ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা পাকিস্তানের
ফাইনালের ম্যাচসেরা হয়েছেন ফখর জামান, সবচেয়ে বেশি রানের জন্য গোল্ডেন ব্যাট পেয়েছেন শিখর ধাওয়ান। আর সবচেয়ে বেশি উইকেটের জন্য গোল্ডেন বল পেয়েছেন হাসান আলী, টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কারও উঠেছে তাঁর হাতেই।
পাকিস্তান ৩৩৮/ ৪, ৫০ ওভার (ফাখার ১১৪, আজহার ৫৯, হাফিজ ৫৭, বাবর ৪৬, ভুবনেশ্বর ১/৪৪, কেদার ১/২৭, পান্ডিয়া ১/৫৩)
ভারত ৩০.৩ ওভারে ১৫৮ (পান্ডিয়া ৭৬; আমির ৩/১৬, হাসান আলী ৩/১৯)
ফলঃ পাকিস্তান ১৮০ রানে জয়ী
পান্ডিয়ার আউটের সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেল, ভারতকে হারতে হচ্ছে বড় ব্যবধানে। হাসান আর জুনাইদ মিলে লেজটা মুড়ে নিতে খুব বেশিক্ষণ সময় নেননি। শুরুতে ব্যাট করে বড় স্কোর দাঁড় করিয়েছিল পাকিস্তান, কিন্তু কে ভেবেছিল সেই এভারেস্ট টপকাতে গিয়ে কয়েক ধাপ পরেই দম ফুরিয়ে যাবে ভারতের? মূল ধাক্কাটা দিয়েছিলেন আমির, তুলে নিয়েছিলেন রোহিত, কোহলি ও ধাওয়ানকে। এরপর শাদাব, হাসান আলী, জুনাইদরা মিলে বাকি কাজটা সেরেছেন। ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের এটাই প্রথম বৈশ্বিক কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্ট জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার পর চতুর্থ দল হিসেবে সব আইসিসি টুর্নামেন্ট জয়েরও কীর্তি গড়ল পাকিস্তান।
জাদেজাও ফিরে গেলেন
ভারত ১৫৬/৮, ২৮ ওভারে
বল হাতে কিছু করতে পারেননি, চাইলে পান্ডিয়ার রান আউটে নিজের উইকেটটা উৎসর্গ করতে পারতেন। কিন্তু সেটা তো করলেনই না, জুনায়েদ খানের পরের ওভারে ক্যাচ তুলে দিলেন স্লিপে। ২৬ বলে ১৫ রান করে ফিরে গেছেন, কিন্তু ড্রেসিংরুমে কেমন সংবর্ধনা অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য?
পান্ডিয়ার রান আউট
ভারত ১৫৪/৭, ২৬.৬ ওভারে
বিপর্যয়! বিপর্যয়! পান্ডিয়া যখনই বড় কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন তখনই ভারত আবার পা হড়কালো। হাসান আলির বলটা মিড অনে ঠেলে দিয়েছিলেন জাদেজা। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে পান্ডিয়া চলে গেলেন অন্য প্রান্তে। রান আউট হয়ে প্রায় নিজেকে শাপ শাপান্ত করতে করতে ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। শেষ আশাও নিভে গেল ভারতের?
পর পর তিন ছয়
ভারত ১২৮/৬, ২৩ ওভারে
ভারতের প্রায় নিভু নিভু আশার প্রদীপটা এখনো জ্বালিয়ে রেখেছেন পান্ডিয়া। শাদাবের বলে পর পত তিন ছয় মেরেছেন, ফিফটি হয়েছে ৩২ বলে। আইসিসির কোনো ফাইনালে এটাই সবচেয়ে কম বলে ফিফটির রেকর্ড।
যাদবকেও আউট করলেন শাদাব
আবারও আঘাত শাদাবের, এবার যাদব পুল করতে গিয়ে বল তুলে দিলেন আকাশে। সরফরাজ ধরলেন সহজ ক্যাচ। নক আউট পর্বে যে কোনো ম্যাচে সবচেয়ে বড় পরাজয় ভারতেরই, ২০০০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৪৫ রানে। এখনো সেই রান ছাড়াতে হলে ভারতকে.১৫ রান করতে হবে।
হাসানের শিকার ধোনি
ভারত ৫৪/৫, ১৩.৩ ওভারে
অবিশ্বাস্য কিছু না হলে পাকিস্তান এখন জয়ের উৎসব শুরু করে দিতে পারে। হাসান আলীর শর্ট বলটা পুল করতে গিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, কিন্তু ক্যাচ উঠে যায় স্কয়্যার লেগে। ইমাদ ওয়াসিম অনেকটা এগিয়ে এসে দারুণ এক ক্যাচ ধরলেন, ধোনি ফিরলেন মাত্র ৪ রানে। ভারতের পরাজয় কি এখন সময়ের ব্যাপার।
যুবরাজকে ফেরালেন শাদাব
ভারত ৫৪/৪, ১২.৩ ওভারে
বলটা স্টাম্পেই ছিল, যুবরাজ এক পা এগিয়ে খেলতে গেলেন সেটি। জোর আবেদন করলেন শাদাব খান, আঙুল তুললেন না আম্পায়ার কেটলবরো। শাদাব সঙ্গে সঙ্গেই সংকেত দিলেন রিভিউর, সরফরাজও আপত্তি করলেন না। রিপ্লেতে দেখা গেল, বল আগে লেগেছে প্যাডে, এবং মিডল স্টাম্পেই লাগত। সিদ্ধান্ত বদল হলো, যুবরাজ ফিরে গেলেন ২২ রানে। আরও বিপদে ভারত, এখন কি ধোনিই ভরসা?
ধাওয়ানকেও ফেরালেন আমির
ভারত ৩৩/৩, ৯.১ ওভারে
আরও একবার আঘাত আমিরের, এবার ফেরালেন ধাওয়ানকে। ফর্মে থাকা ধাওয়ান বড় কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন, ২১ রানও করে ফেলেছিলেন। আমির সিম পজিশন পাল্টে ক্রস সিমে বল ফেললেন। ধাওয়ানের ব্যাটে চুমু খেয়ে বল জমল সরফরাজের গ্লাভসে। ভারতের সামনে এখন এভারেস্ট টপকানোর হাতছানি।
এবার কোহলিকেও ফেরালেন আমির
ভারত ৬/২, ২.৪ ওভারে
তৃতীয় বলেই প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দিলেন বিরাট কোহলি, ধরতে ধরতেও সেটি ছাড়লেন আজহার আলী। আমির ভীষণ হতাশ। পরের বলটা আবার অফ স্টাম্পের ঠিক বাইরে, ব্যাটে বলে ঠিকমতো হলো না ভারত অধিনায়কের। এবার ক্যাচ উঠে গেল পয়েন্টে, সহজ ক্যাচটা ধরতে ভুল করলেন না শাদাব। ভারত কি ছিটকে গেল ম্যাচ থেকে?
প্রথম ওভারেই বিদায় রোহিতের
দুর্দান্ত একটা টুর্নামেন্ট কাটাচ্ছিলেন রোহিত শর্মা, কিন্তু ফাইনালে ফিরে গেলেন কোনো রান না করেই। আমিরের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলটা ছিল দারুণ একটা ইনসুইঙ্গার। লাইন মিস করে প্যাডে লাগল রোহিতের। আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দিলেন, ধাওয়ানের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নিলেন না রোহিত। রিপ্লেতে দেখা গেছে, 'আম্পায়ারস কল' ছিল, রিভিউ নিলেও লাভ হতো না। ভারত শুরুতেই খেল বড় একটা ধাক্কা।
পাকিস্তান ৩৩৮/ ৪, ৫০ ওভার (ফাখার ১১৪, আজহার ৫৯, হাফিজ ৫৭, বাবর ৪৬, ভুবনেশ্বর ১/৪৪, কেদার ১/২৭, পান্ডিয়া ১/৫৩)
ফাখারের সেঞ্চুরি, ডেথ ওভারে ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মাঝেই হাফিজের ৩৭ বলে ৫৭ রানের ক্যামিও। পাকিস্তান ৩০০ ছাড়িয়েছে, করেছে ৩৩৮। আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে এর বেশী রান করেছিল শুধু অস্ট্রেলিয়া। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিল এই ভারতই। এমনকি যে কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ইতিহাসেই কোনো দল ৩২৬ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি। টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিততে ভারতকে করতে হবে তাই ইতিহাসই।
কোহলিরা কি তা পারবেন?
কেদারই নিলেন বাবরকে
পাকিস্তান ২৭০/২, ৪৩ ওভার
সেই কেদারই দিলেন আরেকটা ব্রেকথ্রু! স্টাম্পের বল, স্পিন নেই। বাবর আজম তুলে মারতে গেলেন, লাগলো ব্যাটের বাইরের দিকে। ক্যাচ গেল লং-অনে, সহজভাবেই নিলেন যুবরাজ। বাবর করেছেন ৫২ বলে ৪৬ রান।
এসেই উইকেট ভুবনেশ্বরের
পাকিস্তান ২৪৭/৩, ৪০ ওভার
ভুবনেশ্বর এলেন, ভুবনেশ্বর উইকেট নিলেন! শর্ট বলটা খেলতে গেলেন শোয়েব মালিক, অফসাইডে। ডিপ কাভারে দাঁড়িয়ে থাকা কেদারের কাছে গেল সহজ ক্যাচ। টুর্নামেন্টে আরেকবার ব্যর্থ মালিক, ভারতের সামনে আরেকবার সুযোগ পাকিস্তানকে আটকে রাখার।
অবশেষে আউট ফাখার
পাকিস্তান ২০০/২, ৩৩.১ ওভার
অবশেষে থামলেন ফাখার! ফ্রন্টফুট সরে নিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন লেগসাইডে, এজ হয়ে ক্যাচ গেছে থার্ডম্যানে। পেছন সরে ভাল ক্যাচ নিয়েছেন জাদেজা, ভারতের এ মুহুর্তের সেরা ফিল্ডার। পান্ডিয়া এনে দিলেন ব্রেকথ্রু, বড় স্কোর থেকে পাকিস্তানকে থামাতে পারবে ভারত?
সেঞ্চুরি পেয়েই গেলেন ফাখার
পাকিস্তান ১৮৬/১, ৩১ ওভার
প্রায় শুয়ে যেন সুইপ করলেন অশ্বিনকে। মিড-উইকেট দিয়ে চার, সেঞ্চুরি হয়ে গেল ফাখার জামানের। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তাঁর, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের চতুর্থ সেঞ্চুরি, এই আসরে প্রথম। ১২ চার, ২ ছয়, ৯২ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন ফাখার।
ভুল বুঝাবুঝিতে আজহারের বিদায়
পাকিস্তান ১২৮/১, ২৩.৪ ওভার
আজহার দৌড়িয়েই গেলেন, ফাখার দাঁড়িয়েই থাকলেন। শর্ট মিড-উইকেটে মিসফিল্ডিং-ও করলেন বুমরাহ, তবুও দুই ব্যাটসম্যান থাকলেন একই প্রান্তেই! অবশেষে ব্রেকথ্রু ভারতের, ভুল বুঝাবুঝিতে সমাপ্ত হলো অসাধারণ এক ওপেনিং জুটির! আজহার নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন, ভারত নিজেদের সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারে! কোহলি অবশ্য তাতে আপত্তি করবেন না, ব্রেকথ্রুটা তো পেয়েছেন!
আজহারের ফিফটি, ফাখারেরও
পাকিস্তান ১১৫/০, ২০.২ ওভার
পরপর দুই ফিফটি আজহারের। পরপর দুই ফিফটি ফাখারেরও। এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আজহারের তৃতীয় ফিফটি, ফাখারেরও তাই। পাকিস্তানের ব্যতিক্রমী শুরু আবারও। দুই ওপেনারের মধ্যে ইনিংসটা আরও বড় করবেন কে?
ওপেনিংয়ে আবার শতরানের জুটি
পাকিস্তান ১০১/০, ১৮.১ ওভার
সেমিফাইনালে ৩৫ ম্যাচ পর হয়েছিল পাকিস্তানের ওপেনিংয়ে শতরানের জুটি। আজ ফাইনালে হলো আবার। আজহার-ফাখারের জুটি ভুগিয়েই যাচ্ছে ভারতকে।
আজহার-ফাখারে ভালো শুরু পাকিস্তানের
পাকিস্তান ৫৬/০, ১০ ওভারে
ভূমিকাটা যেন অনেকটাই বদলে গেছে আজ। আজহার আলী অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, এর মধ্যে অশ্বিনকে উড়িয়ে ম্যাচের প্রথম ছয়ও পেয়ে গেছেন। কিন্তু আগ্রাসী ফখর জামান যেন অনেকটাই খোলসে ঢুকে গেছেন, জীবন পাওয়ার পর এখনও খুব সপ্রতিভ নন। তবে প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট না পেয়ে কোহলি একটু হতাশ হতেই পারে।
নো বলে বাঁচলেন ফাখার
প্রথম দুই ওভারের আঁটসাঁট বোলিংয়েই বোধ হয় ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। তৃতীয় ওভারে বুমরাহর দ্বিতীয় বলেই খোঁচা দিলেন ফখর, সহজ ক্যাচ নিলেন ধোনি। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল, বুমরাহ ওভারস্টেপিং করেছেন। পার পেয়ে গেলেন ফাখার জামান।
সেমিফাইনালের মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ ফাইনালেও টসের ভাগ্যটা হেললো বিরাট কোহলির দিকে। অনুমিতভাবেই টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। ওভালের উইকেট ব্যাটিং সহায়ইকই মনে হচ্ছে, পরে রান তাড়া করার সুবিধাটা হাতছাড়া করতে চান না কোহলি। ভারতের জন্য আশা হতে পারে, গত সাত বারের ফাইনালে শুধু সর্বশেষ বারই শুরুতে ব্যাট করা দল জিতেছে। আর পাকিস্তানের জন্য আশা হতে পারে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সর্বশেষ তিন ফাইনালেই টসে হারা দলের হাতে শিরোপা উঠেছে।
ভারতের দলে কোনো পরিবর্তন নেই, পাকিস্তান দলে রয়েছে একটি পরিবর্তন। রুম্মান রইস খানের জায়গায় দলে এসেছেন মোহাম্মদ আমির।
পাকিস্তান একাদশ
আজহার, ফাখার, হাফিজ, মালিক, বাবর, সরফরাজ(অধিনায়ক), ইমাদ, সাদাব, আমির, হাসান, জুনাইদ।
ভারত একাদশ
ধাওয়ান, রোহিত, কোহলি, যুবরাজ, ধোনি, কেদার যাদব,পান্ডিয়া, জাদেজা, অশ্বিন, ভুবনেশ্বর, বুমরা।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তান। ফাইনালে আবারও দুই দল একে অন্যের মুখোমুখি। মুখোমুখি লড়াই পাকিস্তানকে এগিয়ে রাখলেও আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতই এগিয়ে, দশ বারের দেখায় আট বারই পেয়েছে জয়। ফাইনালের আগে বিরাট কোহলি বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নিজেদের দূরে রাখাটাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। আমির বলছেন, ভারতই বেশি চাপে থাকবে। কিন্তু কারা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন আজ? হাসান আলী, রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, নাকি অন্য কেউ? ভারতের ব্যাটিং আর পাকিস্তানের বোলিংই-ই ঠিক করে দেবে ম্যাচের গতিপথ? আইসিসির অবশ্য পোয়াবারো, এর মধ্যেই আজকের ফাইনালে ৩০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপনের দাম উঠে গেছে ১ কোটি রূপি।