লিভিংস্টোন লঙ্কাকাণ্ডে চেন্নাইয়ের টানা তৃতীয় হার
পাঞ্জাব-চেন্নাই, মুম্বাই (টস-চেন্নাই/ফিল্ডিং)
পাঞ্জাব কিংস- ১৮০/৮, ২০ ওভার (লিভিংস্টোন ৬০, ধাওয়ান ৩৩, জীতেশ ২৬, জর্ডান ২/২৩, প্রিটোরিয়াস ২/৩০, ব্রাভো ১/৩২)
চেন্নাই সুপার কিংস- ১২৬, ১৮ ওভার (দুবে ৫৭, ধোনি ২৩, উথাপ্পা ১৩, চাহার ৩/২৫, অরোরা ২/২১, লিভিংস্টোন ২/২৫)
ফলাফল: পাঞ্জাব ৫৪ রানে জয়ী
লিয়াম লিভিংস্টোন কেন এবারের মহা-নিলামে সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রিত বিদেশি তার প্রমাণ হাতেনাতে পেল রবীন্দ্র জাদেজার দল। ব্যাট হাতে যেই ঝড় তুলেছিলেন তা পাঞ্জাবের ইনিংসের শেষার্ধে কিছুটা সামাল দিয়েছিল চেন্নাইয়ের বোলাররা। পরে বল হাতেও দেখালেন ভেল্কি; সাথে বৈভব অরোরার দারুণ ওপেনিং স্পেল ও রাহুল চাহারের স্পিন-বিষে নীল হয়ে চেন্নাইকে বরণ করতে হল টানা তৃতীয় পরাজয়ের গ্লানি।
লিভিংস্টোনে লণ্ডভণ্ড চেন্নাই
ফিল্ডিং নিয়ে প্রথম দুই ওভারে যখন পাঞ্জাবের দুই উইকেট তুলে নিল চেন্নাই তখন বোধহয় ততারা ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি কী হতে চলেছে তাদের বোলারদের সাথে। ওই দুই উইকেটের পতন যেন পাঞ্জাবের জন্য শাপেবর হয়েই এলো। লিভিংস্টোন এসে যেই প্রতি আক্রমণে গেলেন তাতে রীতিমত দিশেহারা জাদেজা সহ সব বোলার। মুকেশ চৌধুরীর ৫ম ওভারে ২৬ রান এলে শিখর ধাওয়ানকে সঙ্গী করে লিভিংস্টোন পাওয়ারপ্লেতে পাঞ্জাবের সংগ্রহ নিয়ে যান ৭২ রানে। ধাওয়ান যে একেবারেই নিশ্চুপ ছিলেন তা নয়; তবে লিভিংস্টোনের তান্ডবের সামনে তাকে যেন মনে হচ্ছিল নীরব এক সঙ্গী। ডোয়াইন ব্রাভোকে দারুণ এক ছয় মেরে লিভিংস্টোন নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন ২৭ বলে। ওই ওভারেই ধাওয়ান ফেরেন ২৪ বলে ৩৩ রান করে। ১০ ওভারেই অবশ্য পাঞ্জাব তুলে ফেলেছিল ১০৯ রান! পরের ওভারে আক্রমণের ধারা বজায় রাখতে গিয়ে জাদেজার শিকার হয়ে লিভিংস্টোন থামেন ৩২ বলে ৬০ রানে। এর আগে ৫টি করে চার ও ছয় মেরে চেন্নাই বোলারদের শিরদাঁড়ায় যে কাপন ধরিয়েছিলেন তাতেই বড় সংগ্রহ পেয়েছিল পাঞ্জাব।
প্রিটোরিয়াস-জর্ডানের লাগাম টেনে ধরা
লিভিংস্টোন যতক্ষণ ছিলেন ২০০-পেরুনো সংগ্রহ তখন মনে হচ্ছিল অবশ্যম্ভাবী। তার বিদায়ের পরেও ১৪ ওভারে পাঞ্জাবের রান ছিল ১৪২। এরপরেই অবশ্য ক্রিস জর্ডান ও ডুয়েইন প্রিটোরিয়াস জুটি বেঁধে লাগাম টেনে ধরেন। তাদের বদৌলতেই শেষ ৬ ওভারে পাঞ্জাব ৩৮ রানের বেশি নিতে পারেনি। শুধু রান আটকেই নয়, দুজনে ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েও পাঞ্জাবকে বেঁধে ফেলেছিলেন ২০০ রানের বেশ আগেই।
অরোরার বিধ্বংসী শুরু, বোলার লিভিংস্টোন, অতঃপর চাহারের চতুরতা
অরোরার বলে হয়ত অত গতি নেই; তবে যেই সুইং তিনি আদায় করতে পারেন তাতেই নাকাল করলেন চেন্নাইয়ের টপ অর্ডার। রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে ফেরানোর পর ফিরিয়েছিলেন মঈন আলীকেও। রাবাদা ও আরশদিপও একটি করে উইকেট তুলে নেওয়ায় কার্যত পাওয়ারপ্লেতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় চেন্নাই।
চেন্নাইকে ম্যাচে রেখেছিলেন শিভাম দুবে। দারুণ এক ফিফটি করলেও অন্য প্রান্তে ধোনির কাছ থেকে সেই অর্থে পাননি সঙ্গ। তবে ব্যাট হাতে যেভাবে ম্যাচ বের করে নিয়েছিলেন বল হাতেও চেন্নাইয়ের কফিনে পেরেক ঠুকে দেন ওই লিভিংস্টোনই। এক ওভারে দুবেকে ফেরানোর পরের বলেই ফেরান ডোয়াইন ব্রাভোকেও। অন্য প্রান্তে ধুঁকতে থাকা ধোনির দুর্দশার অবসান ঘটানোর আগে প্রিটোরিয়াস ও পরে জর্ডানের উইকেট নিয়ে পরে পাঞ্জাবের জয়ের রাস্তা মসৃণ করেন আরেক লেগ স্পিনার রাহুল চাহার।