২২ গজের সেলুলয়েড : 'রয়'ময় ম্যাচ
‘ওয়াইড অব দ্যা অফ’
ওভার দ্য উইকেটে বল করছিলেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। প্রথম বলটা করলেন অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে, হলো ওয়াইড। দ্বিতীয় বলটাও অফস্ট্যাম্পের বাইরে, এবার ওয়াইড হলো না অবশ্য। মানরো অবশ্য চুপচাপই থাকলেন। পরের বলটাও অফস্ট্যাম্পের বাইরে, মানরো এবার তাড়া করতে গেলেন! থার্ডম্যানে উঠলো ক্যাচ, মঈন আলী ধরলেন ঠিকঠিকই! ৩২ বলে ৪৮ রান করে উড়ছিলেন মানরো, প্লাঙ্কেট তাঁকে নামিয়ে আনলেন মাটিতে, ওই ‘ওয়াইড’ বল দিয়েই!
গোল্ডেন ডাক
আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে মোহাম্মদ নবীর বলে হয়েছিলেন বোল্ড, প্রথম বলেই। সেমিফাইনালে ব্যাট করতে নামলেন, এবার ইশ শোধির বলে হলেন এলবিডাব্লিউ। আবার প্রথম বলেই! এউইন মরগান, স্পিন আর গোল্ডেন ডাক, যেন একসুতোয় গাঁথা দুই ম্যাচ ধরেই!
বৈপীরত্য-১
প্রথম ছয় ওভারে নিউজিল্যান্ড তুলেছিল ৫১ রান। ১০ ওভারে এক উইকেটে করলো ৮৯। সেই নিউজিল্যান্ডই পরের ১০ ওভারে তুলতে পারলো মাত্র ৬৪ রান! শেষ ওভারে এলো ২০, একটি মাত্র বাউন্ডারি! শেষ ওভারের চিত্র আরও বিবর্ণ, ৩ রান তুলতেই যে ২ উইকেট হারালো কিউইরা!
বৈপীরত্য-২
শেষ দশ ইনিংসে গাপটিল-উইলিয়ামসন আটবার করেছিলেন ৫০ এর বেশী রান। আজ ১৭ রানেই নেই গাপটিল। আগের ম্যাচে ৪ রানেই আউট হয়েছিলেন অ্যালেক্স হেলস, সেই হেলস আজ যখন আউট হলেন, জ্যাসন রয়ের সঙ্গে ততক্ষণে ৮২ রান তুলে ফেলেছেন!
জ্যাসন রয় থামলেন ৭৮ রান করে, ততক্ষনে ম্যাচ তো হয়ে গেছে ‘রয়’ময়!
বাটলারের, রুট, বাটলার
আগের ওভারের পঞ্চম বলে গ্রান্ট এলিয়টকে রিভার্স সুইপ করেছিলেন জস বাটলার। আগের দুই ওভারে বাউন্ডারি হয়নি, চাপটা যেন উল্টো সুইপে দূরে ঠেলে দিলেন বাটলার। পরের ওভারের প্রথম বলেই সোধিকে বাউন্ডারি মারলেন জো রুট, ওই রিভার্স সুইপেই। সোধির সে ওভারেই পরে এলো আরও ১৮ রান! ইংল্যান্ড আর ফাইনালের মাঝে রইলো শুধুই ‘আনুষ্ঠানিকতা’!
চারে শুরু, ছয়ে শেষ
ম্যাচের প্রথম বলেই ডেভিড উইলিকে চার মেরেছিলেন মার্টিন গাপটিল।
দিনটা হবে নিউজিল্যান্ডের, এমনই কি মনে হয়েছিল! যে স্পিন নিউজিল্যান্ডের শক্তি হয়ে উঠেছিল, সেই স্পিনই সামলালেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা, দাপটের সঙ্গেই। এর আগে কিউই ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগে রানের লাগাম টেনে ধরেছিলেন ইংলিশ বোলাররা। যে ম্যাচে ‘ফেবারিট’ ছিল নিউজিল্যান্ড, সে ম্যাচটাই ইংল্যান্ড জিতলো ১৭ বল ও ৭ উইকেট বাকী রেখে!
ম্যাচের শেষটা করলেন বাটলার, মিচেল স্যান্টনারকে ছয় মেরে!
শতভাগ
এর আগে দুই দলই সেমিফাইনাল খেলেছিল একবার করে। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে হেরেছিল নিউজিল্যান্ড। ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড, হয়েছিল চ্যাম্পিয়নও। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড, দুই দলই এসে মিলেছিল একই বিন্দুতে, দিল্লীর ফিরোজ শাহ কোটলায়।
ইংল্যান্ড জিতে সেমিফাইনাল জেতার হারটা রাখলো শতভাগেই, নিউজিল্যান্ড হেরেও করলো একই কাজ!