সমতায় শেষ হওয়া এক দিনে মুশফিকের দৃঢ়চেতা ইনিংসের পরেও ‘অতীত’-এর ছোঁয়া
২য় টেস্ট, মিরপুর (টস- শ্রীলঙ্কা/ ব্যাটিং)
বাংলাদেশ- ৩৬৫ , ১১৬.২ ওভার ( মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১, তাইজুল ১৫, রাজিথা ৫/৬৪, আসিথা ৪/৯৩)
শ্রীলঙ্কা- ১৪৩/২, ৪৬ অভার (করুনারত্নে ৭০*, ওশাদা ৫৭, কুসাল ১১, সাকিব ১/১৯, এবাদত ১/৩১)
২য় দিন, স্টাম্পস
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে লজ্জার ঘটনা কম নেই। পেছনে ফেলে আসা সেসব দিনকে বিদায় জানিয়ে বিশেষ করে এই ২০২২ সালে বাংলাদেশ লিখেছে বহু নতুনের, ঘুরে দাঁড়ানোর উপাখ্যান। মিরপুরে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসটাও সেরকমই; তবে তারই মাঝে যেন উঁকি দিয়ে গেল অতীত। অতীতের ছোঁয়াতেই দ্বিতীয় দিন শেষে টেস্টে আছে সমতা।
সমতা ফিরিয়ে আনার কাজে বড় অবদান ছিল দিনের শেষাংশে শ্রীলঙ্কান ওপেনিং জুটির দুজনের দুই মেরুর ব্যাটিং। ওশাদা ফার্নান্দো যেমন সুযোগ দিয়েছেন, অন্য প্রান্তে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ছিলেন একেবারেই অনড়। ওশাদা ফিফটি পূর্ণ করার পর এবাদত হোসেনের শিকার হয়ে ফিরে গেলেও ৭০* রানে থেকে দিন শেষ করেছেন করুনারত্নে; এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ যার ধরা হয়নি বাংলাদশের ভুল সিদ্ধান্তে।
দিনের শুরুতে এরকম ভুল না করলেও পস্তানোর মত কাজ বাংলাদেশ কম করেনি। গতকাল ১৩৫ রানে থাকা লিটন দাস কাসুন রাজিথার শিকার হয়ে ফিরলেন ১৪১ রানে। এরপর মুশফিক এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়েছেন একাই। অন্য প্রান্তে উইকেট আসা যাওয়ার মিছিল যে শুধু ছিল তাই নয়, ছিল রানের খাতা খুলতে না পারার ব্যর্থতা।
সেই মিছিলের মাঝেই একা লড়ে গেলেন মুশফিক, দিলেন সকল সমালোচনার দাঁতভাঙা জবাব। নিজের প্রিয় শট খেলা নিয়ে যখন এতটাই সমালোচনা, সেই শটকে যেন একেবারেই বিসর্জন দিলেন। একাগ্রচিত্তে একের পর এক বলের মুখোমুখি হয়ে প্রায় প্রতিবার বেঁছে নিয়েছেন সময়োপযোগী সব শট। শেষদিকে সঙ্গীর অভাব হলেও দ্রুত রান করার তাগিদে বেঁছে নিয়েছেন খারাপ বলগুলোকেই। বাংলাদেশ শেষ ৫ উইকেট যে হারাল, তার মধ্যে রান উঠেছে ৮৮।
আর মোসাদ্দেক হোসেন, খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এক টেস্ট ইনিংসে তাই প্রথমবারের মত একমাত্র দেশ হিসেবে দ্বিতীয়বারের মত ৬ ব্যাটারের শুন্য রানে ফিরে যাওয়ার নজির স্থাপন করল বাংলাদেশ, ফিরিয়ে আনল অতীতকে। টেস্ট ইতিহাসে ৬ষ্ঠ বারের মত এই ঘটনা ঘটায় মুশফিকের ১৭৫* রানের ইনিংসটাও হয়ে থেকেছে এরকম অবস্থানে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। মুশফিকের এই ইনিংসটা না হলে হয়ত দিনশেষে জোর গলায় সমতায় থাকার কথাটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারত না বাংলাদেশ শিবির।