উমেশ-রাহানেতে চড়ে জয় দিয়ে শুরু কলকাতার 'শ্রেয়াস যুগ'
চেন্নাই-কলকাতা, ওয়াঙ্খেড়ে (টস-কলকাতা/ফিল্ডিং)
চেন্নাই সুপার কিংস- ১৩১/৫, ২০ ওভার (ধোনি ৫০*, উথাপ্পা ২৮, জাদেজা ২৬*, উমেশ ২/২০, বরুণ ১/২৩, রাসেল ১/৩৮)
কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৩৩/৪, ১৮.৩ ওভার (রাহানে ৪৪, বিলিংস ২৫, রানা ২১, ব্রাভো ৩/২০, স্যান্টনার ১/৩১)
ফলাফল: কলকাতা ৬ উইকেটে জয়ী
গতবারের ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়নে এবার শেষ হাসি হাসল কলকাতা। নিজেকে ফিরে পাওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনির অপরাজিত ফিফটির পর চেন্নাইয়ের লড়াকু পুঁজি কলকাতা টপকে যায় সহজেই। নতুন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বকাল তাই শুরু হল দারুণ এক জয় দিয়েই।
উড়ন্ত উমেশের পর বরুণ-নারাইনের দুর্বোধ্য স্পেল
প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে কলকাতার পেস ব্যাটারির নেতৃত্বের দায়ভার ছিল উমেশ যাদবের কাঁধে। নতুন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে দারুণ এক ওপেনিং স্পেল উপহার দিলেন সেই উমেশই। গতবারের অরেঞ্জ ক্যাপ জয়ী রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে ফেরান প্রথম ওভারেই। ডেভন কনওয়ের আইপিল অভিষেকের আনন্দ পন্ড করে দেন ৫ম ওভারে। পাওয়ারপ্লেতেই ৩ ওভার করে ওই দুই উইকেটের বিনিময়ে রান খরচ করেন মোটে ১২! রবিন উথাপ্পার প্রতি আক্রমণে তবুও চেন্নাই তোলে ৩৫ রান।
উথাপ্পা অবশ্য থামেন আরেক অভিষিক্ত ভারতীয় উইকেটকিপার শেল্ডন জনসনের বিদ্যুৎ গতিতে করা স্ট্যাম্পিংয়ে; শিকারি গত মৌসুমে কলকাতার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বরুণ চক্রবর্তী। সুনীল নারাইনের সাথে জুটি বেঁধে কলকাতার এই রহস্যময় স্পিন জুটি কোণঠাসা করে রাখে চেন্নাইয়ের ব্যাটারদের। ১১ ওভারে মোটে ৬১ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৫ উইকেট।
ধোনির মাহেন্দ্রক্ষণে সহযোগী জাদেজা
চেন্নাই একশো পেরোতে পারবে কি না সেটাই যখন চিন্তার বিষয় তখন উইকেটে সদ্য সাবেক অধিনায়কের সাথে ব্যাট করছেন নব নিযুক্ত অধিনায়ক। গত দুই মৌসুমের সেই অচেনা ধোনিি যেন মনে হচ্ছিল দেখা দেবে এদিনও। বয়সের ভারে নুহ্য ধোনি বেশ কয়েকবার ভোগানো বরুণ সেই সুযোগ নিলেন ধোনি। সেই চাপে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে থাকা রবীন্দ্র জাদেজাও যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। ১৫.৩ ওভারে ৪৯ বল পর ধোনির হাত থেকে আসে প্রথম বাউন্ডারি-ব্যাট হাতে এই দুজনের ধকল এটুকুতেই স্পষ্ট। তবে বছরের পর বছর ধোনি যা করে এসেছেন, অধিনায়কত্ব ছেড়ে ভারমুক্ত হয়ে সেই জাদুর স্পর্শ যেন খুঁজে পেলেন তিনি ইনিংসের শেষার্ধে। ২৫ বলে ১৫ রানে থাকা ধোনি ১৮তম ওভারে গিয়ার পাল্টালেন আন্দ্রে রাসেলকে ৩ চার মেরে। এরপরে মাভিকেও নিলেন এক হাত। শেষ ওভারে আবারও রাসেলকে মোকাবেলা করার সুযোগ পেয়ে টানা দুই চারে ৩৮ বলে পূর্ণ করলেন ফিফটি, যা ২০১৯ মৌসুমের পর তাঁর প্রথম! শেষ বলে জাদেজা ছয় মিলে দুজনের জুটি পূর্ণ করে ৭০ রান; চেন্নাই পায় ১৩১ রানের পুঁজি।
ভিন্ন ফরম্যাট, ভিন্ন রাহানে
ফর্মহীনতার কারণে সহ-অধিনায়কত্ব হারানোর পর হারিয়েছেন টেস্ট দলে জায়গা; আজিঙ্কিয়া রাহানের তাই জবাব দেওয়ার ছিল অনেক কিছুই। ফরম্যাট ভিন্ন হলেও সেই সুযোগ হাতছাড়া করলেন না তিনি। ভেঙ্কটেশ আইয়ারের সাথে পাওয়ারপ্লেতে তুলে ফেলেন ৪৩ রান।
অন্য প্রান্তে ফাটল ধরিয়েছিলেন ডোয়াইন ব্রাভো। আইয়ারকে ফেরানোর পর ২১ রানে ফিরিয়েছিলেন নিতিশ রানাকেও। পরে স্যাম বিলিংসকে ফিরিয়ে আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির আসনে লাসিথ মালিঙ্গার সাথে ভাগ বসিয়েছেন তিনি (১৭০* উইকেট)। রাহানে অবিচল থেকে এগুচ্ছিলেন নিজ গতিতে। লক্ষ্য তেমন বড় না হওয়ায় তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যাননি। ফিফটির দ্বারপ্রান্তে এসে অবশ্য মিচেল স্যান্টনারের বলে জাদেজাকে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে ফিরে যান ৪৪ রানে। ‘নতুন নাইট নেতা’ শ্রেয়াস আইয়ার এরপর অবশ্য বিলিংসের ২৫ রানের পর দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন ২০ রানে অপরাজিত থেকেই।