• শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    বাংলাদেশ হতে পারবে অস্ট্রেলিয়া?

    বাংলাদেশ হতে পারবে অস্ট্রেলিয়া?    

    শ্রীলংকা বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২য় টেস্টঃ ২য় দিনের খেলা শেষে

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ শ্রীলংকা ২৮১ ও ২৩৭; অস্ট্রেলিয়া ১০৬ ও ২৫/৩

     

    দিনের শেষের আগের ওভার। হেরাথের প্রথম বলটা এগিয়ে এসে বেশ জোরের সাথেই ব্যাট চালালেন ডেভিড ওয়ার্নার। বোলারকে পরাস্ত করে বল গড়াল সীমানার বাইরে। পরের দু’ বলে কাভার ড্রাইভ আর রিভার্স সুইপে আরও দুটো চার তুলে নিলেন অজি ওপেনার। আগের ওভারেই পরপর দু’ বলে দু’ উইকেট চলে যাবার পর গোধূলি বেলায় ব্যাট হাতে কিছুটা তাতিয়ে ওঠার চেষ্টা যেন। কিন্তু অতিথিদের আকাশের কালো মেঘটা তো আর ততোক্ষণে দুয়েক চারে হালকা হওয়ার নয়। গল টেস্টে ইতিবাচক কোনো ফল পেতে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হবে অতিমানবীয় কিছুই। ৪০৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে স্মিথ বাহিনীর স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেটে ২৫ রান। এশিয়ার কোনো মাঠে চতুর্থ ইনিংসে চার শতাধিক রান করার একমাত্র রেকর্ডটা বাংলাদেশের, ২০০৮ সালে মিরপুরে শ্রীলংকার বিপক্ষেই। অবশ্য ৪১৩ রান করেও সে যাত্রায় শেষ রক্ষা হয় নি মোহাম্মদ আশরাফুলদের। জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে ভাঙতে হবে উপমহাদেশে রান তাড়া করে জেতার নিজস্ব রেকর্ডটাও। ২০০৬ সালে ফতুল্লায় বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ইনিংসে ৩০৭ করে আসা জয়টাই এখনও পর্যন্ত উপমহাদেশে রান তাড়া করে জেতায় ব্যাগি গ্রিনদের সর্বোচ্চ সাফল্য।

     

    গলে আজকের দিনটা স্বাগতিকদের করে নেন রঙ্গনা হেরাথ। দ্বিতীয় শ্রীলংকান হিসেবে ও সবচেয়ে বেশী বয়সে টেস্টে হ্যাট্রিক করার পথে এই বাঁহাতি স্পিনার ধ্বসিয়ে দেন অজিদের মিডল অর্ডার। এর আগে ২ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে আরও ৫ রান যোগ করতেই সফরকারীরা হারায় আরও ২ উইকেট। পরপর দু’ ওভারে উসমান খাজা আর স্টিভ স্মিথকে ফেরান দিলরুয়ান পেরেরা ও হেরাথ। ভোজেস-মার্শ জুটি এরপর কুড়ি রান যোগ করে সবে মাত্র থিতু হতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু হেরাথ-বিষে নীল হয়েই সব সারা হল। পঁচিশতম ওভারের চতুর্থ বলটায় এক্সট্রা কাভারে ভোজেসকে অসাধারণ এক ক্যাচে তালুবন্দী করেন করুনারত্নে। পরের দু’ বলে এলবিডব্লু হয়ে লংকান স্পিনারের হ্যাট্রিক পূরণ করেন নেভিল ও স্টার্ক।

     

     

    ৮০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার লড়াই করবার ছিল সামান্যই। সবক’টি উইকেট হারানোর আগে স্কোরবোর্ডে রান উঠলো সাকুল্যে ১০৬। ডেভিড ওয়ার্নারের ৪২ আর মিচেল মার্শের ২৭ ছাড়া রানের খাতায় দু’ অংক ছুঁতে পেরেছেন আর একজন ব্যাটসম্যানই।

     

    যে টেস্টটা হতে পারতো মিচেল স্টার্কের, সেটাই কিনা তিনদিনে হারার পথে তাঁর দল! প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেয়া অজি পেসার দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৬টি। স্টার্ক-আগুনে পুড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ১২১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। কুশল পেরেরা (৩৫) ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের (৪৭) প্রাথমিক প্রতিরোধের পর শেষবেলায় হাল ধরেন দিলরুয়ান পেরেরা। স্টার্কের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে তাঁর করা ৬৪ রানেই শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকার সংগ্রহটা ২৩৭-এ গিয়ে ঠেকে।

     

    ৪০৭ রানের চূড়ান্ত জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ‘যথারীতি’ শুরুতেই আউট জো বার্নস। হেরাথ তাঁকে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফেরানোর পর চতুর্থ ওভারে হানা দেন দিনের আরেক নায়ক দিলরুয়ান পেরেরা। হ্যাট্রিক চান্স তৈরি করেছিলেন তিনিও। পরপর দু’ বলে ফেরান ‘নাইট ওয়াচম্যান’ নাথান লায়ন আর উসমান খাজাকে। ওয়ার্নার-স্মিথ জুটি বাকি দু’ ওভার টিকে গেলেন কোনোরকমে, তবে আগামীকাল সেটা কতদূর টানতে পারবেন সে প্রশ্ন থেকে গেলো বড় করেই।

     

    শ্রীলংকার মাঠে কোনো টেস্টের প্রথম দু’ দিনে সবচেয়ে বেশী উইকেট পতনের নতুন রেকর্ডও গড়ে ফেলেছে গল, দু’ দিনে সব মিলিয়ে পড়েছে ৩৩ উইকেট! যার ২১টিই পড়েছে আজকে, এশিয়ার মাঠে টেস্টের এক দিনে সবচেয়ে বেশী উইকেট পতনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড।