• বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ ২০২২
  • " />

     

    তামিমের উৎসব, শঙ্কা, অতঃপর মুশফিক-লিটনের দৃঢ়তায় বাংলাদেশের দাপুটে দিন

    তামিমের উৎসব, শঙ্কা, অতঃপর মুশফিক-লিটনের দৃঢ়তায় বাংলাদেশের দাপুটে দিন    

    ১ম টেস্ট, চট্টগ্রাম (টস- শ্রীলঙ্কা/ ব্যাটিং)
    শ্রীলঙ্কা- ৩৯৭, ১৫৩ ওভার  (ম্যাথিউজ ১৯৯, চান্ডিমাল ৬৬, মেন্ডিস ৫৪,  নাঈম ৬/১০৫, সাকিব ৩/৬০, তাইজুল ১/১০৭)
    বাংলাদেস-৩১৮/৩, ১০৭ ওভার (তামিম ১৩৩-আহত, জয় ৫৮, লিটন ৫৪*, মুশফিক ৫৩*, রাজিথা ২/১৭, আসিথা ১/৫৫)
    বাংলাদেশ ৭৯ রানে পিছিয়ে
    ৩য় দিন, স্টাম্পস

     

    টেস্টে ৩য় দিনটা সাধারণত ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ ধরা হয়। বাংলাদেশ যেন সেই মন্ত্র মাথায় নিয়েই দিনটা নিজেদের করে রাখল। পুরো দিনে আক্ষেপ বলতে একটাই - দারুণ খেলতে থাকা তামিম ইকবালের আহত অবসর। তবে মুশফিকুর রহিমের সাথে এরপর উইকেটে যোগ দিয়ে লিটন দাস আরও একবার দেখিয়েছেন কেন তিনি এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল টেস্ট ব্যাটার। শ্রীলঙ্কার ফিল্ডারদের তাই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রখর উত্তাপে খেটেই বেশিরভাগ সময় পার করতে হয়েছে।

    শ্রীলঙ্কার জন্য যে কঠোর এক দিন অপেক্ষা করছে সেই ইঙ্গিত মিলেছিল সকালেই। মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই শুরু করেছিলেন তামিম। জয় এক প্রান্ত আগলে রাখলে অন্য প্রান্তে তামিম খারাপ বলের যোগ্য জবাব দিতে সময় নেননি। ৩২তম ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন স্বভাবজাত ব্যাটিংয়ে। তামিমের ব্যাটিংয়ে নিজের সহজাত ব্যাটিং করার আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন জয়। ফলস্বরূপ দেশের মাটিতে পেয়েছিলেন নিজের প্রথম ফিফটি।

    প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কাকে হতাশ করে ২০১৭ সালের পর এই প্রথম এবং নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের মাত্র ৮ম শতরানের ওপেনিং জুটি পুরণ করা জুটি অবশ্য লাঞ্চের পর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। আসিথা ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় জয়ের ৫৮ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস; ভাঙে ১৬২ রানের জুটি, যা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ওপেনিং জুটি।

    এরপরের সময়টুকু অবশ্য বাংলাদেশের জন্য ছিল শঙ্কার। বিশ্ব ফার্নান্দোর কঙ্কাশন বদলি হয়ে নামা কাসুন রাজিথা এসেই বাংলাদেশের ভিত টলিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। ছয় ওভারের মধ্যেই নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হককে ফেরান তিনি। তবে উইকেটে এসে মুশফিকুর রহিম এদিন যেই দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তাতে তামিমও সুযোগ পেয়েছেন নিজের ছন্দ ধরে রাখার। নিজের ১০ম টেস্ট সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে তাই আর ভুল করেননি তামিম। ৩ বছর পর সেঞ্চুরি পেয়ে তামিম ইনিংস লম্বা করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু চা-বিরতির একটু আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন পেশির টানে। পরে আর ব্যাট করতে নামেননি।

    তামিমের অকস্মাৎ এই শঙ্কাজনক বিদায়ে উইকেটে এসে অবশ্য লিটন কোনও বিপদ ঘটানোর সুযোগও দেননি লঙ্কানদের। শুরুতে ছিলেন সাবধানী; পরে উইকেটের আচরণ বুঝে খেলেছেন নিজের সহজাত ভঙ্গিতে। মুশফিকের পরে উইকেটে এলেও মুশফিকের খানিকটা আগেই পূর্ণ করেছেন নিজের ১২তম ফিফটি; তার আগেই মেরেছেন ৮টি চার! ঠিক পরের ওভারেই মুশফিক পেয়েছেন নিজের ২৬তম ফিফটি; প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫০০০ টেস্ট রানের মাইলফলকের হাত ছোয়া দূরত্বেও চলে এসেছেন। নিজের উইকেটের মূল্য বুঝে যেভাবে খেলেছেন মুশফিক, আর নিজের দুর্দান্ত ফর্মের প্রমাণ যেভাবে দিয়ে চলেছেন লিটন দাস তাতে শ্রীলঙ্কা চাইবে কাল সকালে খুব দ্রুতই দুজনকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখাতে।