• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    অক্ষর-ললিত তাণ্ডবলীলায় দিল্লির শেষ হাসি

    অক্ষর-ললিত তাণ্ডবলীলায় দিল্লির শেষ হাসি    

    দিল্লি-মুম্বাই, মুম্বাই (টস-দিল্লি/ফিল্ডিং)
    মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স- ১৭৭/৫, ২০ ওভার (কিষাণ ৮১*, রোহিত ৪১, তিলক ২২, কুলদিপ ৩/১৮, খলিল ২/২৭)
    দিল্লি ক্যাপিটালস- ১৭৯/৬, ১৮.৩ ওভার (ললিত ৪৮*, অক্ষর ৩৮*, পৃথ্বী ৩৮, থাম্পি ৩/৩৫, আশ্বিন ২/১৪, মিলস ১/২৬)
    ফলাফল: দিল্লি ৪ উইকেটে উইকেটে জয়ী

     

    পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাইকে হতাশ করে দারুণ এক জয়ে এবারের মৌসুম শুরু করল দিল্লি। ইশান কিষাণ-রোহিত শর্মার ঝড়ো শুরুর পর সেই ধারা বজায় রেখে লম্বা ইনিংস খেলেছিলেন কিষাণ। ৭২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসা দিল্লিকে এরপর যখন বড় পরাজয় চোখ রাঙাচ্ছিল তখনই ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে ঝড় তুলে হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেন অক্ষর পাটেল-ললিত যাদব; রিকি পন্টিংয়ের মুখে ফুটিয়ে তোলেন জয়ের হাসি।

    কিষাণের ‘ক্যারি দ্যা ব্যাট’

    বেশ কয়েক মৌসুম ধরেই কিষাণ মুম্বাই শিবিরে থাকলেও এবারই প্রথম তাকে নিয়মিত ওপেনার হিসেবে খেলানোর ঘোষণা দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। রহিতের আস্থার প্রতিদান দিয়ে কিষাণ খেলছিলেন দারুণ; পিছিয়ে ছিলেন না রোহিত নিজেও। দুজনে মিলে পাওয়ারপ্লেতে তুলে ফেলেন ৫৩ রান। তবে নবম ওভারে গিয়ে রোহিত থামেন ৪১ রানে; ভাঙে ৬৭ রানের ওপেনিং জুটি। এরপর মাঝে খেই হারিয়ে ফেললেও কামলেশ নাগারকোটির ১৩তম ওভারে ৩ চার মেরে গিয়ার পাল্টান কিষাণ। শেষ পর্যন্ত ৪৮ বলে ৮১ রানে অপরাজিত থেকে মুম্বাইকে বড় সংগ্রহ এনে দেন তিনি।

    কুলদিপ-ভেল্কি

    রোহিত-কিষাণ জুটি যখন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল তখনই ঋষাভ পান্ট তাকে আক্রমণে আনেন। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই রোহিতকে ফিরিয়ে পান্টের আস্থার প্রতিদান দেন কুলদিপ।  উইকেটে নবাগত আনমোলপ্রিত সিং তো তাকে পড়তেই পারছিলেন না। ফলস্বরূপ পরের ওভারে কুলদিপের কাছেই উইকেট খুইয়ে ফেরেন তিনি। ১৬তম ওভারে যখন নিজের শেষ ওভার করতে এলেন কুলদিপ তক্ষণ মুম্বাই বড় সংগ্রহের দিকে এগুচ্ছে দারুণভাবে। তখনই তিনি ফেরালেন ভয়ঙ্কর কাইরন পোলার্ডকে, দিলেন মোটে ৫ রান। নিজেকে হারিয়ে খোঁজা কুলদিপ নতুন জার্সি চড়িয়ে যেন ফিরে পেলেন তার পুরনো ভেল্কি।  

    অক্ষর-ললিতের ‘ম্যাচ ছিনতাই’

    নতুন ওপেনিং সঙ্গী টিম সাইফার্টকে নিয়ে আরও একবার বিস্ফোরক শুরু করেছিলেন পৃথ্বী শ। তবে চতুর্থ ওভারে মুরুগান আশ্বিনের জোড়া আঘাতে ছেঁদ পরে আক্রমণের ধারায়। এক প্রান্ত আগলে রেখে শ যখন দিল্লির রানতাড়াকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বাসিল থাম্পি এসে হানেন জোড়া আঘাত। ৩৮ রানে শকে ফেরানোর পর দিল্লি অভিষেকে রানের খাতা খোলার আগে রভম্যান পাওয়েলকে ফেরান থাম্পি। ৭২ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসা দিল্লিকে তখন বড় ব্যবধানে হারানোর স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন রোহিত।

    তাতে প্রথম বাগড়া বাঁধালেন শার্দুল ঠাকুর; এসেই শুরু করলেন প্রতি আক্রমণ। অন্য প্রান্তে থাকা ললিত যাদব তখন উইকেট না দেওয়ায় বদ্ধপরিকর।  বুমরাহকে তিন চার মেরে শুরু করা ঠাকুরের ১১ বলে ২২ রানের ক্যামিও থামে থাম্পির কাছেই। তবে ওই ওভারের শেষ বলেই ছয় মেরে ললিত যখন গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দিলেন, উইকেটে আসা অক্ষর পাটেলও যেন সেখানেই তাঁর দায়িত্ব বুঝে নিলেন।  

    বুমরাহর করা ১৬তম ওভারে দুজন মিলে ১৬ রান নিয়ে শুরু করেন তান্ডব। এরপর ড্যানিয়েল স্যামসকে ১৮তম ওভারে রীতিমত কচুকাটা করে ৩ ছয় ও ১ চারে দুজনে মিলে নেন ২৪ রান। অক্ষরের ১৭ বলে ৩৮* রানের প্রতি আক্রমণের সাথে অন্য প্রান্তে ললিতের ৩৮ বলে ৪৮* রান যেন ছিল নিখুঁত গাণিতিক হিসেবে ঠাণ্ডা মাথায় ম্যাচ ছিনিয়ে নেওয়ার আদর্শ এক উদাহরণ।