• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    স্নায়ুর লড়াইয়ে ডি কক-ক্রুনাল-বাদোনিদের কাছে মোস্তাফিজদের পরাজয়

    স্নায়ুর লড়াইয়ে ডি কক-ক্রুনাল-বাদোনিদের কাছে মোস্তাফিজদের পরাজয়    

    লক্ষ্ণৌ-দিল্লি, মুম্বাই (টস-লক্ষ্ণৌ/ফিল্ডিং)
    দিল্লি ক্যাপিটালস- ১৪৯/৩, ২০ ওভার (শ ৬১, পান্ট ৩৯*, সরফরাজ ৩৬*, বিষ্ণোই ২/২২, গৌতম ১/২৩)
    লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস- ১৫৫/৪, ১৯.৪ ওভার (ডি কক ৮০, রাহুল ২৪, ক্রুনাল ১৯*, কুলদিপ ২/৩১, ললিত ১/২১, ঠাকুর ১/৩৯)
    ফলাফল: লক্ষ্ণৌ ৬ উইকেটে জয়ী

     

    পুঁজি মোটে ১৪৯, সেটা নিয়েই ম্যাচ শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে এসেছিল দিল্লি। আর তাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল বোধহয় মোস্তাফিজুর রহমানেরই। তবে ১৯তম ওভারে যখন গুনলেন ১৪ রান তখন টিমটিম করে জ্বলতে থাকা সম্ভাবনার প্রদীপের আলোর তেজও হয়ে গেল একেবারেই নিভুনিভু। এবারের আইপিএলে নিজেকে মেলে ধরা আয়ুশ বাদোনি এরপর উইকেটে এসেই সেই আলো পুরোই নিভিয়ে দিলেন। পৃথ্বী শয়ের বেধড়ক পিটুনি দিয়ে যেই ম্যাচ শুরু করেছিল দিল্লি সেই ম্যাচের অন্তিম সমাপ্তি তাদের হল কুইন্টন ডি ককের ঠাণ্ডা মাথার ইনিংস পরবর্তী ক্রুনাল পান্ডিয়া-বাদোনির ইস্পাত দৃঢ় স্নায়বিক শক্তির কাছে নতি স্বীকার করে। লক্ষ্ণৌ সেই সাথে পেল এবারের আসরে তাদের ৩য় জয়।

    শ-শো ভেস্তে গৌতম-বিষ্ণোই ভেল্কি

    নতুন ওপেনিং সঙ্গী পেয়ে পৃথ্বী শ যেন এদিন খুঁজে পেলেন নিজের পুরনো সত্ত্বা। বল ব্যাটে আসছিল বলে নিজের মত করেই চড়াও হলেন বোলারদের ওপর, বিশেষত পেসারদের ওপর। পাওয়ারপ্লের ২৭ বলই তিনি মকাবেলা করায় দিল্লি পেয়ে যায় ৫২ রান। পরের ওভারেই ৩০ বলে পূর্ণ করেন নিজের ১১তম আইপিএল ফিফটি। শেষমেশ কৃষ্ণাপ্পা গৌতমের শিকার হয়ে ফিরলেও এর আগেই ৩৪ বলে তান্ডব চালিয়ে করেন ৬১ রান।

    এই গৌতমের সাথেই আরেক স্পিনার রবি বিষ্ণোই এরপর স্পিন জাল বুনে বেঁধে ফেলেন দিল্লি ব্যাটারদের। বিষ্ণোইয়ের শিকার হয়ে পরের ওভারেই ওয়ার্নার ফিরলে প্রায় ৯ বছর পরে দিল্লির জার্সিতে তার প্রত্যাবর্তন একেবারেই পন্ড হয়ে যায়। বিষ্ণোইকে পুরো টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে মাত্র ৬ বল খেলতে পেরেছেন; তাতেই তার শিকার হলেন ৩য় বারের মত। এক ওভার পরেই অসাধারণ এক গুগলিতে এরপর বিষ্ণোই উপড়ে ফেলেন রভম্যান পাওয়েলের স্টাম্প। উইকেটে নবাগত পান্ট-সরফরাজ জুটি তখন এতটাই চাপে যে গৌতম ১২তম ওভারে পেয়ে যান মেইডেনের দেখা; যা আইপিএলে পান্টের জন্য প্রথম। ওদিকে ১৫তম ওভারে বিষ্ণোই তার স্পেল শেষ করতে এসে শেষ বলে খান বাউন্ডারি, তারপরেও তিনি শেষ করেন দারুণ ফিগার নিয়ে: ৪-০-২২-২। গৌতম-বিষ্ণোইয়ের চাপে ১৫ ওভার শেষেও দিল্লির রান ছিল ৯৯। পান্ট-সরফরাজ জুটি শেষদিকে দ্রুতগতিতে রান তোলায় তবু লড়াই করার পুঁজি পেয়েছিল তারা।

    ডি ককের ঠাণ্ডা মাথার ইনিংস, ক্রুনাল-বাদোনির যথাযথ ফিনিশিং

    স্বল্প পুঁজি নিয়েও শুরু থেকেই চেপে বসার জন্য মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে শুরু করেন পান্ট। শুরুটাও তিনি করেন দারুণ। তবে আনরিখ নরকিয়াকে এদিন রীতিমত তুলোধোনা করেন ব্যাটাররা। স্পিনারদের বদৌলতে, বিশেষত কুলদিপের দরুন রাহুল এদিন ছিলেন প্রায় নিশ্চুপ। কুলদিপের কাছেই পরে ফিরেছিলেন তিনি। ললিত যাদবও তাকে দিয়েছিলেন যোগ্য সঙ্গ। তবে ডি ককের মাথায় যেন গানিতিক সব সমীকরণই ছিল কষা। স্পিনারদের দেখে খেলে পেসারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন। নরকিয়া যখন দুটো বিমার দিয়ে নিজের ৩য় ওভার সম্পন্নই করতে পারল না তখন আরও বিপদে পড়ে দিল্লি। ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করা ডি কক তখন রীতিমত ছুটছেন। তবে নরকিয়ার সেই ওভার সম্পন্ন করতে এসে তাকে ফেরান কুলদিপ। ৫২ বলে ৮০ রান করে ডি কক ফেরার পরের ওভারেই মাত্র ৪ রান দেন আগের দুই ওভারে মোটে ৮ রান দেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে শার্দুল ঠাকুরও দেন মোটে ৫ রান। তবে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা ক্রুনাল পান্ডিয়া আক্রমণের জন্য বেছে নেন মোস্তাফিজের করা ১৯তম ওভার। কাটার বুঝে মারেন বিশাল এক ছয়; ওভারেও নেন ১৪ রান। শেষ ওভারে ৫ রান প্রয়োজন হলেও ঠাকুরের প্রথম বলেই দীপক হুডা ফিরলে ম্যাচের ভাগ্য আবার ঝুলে যায়। কিন্তু দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বাদোনি এসে সেশবের কোনও সুযোগই দেননি। পরপর দুই বলে চার-ছয় মেরে নিশ্চিত করেন জয়।