• বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ ২০২২
  • " />

     

    বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাড়ম্যাড়ে এক দিনে আলোচ্য বিষয় ম্যাথিউজ-ধনঞ্জয়া জুটি, সাকিবের বোলিং

    বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাড়ম্যাড়ে এক দিনে আলোচ্য বিষয় ম্যাথিউজ-ধনঞ্জয়া জুটি, সাকিবের বোলিং    

    ২য় টেস্ট, মিরপুর (টস- শ্রীলঙ্কা/ ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ- ৩৬৫ , ১১৬.২ ওভার ( মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১, তাইজুল ১৫,  রাজিথা ৫/৬৪, আসিথা ৪/৯৩)
    শ্রীলঙ্কা- ২৮২/৫, ৯৭ ওভার (করুনারত্নে ৮০, ম্যাথিউজ ৫৮*, ধনঞ্জয়া ৫৮,  সাকিব ৩/৫৯, এবাদত ২/৭৮)
    শ্রীলঙ্কা ৮৩ রানে পিছিয়ে
    ৩য় দিন, স্টাম্পস

     

    দিনের শুরুটা যতটা আশাব্যাঞ্জক ছিল শেষে এসেও মিলেছে সেই আশার বাণী; তবে মাঝের প্রায় পুরোটাই হতাশার গানেই ভরপুর। হতাশার পারদ চড়া করায় যতটা না ভুমিকা শ্রীলঙ্কান ব্যাটারদের তার থেকেও বেশি আসলে আবহাওয়ার। বৃষ্টি আর আলোকস্বল্পতাতে যে খেলার অনেকটাই ভেস্তে গিয়েছে। তবে সেটুকুতেই নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করেছেন লঙ্কানরা। বাংলাদেশি বোলাররা যে সুযোগ তৈরি করেননি সেটাও বলা অন্যায় হবে। তবে ম্যাচ যে এখনও সমতায় রয়েছে সেটা মানতে বোধহয় কোনও শিবিরেরই অপারগতা থাকবে না।

    ম্যাচের পাল্লা মাঝের কাটা বরাবর থাকলেও দিনের শুরুতে সেই কাটা কিন্তু নিজেদের দিকেই ঘুরিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা।  বিশেষ করে বলতে হয় দুই প্রান্ত থেকে এবাদত হোসেন-সাকিব আল হাসানের গতি ও ঘূর্ণির মিশেলের কথা। সুইং আদায়ের চেষ্টায় এদিন এবাদত নিজের প্রান্ত থেকে টানা ব্যাটারের অফ স্টাম্পের রাস্তায় বল করে একেবারে কোণঠাসা করে রেখেছিলেন। দিনের শুরুতেই নাইটওয়াচম্যান কাসুন রাজিথার স্টাম্প উপড়ে শুরুটা করে দিয়েছিলেন এবাদতই।

     অন্য প্রান্তে সাকিব বল করছিলেন উইকেটের আশায়, বল ভাসিয়েছেন বহু বার। এবাদতের আঁটসাঁট বোলিংয়ে জেরবার শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক তখন যে কোনও মূল্যে বাউন্ডারি বের করার জন্য হন্যে হয়ে উঠেছেন। আর সেটারই মোক্ষম সুযোগ নিলেন সাকিব। আগের বলটাই পঞ্চম স্টাম্পের রাস্তায় ফেললেও সেটা করেছিলেন হালকা জোরের ওপর। ঠিক পরের বলটা একই জায়গায় করলেন, তবে এবার দিলেন ড্রিফট। তাতেই দোটানায় পড়ে যাওয়া করুনারত্নে স্টাম্প খুইয়ে ফিরলেন ৮০ রানে। সাকিব দেখালেন কেন এই লাল বলের খেলায় তিনি বড্ড বেশি জরুরী।

    তবে সাকিব-এবাদতদের নিষ্ফলা করতে এরপর আসন গেঁড়ে বসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ম্যাথিউজের রুদ্ধদ্বার ব্যাটিংয়ের ফাঁক গলে উইকেট ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করে গেলেও বাংলাদেশের বোলাররা ফিরেছেন খালি হাতেই। তাতেই অন্য প্রান্তে নিজের সসহজাত খেলা খেলতে পেরেছেন ধনঞ্জয়া। বৃষ্টির কারণে চা-বিরতি বেশ আগেই ঘোষণা করার পর খেলা শুরু হয় বিকেল চারটার দিকে। এরপরেই ধনঞ্জয়া নিজের ১০ম টেস্ট ফিফটি পূর্ণ করেন। জুটিটা যখন মনে হচ্ছিল অবিচ্ছেদ্য, তখনই আবার হন্তারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন সাকিব। দারুণ ড্রিফটে ধনঞ্জয়ার ব্যাট চুমু খেয়ে লিটনের গ্লাভসের মুঠোয় চলে গেলেও শেষ মুহূর্তে যেয়ে বাংলাদেশকে নিতে হয় রিভিউ; আর তাতেই বাজিমাত। শেষ হয় ধনঞ্জয়ার ৫৮ রানের দারুণ ইনিংস। তবে প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ম্যাথিউজ আরও একবার ফিফটি পূর্ণ করে সেই ৫৮ রানে উইকেটে আছেন বহাল তবিয়তে। তবে শেষ বিকেলে স্পিনের যেই ইঙ্গিত মিলেছে আর সাকিব যেভাবে বলকে কথা বলাতে পেরেছেন তাতে আগামীকাল ম্যাচের মোড় নিজেদের দিকে ঘোরানোর আশা রাখতেই পারে বাংলাদেশ।