• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    পুরনো 'নাইট রাইডার' কুলদিপে কলকাতাকে ঘায়েল করে জয়ের ধারায় ফিরল দিল্লি

    পুরনো 'নাইট রাইডার' কুলদিপে কলকাতাকে ঘায়েল করে জয়ের ধারায় ফিরল দিল্লি    

    কলকাতা-দিল্লি, মুম্বাই (টস-গুজরাট/ফিল্ডিং)
    দিল্লি ক্যাপিটালস- ২১৫/৫, ২০ ওভার (ওয়ার্নার ৬১, শ ৫১্‌ ঠাকুর ২৯*, নারাইন ২/২১, রাসেল ১/১৬, চক্রবর্তী ১/৪৪)
    কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৭১, ১৯.৪ ওভার (শ্রেয়াস ৫৪, রানা ৩০, রাসেল ২৪, কুলদিপ ৪/৩৫, খলিল ৩/২৫, ঠাকুর ২/৩০)
    ফলাফল: দিল্লি ৪৪ রানে জয়ী

     

    দিল্লির ম্যাচ মানেই পৃথ্বী শ’র পাওয়ারপ্লে ঝড় যেন এখন অবধারিত; আজও হল না তার ব্যতিক্রম। সাথে ডেভিড ওয়ার্নারের রানে ফেরার দিনে পরে দিল্লি পেয়েছিল বিশাল সংগ্রহ। রান তাড়া করা দলগুলোর জয়ের রেকর্ড তোয়াক্কা না করে এরপর কুলদিপ যাদব বুনলেন স্পিন জাল, খলিল আহমেদ দেখালেন তার স্লোয়ারের জাদু, আর শার্দুল ঠাকুর বনে গেলেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। পুরনো দল দিল্লির বিপক্ষে কলকাতা অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের প্রচেষ্টাকে নিষ্ফলা করে মোস্তাফিজরা তাই ফিরেছেন জয়ের ধারায়।

    শ’র ঝড়ো শুরুর পর ওয়ার্নারের রানে ফেরা

    পাওয়ারপ্লেতে আইপিএলের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ওপেনারের তকমা তাকে ইতোমধ্যে অনেকেই দিয়েছেন। এদিনও সেটা প্রমাণ করতে ভুল করলেন না পৃথ্বী শ। প্রথম ওভারেই ফর্মে থাকা উমেশ যাদবকে ২ চার মেরে শুরু করেন। অন্য প্রান্তে ডেভিড ওয়ার্নারও এদিন সপ্রতিভ থাকায় শ যেন আরও তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যান। দুজনে মিলে পাওয়ারপ্লেতে তুলে ফেলেন এবারের আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬৮ রান। ভেঙ্কটেশ আইয়ারের করা অষ্টম ওভারে টানা ছয় চারের পর সিঙ্গেল বের করে এরপর শ ফিফটি পূর্ণ করেন ২৭ বলে। পরের ওভারেই অবশ্য বরুন অ্যারনের বলে স্টাম্প খুইয়ে থামে তার ২৯ বলে ৫১ রানের রোমাঞ্চকর ইনিংস।

    তবে শয়ের সেই তান্ডবে ওয়ার্নারও উইকেটে থিতু হওয়ার সুযোগ পান। এদিন শুরু থেকে হাত খুলেই খেলেছেন; শয়ের যোগ্য সঙ্গে সময়ও নিয়েছে পরে। তারই ফল হিসেবে দিল্লির জার্সি গায়ে প্রায় সাড়ে আট বছর পরে ফেরার দ্বিতীয় ম্যাচেই পেয়ে যান ফিফটি। আন্দ্রে রাসেলকে ছয় মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৫ বলে। ওই ওভারেই এদিন তিনে নামা ঋষাভ পান্ট ২৭ রানে ফিরলে পরের ওভারে ফেরেন ললিত যাদবও। নারাইনের দুর্দান্ত স্পেলে এক ওভার পরেই তার দ্বিতীয় শিকার হয়ে রভম্যান পাওয়েল ফিরলে চাপে পরে যান ওয়ার্নার। সেই চাপেই পরের ওভারে গিয়ার পাল্টাতে গিয়ে উমেশের বলে  ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ৪৫ বলে ৬১ রানের ইনিংস।

    অক্ষর-ঠাকুরের বিধ্বংসী জুটি

    ওয়ার্নার যখন ফিরলেন তখন দুইশ মনে হচ্ছে বহুদুরের কোনও সংখ্যা। তবে এরপর অক্ষর পাটেল-শার্দুল ঠাকুর দেখান তাদের ব্যাটিংয়ের যোগ্যতা। উমেশের করা ১৯তম ওভারে তো দুজন মিলে৩ ছয় ও ১ চারে নিলেন ২৩ রান! প্যাট কামিন্সের করা শেষ ওভারেও দুজনে মিলে নেন ১৬ রান। ১৪ বলে ২২* রান করে অক্ষর ও ১১ বলে ২৯* রান করে ঠাকুর অপরাজিত থেকে দিল্লিকে এনে দেন এই মৌসুমের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

    দুই বাঁহাতিতে বিধ্বস্ত কলকাতা

    একজনের বাঁহাতি পেস, আরেকজনের বাঁহাতি লেগ স্পিন-তাতেই কুপোকাত কলকাতা। আর তাতে যোগ্য সহায়তা দিলেন আরেক বাঁহাতি মোস্তাফিজ; প্রথম ওভার শুরুই করেছিলেন মোটে ২ রান দিয়ে। ভেঙ্কটেশ আইয়ার এরপর হাত খুলে খেলার চেষ্টা করতে গিয়েই ধরা দেন খলিলের ফাঁদে। অন্য প্রান্তে শ্রেয়াস আইয়ার নেমে আক্রমণ শুরু করলেও আজিঙ্কিয়া রাহানে রীতিমত ধুঁকছিলেন; সেটআর সুযোগ নিয়ে নিজের পরের ওভারেই তাকে ফেরান খলিল। তবে তাতে অবশ্য অনেকটুকু দৌড়ে ঠাকুরের নেওয়া দুর্দান্ত ক্যাচের কৃতিত্ব বেশি বলা চলে।

    নিতিশ রানাকে নিয়ে এরপর যখন শ্রেয়াস দারুণভাবে রানতাড়ার কাজ সেরে যাচ্ছিলেন তখনই বাঁধা হয়ে দাঁড়ান চায়নাম্যানকুলদিপ। দুর্দান্ত এক ছয় মেরে ফিফটি পূর্ণ করার পরের বলেই আবারও বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে কুলদিপকে উইকেট দিয়ে ফেরেন কলকাতা অধিনায়ক।  উইকেটে এসে এরপর স্যাম বিলিংস প্রতি আক্রমণের চেষ্টা করলে বোলিংয়ে এসেই তাকে ফেরান খলিল। বাকি পথের কাঁটা একে একে এরপর সরান কুলদিপ। আগের ম্যাচে ঝড় তোলা কামিন্সকে মাত্র ৪ রানে ফেরানোর পর ওই ওভারেই টানা দুই বলে ফেরান সুনীল নারাইন ও উমেশ যাদবকে। ব্যাট হাতে দারুণ সমাপ্তির পর বল হাতেও শেষ ওভারে আন্দ্রে রাসেল ও রাসিখ সালামকে ফিরিয়ে তুলির শেষ আঁচড় টানেন ঠাকুর। উইকেট না পেলেও ব্যাটারদের এদিন হাত খোলার কোনও সুযোগ না দেওয়া মোস্তাফিজ শেষ করেন ভালো বোলিং ফিগার নিয়েই: ৪-০-২১-০।