'গোঁফেই' পার্থক্য সেই নাসির আর এই নাসিরের!
সংবাদ সম্মেলনে কথাটা বলতেই পড়ে গেল হাসির রোল। দুই বছর আগে দল থেকে বাদ পড়ার নাসির হোসেনের সঙ্গে এই নাসিরের পার্থক্য কতটুকু? নাসির রসিকতা করে বললেন, ‘আগে গোঁফ ছিল না, এখন আছে। এই তো।’
পরক্ষণেই অবশ্য সিরিয়াস হয়ে গেলেন। একটা সময় জাতীয় দলে তাঁর জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ছিল না কোনো। মাঠের ফর্মহীনতার সঙ্গে মাঠের বাইরের অস্থির সময়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে আর কোনো টেস্টও খেলা হয়নি। সেই অপেক্ষা এবার ঘুঁচেছে, আবার সুযোগ পেয়েছেন দলে। তবে আগের সেই ভুলের জন্য নাসিরের কন্ঠে একটু যেন আক্ষেপের অনুরণন, ‘বাদ পড়েছি ঠিক আছে। খারাপ করলে কেউ থাকবে না, সেটাই স্বাভাবিক। আবার ভালো করলে দলে জায়গা পাব, এটাও সত্যি। জীবনে এমন কিছু সময় ছিল যখন চাইলে আমি বড় বড় রান করতে পারতাম। তখন একটু ক্যাজুয়াল ছিলাম। সেজন্য এখন চেষ্টা করি যত বেশি সম্ভব উইকেটে থাকা যায়।’
একটা সময়ের ‘মি ফিনিশারের’’ টেস্ট দলেও ছিল জায়গা পাকা। কিন্তু একটা সময় সাদা বা রঙিন, সব পোশাকেই যেন বিবর্ণ নাসির। এরপর সেই অবস্থা কাটিয়েছেন, ওয়ানডেতে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, প্রমাণ করেছেন নিজেকে। গত বছর জাতীয় লিগে ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন, এই বছর ইমার্জিং কাপের পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও তাঁর ব্যাটে রান এসেছে। আগে জানিয়েছিলেন, জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করছেন। আপাতত সেই লক্ষ্যটা পেরিয়ে যেতে নাসির যেন আরও বেশি সতর্ক, আরও বেশি মনযোগী। পা যে মাটিতে রাখছেন সেটা তাঁর পরের কথা থেকেই বোঝা গেল, ‘জাতীয় দল নিয়ে খুব চিন্তা করি না। প্রিমিয়ার লিগে খেললে মনে করি এটাই আমার শেষ খেলা। আমি এটাই উপভোগ করি, এখানে পারফর্ম করার চেষ্টা করি। জাতীয় দলেই খেলতে হবে, সেখানেই আমাকে পারফর্ম করতে হবে, এই চিন্তাটা আমার মাথায় থাকে না। যেখানেই খেলি না কেন, চেষ্টা করি রান করার, পারফর্ম করার।’
এই সময়ে চ্যালেঞ্জ নিজের সাথেই ছিল, সেটিও জানিয়ে গেলেন নাসির, ‘চ্যালেঞ্জ তো অবশ্যই নিজের সাথে ছিল। অনেক দিন পর টেস্ট দলে ব্যাক করলাম। গত দুই বছর খেলি নাই। আমি জানতাম আমাকে পারফর্ম করে ঢুকতে হবে। সেটার সুবাদেই আমি জাতীয় দলে এসেছি। যেখানে রান করি না কেন সেই পারফরম্যান্সই কাউন্ট হবে। পারফর্ম করা ছাড়া আপনি কোথাও টিকে থাকতে পারবেন না। পারফরম্যান্স হচ্ছে সবকিছু মেডিসিন।’
ব্যাটের মতো নাসিরের কথা থেকেও যেন ঠিকরে বেরুচ্ছে আত্মবিশ্বাস!