• আইপিএল ২০২২
  • " />

     

    উথাপ্পা-দুবের রেকর্ড জুটির পরে স্পিন জালে বেঙ্গালুরুকে আটকে চেন্নাইয়ের প্রথম জয়

    উথাপ্পা-দুবের রেকর্ড জুটির পরে স্পিন জালে বেঙ্গালুরুকে আটকে চেন্নাইয়ের প্রথম জয়    

    চেন্নাই-বেঙ্গালুরু, মুম্বাই (টস-বেঙ্গালুরু/ফিল্ডিং)
    চেন্নাই সুপার কিংস- ২১৬/৪, ২০ ওভার (দুবে ৯৫*, উথাপ্পা ৮৮, গায়কোয়াড় ১৭, হাসারাঙ্গা ২/৩৫, হেজলউড ১/৩৩)
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু- ১৯৩/৯, ২০ ওভার (শাহবাজ ৪১, কার্তিক ৩৪, প্রভুদেসাই ৩৪, থিকশানা ৪/৩৩, জাদেজা ৩/৩৯, মুকেশ ১/৪০)
    ফলাফল: চেন্নাই ২৩ রানে জয়ী

     

    নিজেদের ৫ম ম্যাচে এসে অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত জয়ের দেখা পেল চেন্নাই। আরও একটা ম্যাড়ম্যাড়ে শুরুর পর রবিন উথাপ্পা ও শিভাম দুবের ধ্বংসযজ্ঞে শেষ দশ ওভারে ১৫৬ রান তুলে চেন্নাই পেয়েছিল এই মৌসুমের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। মাহিশ থিকশানা ও রবীন্দ্র জাদেজার স্পিনে এরপর দেখা মিলেছে বেঙ্গালুরুর আত্মসমর্পণের। শাহবাজ আহমেদ, সুয়াশ প্রভুদেসাইয়ের পর দীনেশ কার্তিক ঝড় তুললেও পাহাড়সম রান আর তাড়া করতে পারেননি।

    উড়ন্ত উথাপ্পা, সাথে দুবের দাদাগিরি

    দুইশো পেরুনো দলীয় সংগ্রহ পাওয়া একটা দলের পাওয়ারপ্লে নিশ্চয়ই বিস্ফোরক হওয়ার কথা। সাবেক চেন্নাই বোলার জশ হেজলউডের আঘাতে আরও একদিন শুরুতেই রুতুরাজ গায়কোয়াড় ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে রান ওঠে ৩৫। পরের ওভারেই রান আউট হয়ে মঈন আলী ফিরলে চেন্নাইয়ের স্কোরবোর্ডে আরও একবার জরাজীর্ণ কোনও সংখ্যা দেখা যাবে সেই চিন্তাই তখন চেন্নাই ভক্তদের মনেও হয়ত ছেয়ে গিয়েছে। তবে এতক্ষণ উইকেট ব্যয় করার পর উথাপ্পা ভাবলেন প্রতি আক্রমণের এখনই সময়। যেই ভাবা সেই কাজ! তবে আসল ঝড় শুরু হল ১০ ওভার শেষ হওয়ার পরে। ১২তম ওভারে উথাপ্পা-দুবে জুটি ৫০ রান ছোঁয় ৩২ বলে। ঠিক পরের ওভারেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ৩ ছোঁয় মেরে উথাপ্পা বার্তা পৌঁছে দেন। আকাশ দ্বিপের করা ১৫তম ওভারে উথাপ্পা ও দুবে দুজনেই ফিফটি পূর্ণ করেন চার মেরে, যথাক্রমে ৩২ ও ৩০ বলে। ফিফটির পর দুজনে হয়ে ওঠেন আরও ভয়ংকর; যেই ভীতি জাগানিয়া চার-ছয়ের ফুল্কি ছুটেছে পেসারদের বলেই বেশি-বিশেহ করে দ্বীপ ও মোহাম্মদ সিরাজের ওভারগুলোয়। ১৯তম ওভারে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে দারুণ এক ছয় মেরে আইপিলে নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ড গড়েন উথাপ্পা; আক্রমণের ধারা বজায় রাখতে গিয়ে আরও এক ছয় মারার পর গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে থামে উথাপ্পার ৫০ বলে ৮৮ রানের ইনিংস। এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ১৬৫ রানের জুটি ভাঙার পর শেষ ওভারে হেজলউডকে দুই ছয় মারলে দুবে সেঞ্চুরি পাবেন কি না সেটা নিয়েই তখন দর্শকদের উত্তেজনা। শেষ বলে অবশ্য সিঙ্গেলের বেশি নিতে না পারায় দুবে সন্তুষ্ট থাকেন ৯৫* রানে। ৪৬ বলে ৫ চার ও ৮ ছয়ে সাজানো নিজের আইপিএল সর্বোচ্চ ইনিংসে অবশ্য দুবে জয়টাও যেন তখনই প্রায় নিশ্চিত করে এসেছেন।

    স্পিন পরিকল্পনায় কাবু বেঙ্গালুরু

    লক্ষ্য বিশাল, তাই শুরু থেকেই আক্রমণে যাওয়ার খুব একটা বিকল্প বেঙ্গালুরুর ছিল না। সেটা মাথায় রেখে তৃতীয় ওভারেই জাদেজা আক্রমণে আনলেন থিকশানাকে। আর প্রথম ওভারেই অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে থিকশানা ফেরালেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে। এক ওভার পরেই মুকেশ চৌধুরীর নিরীহ এক বলে ভিরাট কোহলিও ফিরলে বিপদে পরে যায় বেঙ্গালুরু। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে থিকশানাকে টানা দুই ছয় মেরে ম্যাক্সওয়েল যখনই প্রতি আক্রমণের হুমকি দিলেন তখনই এক বলে পরে থিকশানার দুর্দান্ত ভিতরে ঢোকা বলে ফেরেন অনুজ রাওয়াত। পরের ওভারে জাদেজার বলে স্টাম্প খুইয়ে ম্যাক্সওয়েল নিজেও ফিরলে বেঙ্গালুরুর রানতাড়া যেন কার্যত সেখানেই পথ হারিয়ে ফেলে।

    শাহবাজ আহ্মেদ-সুয়াশ প্রভুদেসাই এরপর হাত খুলেই খেলেন। ১২ ওভারে যখন দলীয় স্কোর ১১০ রানে নিয়ে যান এই দুজন তখন বেঙ্গালুরুর আশার প্রদীপ যেন টিমটিম করে জ্বলতে শুরু করে। ঠিক দুই বলের মাথায় ফিরলেন থিকশানা পুরনো হন্তারকের ভুমিকায়, থামালেন প্রভুদেসাইয়ের ১৮ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও। নিজের চার ওভারের কোটা পূর্ণ করতে এসে আরও একভার আঘাত হানেন এদিনই আইপিলে নিজের প্রথম উইকেট পাওয়া থিকশানা.২৭ বলে ৪১ রানে থাকা শাহবাজের স্টাম্প উড়িয়ে দিয়ে বেঙ্গালুরুর কফিন সাজিয়ে ফেলেন তিনি। পরের ওভারে তিন বলের মধ্যেই জাদেজা ফেরান হাসারাঙ্গা ও দ্বীপকে। শেষদিকে দীনেশ কার্তিক কিছুটা ভীতি সঞ্চার করলেও সঙ্গীর অভাবে শেষমেশ আক্রমণের চাপে ডোয়াইন ব্রাভোর কাছে তিনি থেমেছেন ১৪ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও শেষে। বেঙ্গালুরুর ইনিংস এরপর গুটিয়ে ফেলতে না পারলেও অবশেষে জয়ের খাতা খোলা নিয়েই জাদেজার মুখে আজ হয়ত থাকবে হাসি।