ম্যাথিউজের ডাবল হাতছাড়ার আক্ষেপের দিনে নাঈমের স্মরণীয় প্রত্যাবর্তন
১ম টেস্ট, চট্টগ্রাম (টস- শ্রীলঙ্কা/ ব্যাটিং)
শ্রীলঙ্কা- ৩৯৭, ১৫৩ ওভার (ম্যাথিউজ ১৯৯, চান্ডিমাল ৬৬, মেন্ডিস ৫৪, নাঈম ৬/১০৫, সাকিব ৩/৬০, তাইজুল ১/১০৭)
বাংলাদেস-৭৬/০, ১৯ ওভার ( তামিম ৩৫, জয় ৩১, আসিথা ০/১৫)
বাংলাদেশ ৩২১ রানে পিছিয়ে
২য় দিন, স্টাম্পস
তামিম ইকবাল-মাহমুদুল হাসান জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকেই শেষ করলেন দিন, তাতে বাংলাদেশ শিবিরের সবার মুখেই থাকার কথা এক চিলতে হাসি। তবে সেই হাসি হতে পারত আরও বিস্তৃত। হয়নি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের দুর্দান্ত এক ইনিংসের কারণেই। তাও হয়ত চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব পিচে শ্রীলঙ্কার দলীয় সংগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশের খুব একটা নাখোশ হওয়ার অবকাশ নেই।
দিনের প্রথম সেশনে দীনেশ চান্ডিমালকে নিয়ে ম্যাথিউজের শুরুটা হয়েছিল ঠিক যেখানে গতকাল শেষ করেছিলেন। নিজের ফিফটি পূর্ণ করে চান্ডিমালও হয়ত সেঞ্চুরিতে চোখ দিয়েছিলেন। তবে এক ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন নাঈম ইসলাম। ১১৪তম ওভারে ৬৬ রানে চান্ডিমালকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন নাইম। তিন বল পরেই নিরোশান ডিকওয়েলার স্টাম্প উপড়ে ফেলে বাংলাদেশকে দ্রুতই ব্যাটিংয়ে নামার আশা দেখান নাঈম। লাঞ্চের পর ১১৭তম ওভারে টানা দুই বলে রমেশ মেন্ডিস ও লাসিথ এম্বুল্ডেনিয়াকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার লেজ টেনে আনেন সাকিব। লেজ গুটিয়ে ফেলার আশায় তখন মত্ত বাংলাদেশ।
বিশ্ব ফার্নান্দোকে নিয়ে এরপর লাঞ্চে যাওয়া ম্যাথিউজের কারণে বাংলাদেশের সেই আশায় গুঁড়েবালি হতেও সময় লাগেনি। বাংলাদেশিদের কপালে বিরক্তির ভাঁজ ফেলে বিশ্ব উইকেটে গেড়ে বসেন। অন্য প্রান্তে নিজের ইনিংসের রানে ১৫০ ছাড়িয়ে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন ম্যাথিউজ। বিশ্বের ওপর ভরসা রেখে প্রান্ত বদল করতেও কুণ্ঠা বোধ করেননি ম্যাথিউজ। বিশ্ব অবশ্য ফিরতে পারতেন সাকিবের বলে যদি না মুশফিকুর রহিম সহজ এক ক্যাচ না ফেলে দিতেন। অবশ্য চা-বিরতির আগে শেষ ওভারে শরিফুল ইসলামের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পান বিশ্ব।
চা-বিরতির পর তাই তার পরিবর্তে নামেন আসিথা ফার্নান্দো। সেই আসিথাকে দ্রুতই ফিরিয়ে টেস্টে নিজের ৩য় ৫-উইকেট পূর্ণ করে সাদা পোশাকে প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখেন নাঈম। পঞ্চাশ পেরুনো জুটির সঙ্গী বিশ্বকে ফিরে পেয়ে এরপর গিয়ার পাল্টানোর চেষ্টা করেন ম্যাথিউজ। ১৯৯ রানে এসে এরপর নাঈমের বলে সাকিবকে ক্যাচ দিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয় ম্যাথিউজের। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৯৯ ও ১৯৯ রানে আউট হওয়ার দুর্ভাগ্যজনক রেকর্ড নিয়ে তাই সাজঘরে ফিরতে হয় ম্যাথিউজকে।
তাতেই বাংলাদেশের ভাগ্য খোলার পরে তামিম-জয় জুটিও দেখিয়েছেন আশা। দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই নো বলে তামিমের স্লিপে ক্যাচ পড়া, জয়ের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ডিকওয়েলার গ্লাভস স্পর্শ করে বাউন্ডারির দিকে বলের ছুটে যাওয়া - দুই ওপেনারের শুরুটা ছিল বেশ নড়বড়ে। তবে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে দুজনেই শেষ বিকেলে এরপর অনায়াসেই সময় কাটিয়েছেন ২২ গজে। বাংলাদেশের আশা থাকবে তৃতীয় দিনে এই দুজনের ব্যাট থেকে বড় কোনও ইনিংসেরই।