• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    আগ্রাসী আভেশ, হোল্ডারের 'হোল্ডআপে' লক্ষ্ণৌর টানা দ্বিতীয় জয়

    আগ্রাসী আভেশ, হোল্ডারের 'হোল্ডআপে' লক্ষ্ণৌর টানা দ্বিতীয় জয়    

    হায়দ্রাবাদ-লক্ষ্ণৌ, মুম্বাই (টস-হায়দ্রাবাদ/ফিল্ডিং)
    লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস- ১৬৯/৭, ২০ ওভার (রাহুল ৬৮, হুডা ৫১, বাদোনি ১৯, নাটারাজান ২/২৬, সুন্দর ২/২৮, শেফার্ড ২/৪২)
    সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ- ১৫৭/৯, ২০ ওভার (ত্রিপাঠি ৪৪, পুরান ৩৪, সুন্দর ১৮, আভেশ ৪/২৪, হোল্ডার ৩/৩৪, ক্রুনাল ২/২৭)
    ফলাফল: লক্ষ্ণৌ ১২ রানে জয়ী

     

    দারুণ এক দলীয় পারফর্ম্যান্সে টানা দ্বিতীয় জয় পেল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বিপদে পড়লেও লোকেশ রাহুল-দীপক হুডার ৮৭ রানের জুটিতে ভর করে লড়াই করার রসদ পেয়েছিল লক্ষ্ণৌ। আভেশ খানের আগুনঝরা স্পেলের পর শেষ ওভারে জেসন হোল্ডারের ঠাণ্ডা মাথার বোলিংয়ে ঠিকই সেই রসদ নিয়ে হায়দ্রাবাদকে টানা দ্বিতীয় হারের জ্বালায় পোড়ায় রাহুলের দল।

    রাহুল-হুডার সময়োপযোগী জুটি

    প্রথম ওভারেই কুইন্টন ডি কককে হারানোর পর দুই ওভারের মধ্যেই গত ম্যাচে ঝড় তোলা এভিন লুইস ও মানিশ পান্ডে ফিরে গেলে মহাবিপদে পড়ে লক্ষ্ণৌ। পাওয়ারপ্লেতেও উঠেছে ততক্ষণে ৩২ রান। অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের সাথে যোগ দিয়ে দীপক হুডা শুধু যে ইনিংস মেরামত করলেন তাই নয়, দলকে শক্ত জায়গায় নিয়ে যেতে সময়ে সময়ে পালন করলেন আগ্রাসনের ভুমিকাও। ৯ ওভার শেষেও লক্ষ্ণৌয়ের রান ৪৮ থাকলে দশম ওভারে হায়দ্রাবাদের গতিময় তরুণ উমরান মালিকের ওপর চড়াও হন দুজন; ৩ চার ও ১ ছয়ে ওই ওভারে নেন ২০ রান। উইকেটে পরে এসেও ৩১ বলে আগে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন হুডাই। এক ওভার পরেই অবশ্য রোমারিও শেফার্ডের আঘাতে ৫১ রানে হুডার ইনিংস থেমে যাওয়ার এক বল পরেই ৪০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক নিজেও। ফিফটির পরে সময়ের ডাকেই গিয়ার পাল্টাতে গিয়ে ১৯তম ওভারের প্রথম বলে নাটারাজানের পাতা এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে শেষ হয় তার ৫০ বলের ৬৮ রানের ইনিংস। ওই ওভারে পরে ক্রুনাল পান্ডিয়াও ফিরলে লক্ষ্ণৌ শেষমেশ পায় ১৬৯ রানের পুঁজি।

    ত্রিপাঠি-পুরানের চেষ্টা ভেস্তে আভেশের আগ্রাসনের জয়

    ১৭০ রানের লক্ষ্যে হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে ৪র্থ ওভারেই ফিরিয়ে ধাক্কাটা প্রথম দিয়েছিলেন আভেশ খান। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মাকে ফিরিয়ে হায়দ্রাবাদের চিন্তা দ্বিগুণও করেন তিনি। তবে আভেশ অধ্যায় সামলে এরপর রাহুল ত্রিপাঠি গিয়েছিলেন প্রতি আক্রমণে। ফিফটির দিকে এগুতে থাকা ত্রিপাঠিকে গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে ফিরে ম্যাচের কাটা আরও একবার নিজেদের দিকে ঘোরান এর আগে এইডেন মার্করামকেও ফেরানো ক্রুনাল। আইপিলে দুর্বিষহ সময় কাটাতে থাকা নিকোলাস পুরান এবারের নিলামে নিজের মূল্যের প্রতি সুবিচার করতে অবশ্য ছিলেন বদ্ধপরিকর, ভাগ্য বদলাতে এই ম্যাচটাই বেছে নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছিল। আভেশ যখন নিজের শেষ ওভার করতে এলেন তখন তার বাউন্সার দোর্দণ্ড প্রতাপে মাঠছাড়া করেই তাকে স্বাগত জানা পুরান। তবে নিজের দিনে আভেশ তো ছেড়ে কথা বোলার পাত্র নন; এক বল পরেই কিছুটা ভাগ্য জোরেই ঠিকই ফেরালেন ২৪ বলে ৩৪ রানে থাকা পুরানকে। পরের বলে আব্দুল সামাদকে ফিরিয়ে হায়দ্রাবাদের রানতাড়ার পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা বিছিয়ে আভেশ শেষ করেন তার কোটা; সেটাও দারুণ বোলিং ফিগার নিয়েই: ৪-০-২৪-৪।

    শেষ ওভারে হোল্ডারের বাজিমাত

    শেষ দুই ওভারে যখন ২৬ রানের প্রয়োজন তখন ১৯তম ওভারে অ্যান্ড্রু টাই দিলেন ১০ রান। উইকেটে তখন আছে ১৩ বলে ১৮ রানে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দর ও হার্ড হিটার খ্যাত রোমারিও শেফার্ড। শেষ ওভারে রাহুল বল তুলে দিলেন জেসন হোল্ডারের হাতে। সেই হোল্ডার যিনি ৩ ওভারে দিয়েছেন ৩১ রান; নিজের ঠিক আগের ওভারেই পুরান যাকে তুলোধোনা করে নিয়েছিলেন ১৫ রান। তবে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে সময় নিলেন না এই ক্যারিবীয় পেসার। প্রথম বলেই সুন্দরকে ফিরিয়ে জয়ের পথে এক ধাপ এগিয়ে নিলেন দলকে। আর পুরো ওভারে যা করলেন তা তো এক কথায় দুর্দান্ত! এরপর ভুবনেশ্বর কুমার ও শেষ বলে শেফার্ডকেও ফেরালেন; পুরো ওভারে মোটে ৩ রান দিয়ে দলকে এনে দিলেন ১২ রানের জয়। এই নাহলে চ্যাম্পিয়ন ফাস্ট বোলার!