• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    রানের পাহাড়ে হায়দ্রাবাদকে পিষ্ট করে দাপুটে জয়ে শুরু স্যামসনদের রাজস্থানের

    রানের পাহাড়ে হায়দ্রাবাদকে পিষ্ট করে দাপুটে জয়ে শুরু স্যামসনদের রাজস্থানের    

    হায়দ্রাবাদ-রাজস্থান, পুনে (টস-হায়দ্রাবাদ/ফিল্ডিং)
    রাজস্থান রয়্যালস- ২১০/৬, ২০ ওভার (স্যামসন ৫৫, পাডিক্কাল ৪১, হেটমায়ার ৩২, মালিক ২/৩৯, নাটারাজান ২/৪৩, ভুবনেশ্বর ১/২৯)
    সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ- ১৪৯/৭, ২০ ওভার (মার্করাম ৫৭*, সুন্দর ৪০, শেফার্ড ২৪, চেহেল ৩/২২, কৃষ্ণ ২/১৬, বোল্ট ২/২৩)
    ফলাফল: রাজস্থান ৬১ রানে জয়ী

     

    ব্যাটে-বলে প্রায় নিখুঁত এক ম্যাচই খেলল সাঞ্জু স্যামসনের দল। অধিনায়ক নিজে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে পথ দেখিয়েছিলেন; সেই পথে হেটে দেবদূত পাডিক্কাল ও শিমরন হেটমায়ার রাজস্থানকে এনে দিয়েছিল এই মৌসুমের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। পরে প্রাসিধ কৃষ্ণা, ট্রেন্ট বোল্ট, যুজবেন্দ্র চেহেলদের দৌরাত্মে রীতিমত খাবি খেয়েছে হায়দ্রাবাদ।

    বাটলারে চালু রানের চাকা, স্যামসন-পাডিক্কালে সচল

    বিজয় হাজারে ট্রফির পর গত আইপিএলেও আলো ছড়ানো দেবদূত পাডিক্কালকে এবার দলে ভিরিয়েছিল রাজস্থান। সচরাচর ওপেন করা পাডিক্কালকে একাদশে রাখা হলেও তাদের গত আসরের ওপেনিং জুটি জস বাটলার-ইয়াশাসভি জাইসওয়ালকে দিয়েই এবারও শুরু করে তারা। নিরাশ করেনি এই জুটি। দুজনে মিলে পাওয়ারপ্লেতে তুলে ফেলে ৫৮ রান। পাওয়ারপ্লের পরের বলেই জাইসওয়াল ফিরলে সেই চাপে হঠাৎই রানের জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকেন বাটলার। যেই উমরান মালিককে তুলোধোনা করে তার প্রথম ওভারে ২১ রান তুলেছিল এই জুটি, ওই চাপের পরিক্রমায় ওই মালিকেরই বাড়তি গতিতে পরাস্ত হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় বাটলারের ২৮ বলে ৩৫ রানের ইনিংস।

    তবে তাদের গড়ে দেওয়া ভিতকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি রাজস্থান অধিনায়ক। আর ওপেন করতে না পারলেও চারে নেমে অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ওই পাডিক্কাল। দুই উইকেট পড়ায় গুটিয়ে না গিয়ে স্যামসন বরং প্রতি আক্রমণে যান; কাজটা আরও সহজ করে দেন পাডিক্কালের জন্য।। প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি তুলে নেওয়া এই জুটিকে বেগ পেতে হয়েছে শুধুমাত্র দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো মালিকের বলেই। নিজের স্পেলের শেষ বলে সেই মালিকের কাছেই স্টাম্প খুইয়ে শেষ হয় পাডিক্কালের ২৯ বলে ৪১ রানের ইনিংস। পাডিক্কাল না পেলেও স্যামসন মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই পেয়ে যান ফিফটি, ২৫ বলে। ভুবনেশ্বরের করা পরের ওভারের প্রথম বলেই অবশ্য শেষ হয় রাজস্থান অধিনায়কের ২৭ বলে ৫১ রানের ইনিংস।

    হেটমায়ারের তান্ডবলীলা

    শিমরন হেটমায়ারকে যেই আশায় এবার দলে ভিড়িয়েছে রাজস্থান, প্রথম ম্যাচেই তা করে দেখানোর জন্য তার সামনে মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। আর কী দারুণভাবেই না মঞ্চের সদ্ব্যবহার করলেন তিনি। ১৫তম ওভার শেষে যখন উইকেটে এলেন তখন রাজস্থানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৪৮ রান। অন্য প্রান্তে স্যামসন ঝড় তুলে এক ওভার পরেই যখন ফিরে গেলেন তখন তিনি খেলতে পেরেছেন মোটে ১ বল। এরপর ২২ গজে যেই ঝড় তুললেন তাতে রাজস্থানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বরতদের মুখের হাসি কেবল চওড়া করবে। দুই ওভারের মধ্যেই হাঁকালেন ৩টি ছয়। শেষ ওভারে থামার আগে মাত্র ১২ বলেই করেছেন ৩২ রান; যার বদৌলতে রাজস্থান গড়তে পেরেছিল রানের পাহাড়।

    কৃষ্ণা-বোল্টে খনন; চেহেলে হায়দ্রাবাদের সমাধি

    পাওয়ারপ্লেতে রাজস্থানের নতুন পেস জুটি খুড়ে ফেলেন হায়দ্রাবাদের সমাধি। দুজনেই দিয়েছেন একটি করে মেইডেন, নিয়েছেন ৩টি উইকেট। কৃষ্ণা তো ছিলেন এক কথায় দুর্বোধ্য; পাওয়ারপ্লেতে তিন ওভার করে মাত্র ২ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন ২টি উইকেট। বোল্টও ছিলেন না পিছিয়ে, ৮ রান খরচায় রানের খাতা খোলার আগেই ফিরিয়েছেন গতবার দুর্বিষহ এক মৌসুম কাটানো নিকোলাস পুরানকে। পাওয়ারপ্লে শেষ এই দুজনের বদৌলতে ৩ উইকেট খুইয়ে হায়দ্রাবাদ তোলে মোটে ১৪ রান; যা আইপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বনিম্ন।

    সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে স্পিন জাল বোনেন চেহেল। দল বদলেছেন, তবে তিনি যে বদলাননি তার প্রমাণ দিলেন প্রথম ওভারেই অভিষেক শর্মাকে ফিরিয়ে। এরপর আব্দুল সামাদ ও রোমারিও শেফার্ডকে ফিরিয়ে মিডল অর্ডারের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন একাই। এইডেন মার্করাম ও ওয়াশিংটন সুন্দর শেষে চেষ্টা করেছিলেন। তবে সুন্দরের ১৪ বলে ৪০ রানের ঝড়ের পর মার্করামের ৪১ বলে ৫৭* রানের ইনিংস দুটি কেবল হারের ব্যবধানি কমিয়েছে; আর হায়দ্রাবাদকে দিয়েছে যদি-কিন্তুময় একরাশ হতাশা।