• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    কেন রান পাচ্ছেন না কোহলি?

    কেন রান পাচ্ছেন না কোহলি?    

    রানের জন্য হাপিত্যেশ করছেন বিরাট কোহলি। ক্রিকেট মাঠের অবাক করা দৃশ্যগুলোর মধ্যে এটি একটি। টানা আড়াই বছর ধরে সেঞ্চুরি নেই তার। আইপিএলেও রান ভাগ্য খুলছে না। এবারের আসরেই টানা দুই ম্যাচে ফিরেছেন কোনো রান না করে। আইপিএল ক্যারিয়ারে প্রথমবার টানা দুই গোল্ডেন ডাক। আইপিএলের মঞ্চে শেষ কবে এমন বিবর্ণ ছিলেন, কোহলি নিজেও হয়তো মনে করতে পারবেন না।

     

    শুরুটা ভালো হলেও ৯ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১২৮ রান। কেন রান পাচ্ছেন না কোহলি? যুদ্ধটা কি মানসিক? টেকনিক্যাল কোনো ত্রুটি? নাকি টানা খেলার শারীরিক অবসাদ?

    কেভিন পিটারসেন কোহলিকে বলছেন খানিকটা ‘চিল’ করে নিতে। সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী চান কোহলি কদিনের বিরতি নিক। যার হাত ধরে কোহলির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু, সেই দিলীপ বেঙ্গসরকারও বলছেন, ক্লান্তিতে পেয়ে বসেছে কোহলিকে। অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে কোহলিকে নির্বাচন করেছিলেন তৎকালীন প্রধান নির্বাচক দিলীপ বেঙ্গসরকার। 

    এবারের আইপিএলের আগেই ছেড়ে দিয়েছেন আরসিবির অধিনায়কত্ব। তবুও ব্যাটে রান নেই কোহলির। কী ভাবছে আরসিবি ম্যানেজমেন্ট? দলের  প্রধান কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার এ নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন।  সোজাসাপটা উত্তরে কোহলির পাশেই দাঁড়িয়েছেন তিনি।  বলেছেন, ‘এখনো সে বিবর্ণ হয়ে যায়নি।'

    কোহলির ৮ম ম্যাচের ডিসমিসাল দুটো খেয়াল করলে দেখা যায়, ৮ম ম্যাচে হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে আউট হয়েছিলেন মার্কো ইয়ানসেনের বলে দ্বিতীয় স্লিপে এইডেন মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে। অমন লেংথের বল দেখে কোহলি সহজাত স্টাইলেই ড্রাইভ করেছিলেন। ফ্রন্টফুট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে চলে যায় বলের লাইনে, হাত দুটো শরীরের বাইরে। ডানহাতিদের বিপক্ষে ইয়ানসেনের পাওয়া কৌণিক ডেলিভারির মুভমেন্টে আটকা পড়েন কোহলি। এরপর দ্বিতীয় স্লিপে মার্করামের তালুবন্দি হন তিনি।লক্ষনৌর বিপক্ষে এর আগের ম্যাচেও শরীরের বাইরের বল খেলতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন আরসিবির সাবেক অধিনায়ক। হায়দ্রাবাদ ম্যাচের সাথে পার্থক্য ছিল কেবল ডেলিভারির লেংথে।

    ফাস্ট বোলারদের এমন লেংথের বলে কোহলি বরাবরই সপ্রতিভ, বিশেষ করে ফুল লেংথের বলে কভার ড্রাইভ শটে।২০১৮ সালের শুরু থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোহলির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭৮ রান এসেছে কভার ড্রাইভ থেকেই। এই শট একই সাথে তার শক্তি-দুর্বলতা দুটোই। 

    আগের লাইনটার পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে হায়দ্রাবাদের বিপক্ষের সেই ম্যাচটি। কারণ একই শটে দেশের বাইরের ম্যাচগুলোতে তার গড় কমেছিল চোখে পড়ার মতো। ফাস্ট বোলারদের বিপক্ষে কভার ড্রাইভে কোহলির গড় ৬৪.২৫ থেকে নেমেছিল ১৮.৫০-এ। 

    সময় যত গিয়েছে, নিজের পছন্দের শটটা খেলতে গিয়ে কোহলি আউটও হয়েছেন দ্রুত। যত দিন গিয়েছে কোহলির ক্রিকেট সত্ত্বাও আরো বিশাল হয়েছে। ক্রিকেটার হিসেবে সেই গ্রেটনেস কিংবা অহংয়ের একটি জায়গাও কভার ড্রাইভ, অফ ড্রাইভ। সেখানে বল করা মানে, কোহলিকে চ্যালেঞ্জ করা। ইয়ানসেন-চামিরাদের করা সেই চ্যালেঞ্জটা উতরাতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন কোহলির মতো ব্যাটার। সাথে মানসিক ক্লান্তি, অবসাদের ধকল তো আছেই দুইয়ে মিলে রানের জন্য খাবি খাচ্ছেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।