• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগে : বদলে যাওয়া ফুটবলে ১০ বছর পর আবার সেমিতে বায়ার্ন-লিওঁ

    কিক অফের আগে : বদলে যাওয়া ফুটবলে ১০ বছর পর আবার সেমিতে বায়ার্ন-লিওঁ    

    কবে, কখন  
    লিওঁ-বায়ার্ন মিউনিখ
    চ্যাম্পিয়নস লিগ, সেমিফাইনাল
    ২০ আগস্ট, রাত ১.০০


    বায়ার্ন মিউনিখ চেলসিকে উড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই টুর্নামেন্ট ফেভারিট। সংশয়বাদী কেউ থেকে থাকলে বার্সেলোনার বিপক্ষে বায়ার্নের দাপট আর আধিপত্যের পর তারাও যোগ দিয়েছেন বায়ার্নের পক্ষে। বুন্দেসলিগা, ডিএফবি পোকাল জেতার পর ট্রেবলের হাতছানি এখন হানসি ফ্লিকের দলের সামনে। যদিও ২০১৩ এর সেই ট্রেবল জয়ী দলের সঙ্গে এখনও নিজেদের তুলনা দিতে চায় না বায়ার্ন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে গেলে হয়ত সেই ট্রেবলজয়ী দলকেও ছাপিয়ে যাবে বাভারিয়ানরা।

    মার্চের পর ফুটবল স্থগিত থাকার সময়টা বায়ার্ন কাজে লাগিয়েছে ভালোভাবে। খেলোয়াড়দের ফিটনেস সে কথাই বলছে। বায়ার্ন খেলোয়াড়রা যেভাবে একটানা বিরতিহীনভাবে প্রেস করে যাচ্ছেন তাতে যে কোনো দলেরই মাঠে নামার আগে ভয়ে থাকার কথা। রবার্ট লেভানডফস্কির গোলের ধারা, থমাস মুলারের ধারাবাহিক দুর্দান্ত রমডয়টার পারফরম্যান্স, আলফোন্সো ডেভিস আর জশুয়া কিমিখদের উইং দিয়ে আক্রমণ- এই বায়ার্ন দলের সবাই একেকজন ত্রাস প্রতিপক্ষের জন্য।  

    কিন্তু লিওঁই বা কেন ভয় পাবে? নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে তারা। সবশেষ ২০০৯-১০ মৌসুমে শেষ চারে উঠেছিল লিওঁ। সেবারও সেমিফাইনালে বায়ার্নই ছিল তাদের প্রতিপক্ষ। লিওঁ এরপর গত ১০ বছরে ইউরোপিয়ান ফুটবলের মানচিত্র থেকে একরকম হারিয়েই যেতে বসেছিল।

    এই শতাব্দীর শুরু থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত একটানা ৭ বার ফ্রেঞ্চ লিগ জিতেছিল লিওঁ। ২০১০ এ ইউরোপে সাফল্য, এরপর আর কখনও শিরোপা জেতা হয়নি ফ্রান্সের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির। এরপর তো ফ্রান্সে পিএসজির উথানের পর অনেকটা ‘সামরিক শাসনই’ চলছে। অন্ধকার সময় যে এতো দ্রুত লিওঁ কাটিয়ে উঠবে সেটা অনুমান করতে পারেননি খোদ ক্লাব কর্তারাও। মৌসুমের শুরুতে সিলভিনহো ছিলেন লিওঁর কোচ। অক্টোবরে বরখাস্ত হলেন তিনি, এলেন রুডি গার্সিয়া। তিনি আবার মার্শেইয়ের কোচ ছিলেন এর আগে তিন বছর। পিএসজি ২০১১ সালে কাতারি মালিকানা পাওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্রেঞ্চ লিগে সবচেয়ে বেশি আলো কাড়ত  লিওঁ আর মার্শেই লড়াই। এই দুই ক্লাবের রেষারেষি অবশ্য এখনও আছে আগের মতো। গার্সিয়ার আগমন তাই লিওঁতে স্বস্তি যোগাতে পারেনি।
     
    লাইপজিগ, লিওঁ, জেনিট, বেনফিকা পড়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের একই গ্রুপে। কে ভেবেছিল এই গ্রুপ থেকেই দুই সেমিফাইনালিস্ট দেখবে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ! লাইপজিগের চেয়ে লিওঁর কাজও ছিল তুলনামূলক কঠিন। দ্বিতীয় রাউন্ডে জুভেন্টাস, কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যা ন সিটি- দুই টুর্নামেন্ট ফেভারিটকে বাদ করে দিয়ে লিওঁ এখন জায়ান্ট কিলার। মার্চের পর ফ্রান্সে লিগ স্থগিত হয়ে যাওয়ার সময় পয়েন্ট টেবিলের সাতে ছিল লিওঁ। পরেরবার তাই ইউরোপের কোনো প্রতিযোগিতায় খেলা হবে না তাদের। একমাত্র চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলেই পরের রাউন্ডে দেখা যাবে তাদের। মাত্র দুই ম্যাচের ব্যাপার হলেও, সেই আশা খোদ লিওঁ সমর্থকেরাও করছেন না হয়ত।

    তবে আশাহত হওয়ার কিছু নেই লিওঁর, বায়ার্নকে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। লিওঁ অনেকটুকুই পাওয়া হয়ে গেছে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে। গার্সিয়ার ৩-৫-২ ফর্মেশন নজর কেড়েছে। মার্সেলোর নেতৃত্বে সলিড থ্রি ম্যান ব্যাকলাইন, উইংব্যাক হিসেবে মার্সেল কর্নেটের গতি, কঠোর পরিশ্রমী ৩ মিডফিল্ডারের সঙ্গে অধিনায়ক মেমফিস ডিপাই আর মুসা ডেম্বেলের ধারালো আক্রমণভাগ স্থিতিশীলতা দিয়েছে লিওঁকে।      

    দলের খবর
    বেঞ্জামিন পাভার্দ চোট থেকে ফিরে অনুশীলন করেছেন। তবে এই ম্যাচেও তার একাদশে থাকার সম্ভাবনা কম। কিমিখ যেভাবে খেলছেন তাতে পাভার্দের আসলে দরকারও নেই বায়ার্নের। ইভান পেরিসিচ বার্সার বিপক্ষে দারুণ খেলেছেন, তবে কিংসলে কোমানও ফিরতে পারেন তার জায়গায়। তবে বায়ার্নের একাদশ অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।

    লিওঁর ডেম্বলে সিটির বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন। তবে একামবি আর ডিপাইয়ের ফ্রন্টলাইনটাই জমেছে ভালো। ডেম্বলেকে তাই সাইডবেঞ্চে হয়ত শুরু করতে হবে আবার। তাদের একাদশেও পরিবর্তন থাকার সম্ভাবনা কম।

    সম্ভাব্য একাদশ
    লিওঁ

    লোপেস, মার্সেলো, ডিনায়ের, মার্সাল, দুবইস, কাকেরেত, গুইমারেস, আওয়ার, কর্নেট, একাম্বি, ডিপাই

    বায়ার্ন মিউনিখ
    নয়্যার, কিমিখ, বোয়াটেং, আলাবা, ডেভিস, থিয়াগো, গোরেতস্কা, কোমান, মুলার, গ্যানাব্রি, লেভানডফস্কি


    প্রেডিকশন
    লিওঁ ০-৩ বায়ার্ন মিউনিখ