনে রাখছেন অনুশীলনে সাউথাম্পটনে আসার আগে তার মা মিচেলের বলা কথাটা। 

    “আমার মা আসার আগে বলেছিলেন, ‘নিজেকে ১২ বছর বয়সে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। যখন স্রেফ ক্রিকেট খেলার জন্য সবকিছু করতে তুমি’। আজ সকালে কফি হাতে একটা টেস্ট মাঠ দেখছিলাম আমি। ১২ বছর বয়সী আমাকে যদি কেউ এমন বলতো, হয়তো কফির কথা নয় (শুধু মাঠ দেখার কথা), আমি রোমাঞ্চে কাঁপতাম।” 

    “এটা মানসিকতার ব্যাপার, যে আমরা ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলছি। তবে ১২ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলার জন্য যে কোনও কিছুই করতেন আপনি। মনে আছে, যখন জানালার পর্দা সরিয়ে দেখতেন যে শনিবারে বৃষ্টি হচ্ছে? কেমন মন খারাপ হতো। এখন খেলার জন্য যে রোমাঞ্চ কাজ করে, সেই মানসিকতাটা আনতে হবে। এভাবে ভাবলে আসলে আপনি একটা শক্তি পাবেন।”

    এরকম সময়ে ক্রিকেটারদের সাফল্য-ব্যর্থতা ও এসবকে ঘিরে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে আরও নজর দিতে হবে, এমন মনে করেন ইংল্যান্ড ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটের মালিক, “আমাদের এমন পরিবেশে একে অপরের প্রতি বেশি খেয়াল রাখতে হবে। যুক্তরাজ্যে পরিবার-বন্ধুদের থেকে দূরে থাকা একটা অন্যরকমের ব্যাপার। কেউ যদি এই পরিস্থিতিতে খারাপ অবস্থার ভেতর দিয়ে যায়-- হয়তো একটা বাজে স্পেল, একটা বাজে দিন, বাজে সপ্তাহ-- তাহলে ক্রিকেট থেকে আপনার মুক্তি নেই। প্রথম বলেই আউট হবেন, এরপর ডিনারও করবেন এমন জায়গায় বসে, যেখান থেকে আপনি দেখতে পাবেন যে পিচ থেকে প্রথম বলেই আউট হয়ে ফিরে এসেছিলেন।”